ATK-Mohun Bagan

ময়দানের মাঠেই আইএসএল, বড় ম্যাচ হবে, ঘোষণা ক্লাব কর্ণধারের

এটিকে-মোহনবাগানের উদ্যোগ: বাংলা থেকে ফুটবলার তুলে আনার লক্ষ্যে অত্যাধুনিক ‘সকার স্কুল’ গড়ার ভাবনা

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ জুলাই ২০২০ ০৫:১১
Share:

উন্মাদনা: মোহনবাগান মাঠের এই আবেগ ধরে রাখাই লক্ষ্য কর্তাদের।

মোহনবাগানের ঐতিহ্য এবং সমর্থকদের আবেগকে সম্মান দেখিয়ে জার্সিং রং সবুজ-মেরুনই ধরে রাখা। পালতোলা নৌকোকে লোগো হিসেবে জার্সিতে জায়গা দেওয়া। তাতেই শেষ নয়। এটিকে-মোহনবাগানের ‘গৃহ’ হিসেবে ময়দানের সবুজ-মেরুন ক্লাবের মাঠকেই বেছে নেওয়া হচ্ছে।

Advertisement

দুই ক্লাবের মিলে যাওয়ার পরে শুক্রবারই হল প্রথম বোর্ড বৈঠক। যেখানে বোর্ড সদস্য হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ও। বৈঠকের পরে আনন্দবাজারের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে এটিকে-মোহনবাগানের প্রধান মালিক সঞ্জীব গোয়েন্‌কা বলে দিলেন, ‘‘আমাদের দেখতে হবে যাতে ভবিষ্যতে আইএসএলের খেলা এবং এএফসি ম্যাচের মতো আন্তর্জাতিক খেলাও মোহনবাগান মাঠে করা যায়। তার জন্য এই মাঠকে আন্তর্জাতিক মানের করে গড়ে তুলতে চাই।’’

আইএসএল খেলাকালীন এটিকে-র ম্যাচ যুবভারতীতেই হত। ভবিষ্যতে মোহনবাগান মাঠকেই তাঁরা যে ‘বেস’ করতে চাইছেন, তা পরিষ্কার করে দেন গোয়েন্‌কা। বলেন, ‘‘মোহনবাগান ক্লাবের মতো মাঠটাও তো ঐতিহাসিক। কী সব কিংবদন্তি এ মাঠে খেলেছেন! হয়তো বড় কোনও স্টেডিয়ামের মতো অত দর্শক ধরবে না। যুবভারতী আছে, আছে। কিন্তু মোহনবাগান মাঠের নিজস্ব ঐতিহ্য, আবেগকে হারিয়ে যেতে দেব কেন?’’ কিন্তু বললেই কি সহজ হবে সেটা করা? গোয়েন্‌কার জবাব, ‘‘নিশ্চয়ই সহজ হবে না। সময়ও লাগবে। হয়তো পরের মরসুমেই হবে না। কিন্তু এখন থেকে তিন বছর পরে? বা চার বছর পরে? উচ্চাকাঙ্খা রেখে এগোব না কেন?’’ কারও কারও মত, এই মেলবন্ধনের ফলে মোহনবাগান আর মোহনবাগান থাকল না। সোজা কথায়, শতাব্দীপ্রাচীণ ক্লাব বিক্রি হয়ে গেল। গোয়েন্কা বলছেন, ‘‘মোহনবাগান ক্লাব এবং ভক্তদের ইতিহাস এবং আবেগকে সম্মান করি বলেই সম্পূর্ণ মর্যাদা দিয়ে জার্সিং রং, লোগোতে মোহনবাগানের উপস্থিতি ধরে রাখা হয়েছে। ক্লাবের মাঠকেও বড় করে তুলে ধরতে চাই।’’

Advertisement

ইঙ্গিত দেন, এটিকে-মোহনবাগানের যাতে সর্বভারতীয় স্তরে আরও শক্তিশালী উপস্থিতি তৈরি করা যায়, সেই চেষ্টা করবেন। বলেন, ‘‘মোহনবাগান একটা ঐতিহ্যের নাম। কিন্তু বেশিটাই বাংলার মধ্যে থেকেছে। সেটাকে আমরা জাতীয় স্তরে আরও বেশি করে ছড়িয়ে দিতে চাই। আস্তে আস্তে আমাদের লক্ষ্য হবে, আন্তর্জাতিক স্তরে এটিকে-মোহনবাগানকে নিয়ে যাওয়া। এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগে কেন আমাদের দল খেলবে না? রাস্তা সহজ নয়, আবার অসম্ভবই বা হবে কেন?’’ মনে করিয়ে দিতে চান, ‘‘সঙ্গে সৌরভের মতো মস্তিষ্ক রয়েছে। নতুন ক্লাবের জন্ম নিয়ে যে ভীষণই উৎসাহিত। আমরা পারব না কেন?’’

এটিকে-মোহনবাগানের নামে ‘সকার-স্কুল’ তৈরি করার পরিকল্পনা রয়েছে তাঁদের। এই ফুটবল পাঠশালা ছড়িয়ে দিতে চান সারা দেশে। গোয়েন্‌কা বলছেন, ‘‘বাংলায় ইতিমধ্যেই ছোটখাটো করে এই স্কুল আমরা শুরু করেছি। সারা দেশে ছড়িয়ে দিতে চাই। যাতে নতুন প্রতিভা তুলে আনা যায়। আমাদের লক্ষ্য হবে, এই স্কুল থেকে এমন সব খেলোয়াড় বের করা, যারা জাতীয় স্তরে নজরে আসবে।’’ তরুণ প্রতিভার উদাহরণ দিতে গিয়ে যোগ করেন, ‘‘গত বছর এটিকে দলে রিজার্ভে ছিল সুমিত রাঠি। চোট-আঘাতের জন্য ওকে বাধ্য হয়েই খেলাতে হল। সেই সুযোগকে দুর্দান্ত ভাবে কাজে লাগাল সুমিত। এর পরে কোচ হাবাসকে সব ম্যাচে ওকে খেলাতে হয়। যত দূর জানি, ও জাতীয় স্কলারশিপ পেয়ে গিয়েছে। এই ধরনের প্রতিভা তুলে আনাটাই এই স্কুলের লক্ষ্য হবে।’’ মনে করিয়ে দিতে চান, ‘‘একটা ক্লাব এ মরসুমের আইলিগ চ্যাম্পিয়ন। অন্যটি এ বারের আইএসএল চ্যাম্পিয়ন। তারা যখন একত্রিত হচ্ছে, ভাল ফলেরই আশা করতে পারেন ফুটবল ভক্তরা।’’

প্রস্তাবিত স্কুলের প্রতিভাবান কিশোরদের বিদেশে নিয়ে গিয়ে ট্রেনিংয়ের মাধ্যমে তৈরি করার কথাও ভাবা হয়েছে। বিদেশের বিভিন্ন লিগ, কোচ বা ফুটবলারদের পরামর্শ নেওয়া হতে পারে। বিশেষ করে নজর দেওয়া হবে বিদেশি পদ্ধতিতে শারীরচর্চার উপর। ‘‘মোহনবাগানে শেখ সাহিল, শুভ ঘোষের মতো প্রতিভা রয়েছে। ওদের একটা মঞ্চ দরকার। সেটা আমরা দিতে চাই। স্থানীয় প্রতিভাকে জাতীয় স্তরে তুলে নিয়ে যাওয়াটাই হবে প্রধান লক্ষ্য।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন