নজরে ফাইনাল। এটিকে প্র্যাকটিসে। বৃহস্পতিবার। -শঙ্কর নাগ দাস
...আইএসএল দেখছি কেবল আমার টিমের ফুটবলার বাছার তাগিদে। মানে যাদের পরের মরসুমে ইস্টবেঙ্গলে সই করানো যেতে পারে। কলকাতায় এ সপ্তাহে ফিরে সোমবার থেকে আমার টিমের আই লিগের প্র্যাকটিস শুরু করব। তার আগের সন্ধেয় আইএসএল ফাইনাল। আমার মতে তিন বছরের টুর্নামেন্টের সেরা ফাইনাল। কোচির ষাট হাজার দর্শকের গ্যালারির সামনে টুর্নামেন্টের দু’টো সেরা টিম খেলবে। আরও জমকালো হবে সামিট লড়াই। কেরল ব্লাস্টার্সে দু’মরসুম সহকারী কোচ ছিলাম। সেই দলগুলোর চেয়ে এ বার ওদের ডিফেন্স এ বার অনেক আঁটসাঁট। গত বছর কেরল অনেক গোল খেয়েছিল। রবিবার ফাইনালে কেরল যদি ওদের এ বারের ডিফেন্সের ধারাবাহিকতা দেখাতে পারে, তা হলে এটিকে-র ঝামেলা আছে গোল পেতে। কেরল চ্যাম্পিয়ন হতে পারবে কি না এককথায় বলা মুস্কিল। তবে আমি মনে করি, কেরলের রিজার্ভ বেঞ্চ এটিকে-র চেয়ে শক্তিশালী। আটলেটিকো কলকাতাতে ছোট করছি না। তবে পস্টিগা, হিউম, দ্যুতিকে পরে নামানো মানেই কি ওদের টিমের বেঞ্চ শক্তিশালী সেটা প্রমাণ হওয়া? কেরলে সব পজিশনে খেলার মতো ফুটবলার আছে। টিমের ভারসাম্য বেশি। সেখানে কলকাতার ভরসা শুধু ফরোয়ার্ডরা। আমি সব ক’টা সেমিফাইনাল পারথে বসে দেখেছি। মলিনার প্রথম সেমিফাইনালের টিম থেকে একসঙ্গে ন’জন ফুটবলার পাল্টে ফেলাটা সাহসী পদক্ষেপ, না ওদের ম্যানেজমেন্ট ভাল বলে এটা কোচ করতে পেরেছে, আমি ঠিক জানি না। তবে বলতেই হবে, নিজের টিমের উপর মলিনার অগাধ বিশ্বাস। আর একটা ব্যাপারও হতে পারে। প্রথম লেগে এক গোলে এগিয়ে ছিল এটিকে। তাই ক’দিনের মধ্যেই ফাইনাল খেলতে হবে ভেবে দলের বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ফুটবলারকে দ্বিতীয় লেগে বিশ্রাম দিয়ে থাকতে পারে মলিনা। এখন যা দাঁড়িয়েছে, কেরলকে দ্বিতীয় সেমিফাইনাল ১২০ মিনিট খেলার ক্লান্তি আর এটিকের চেয়ে এক দিন কম বিশ্রামের অসুবিধে নিয়ে কিন্তু ফাইনালে নামতে হচ্ছে। তবে একটা কথা পরিষ্কার বলব, মলিনার সাহস আমি কলকাতা ডার্বিতে দেখাতে পারতাম। কিন্তু দেখাতাম কি না সেটা জানি না। আসলে ইস্টবেঙ্গল আমার কাজে কোনও দিন বাধা দেয়নি। কিন্তু ঝুঁকি নিয়ে যদি কোনও অঘটন ঘটে যায়, তার জবাবও তো ক্লাবকে দিতে হবে আমাকেই। তবে পরিস্থিতি অনুযায়ী প্রত্যেক ম্যাচের স্ট্র্যাটেজি বদলায়। সে দিনের ম্যাচে মলিনা হয়তো মনে করেছে ওটাই করা উচিত ছিল, তাই করেছে। ফাইনালে অবশ্য জিততে গেলে কলকাতাকে শুরুতেই গোল করে এগিয়ে যেতে হবে। আমার মতে কলকাতা-কেরল, দু’টিমের ফরোয়ার্ড লাইনই ভাল। ডিফেন্সে অবশ্য এটিকের চেয়ে ব্লাস্টার্স একটু হলেও এগিয়ে। এটিকে আবার অর্ণবকেও সে দিন পাবে না ডিফেন্সে। তাই বিপক্ষের চাপ পরের দিকে সামলাতে কলকাতার আরও বেশি করে শুরুতে গোল করে এগিয়ে থাকা দরকার। তবে আবার বলছি, ফাইনালে আসল যুদ্ধটা হবে দু’টো টিমের ডিফেন্সের মধ্যে। যারা বিপক্ষের অ্যাটাকিং লাইনকে বেশি সামলে রাখতে পারবে, তারাই জিতবে। দুই গোলকিপারের পারফরম্যান্সের উপরও অনেক কিছু নির্ভর করবে সে দিন। সন্দীপ আর দেবজিতের মধ্যেও কেউ মহানায়ক হয়ে উঠতে পারে ফাইনালে...