বিমান বিভ্রাটে আটক গোয়া, এটিকের ভরসা রবি কিনই

এই ম্যাচে ঘরের মাঠে কলকাতার  অপরাজেয় রেকর্ড বনাম গোয়ার চাকা উল্টো দিকে ঘোরানোর চ্যালেঞ্জ।  

Advertisement

রতন চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ০৩ জানুয়ারি ২০১৮ ০৩:৪৬
Share:

স্প্যানিশ বনাম ব্রিটিশ স্ট্র্যাটেজি!

Advertisement

কলকাতা বনাম গোয়ার চিরকালীন ফুটবল যুদ্ধ!

এটিকের মহাতারকা রবি কিন বনাম টুনার্মেন্টের সর্বোচ্চ গোলদাতা কোরোর ঝলকানি!

Advertisement

এই ম্যাচে ঘরের মাঠে কলকাতার অপরাজেয় রেকর্ড বনাম গোয়ার চাকা উল্টো দিকে ঘোরানোর চ্যালেঞ্জ।

চৌম্বকে আজ ইন্ডিয়ান সুপার লিগের ধুন্ধুমার লড়াইয়ের এগুলোই এক-একটা ক্যাচ লাইন।

গত তিন বছরের ছবি উধাও দুই টিমেই।

কোচ তো বদলেছেই, বদলে গিয়েছে পুরো দলের খোলনলচেটাই। মাঠে এবং মাঠের বাইরে।

গত তিন বছর যে অস্ত্র নিয়ে আন্তোনিও হাবাস বা জোসে মলিনা সফল হয়েছেন কলকাতার জার্সিতে সেটাই এ বার হাজির গোয়ায়—স্প্যানিশ ফুটবলের সুগন্ধী! গোয়ার কোচ সের্জিও লেবেরা থেকে টিমের ছয় বিদেশিই যে স্পেনের! প্রভাব তো পড়বেই। জিকোর ব্রাজিলীয় দর্শন তাই উধাও এ বারের মান্দার রাও বা প্রণয় হালদারদের গোয়ায়। সেখানে ব্যক্তিগত নৈপূন্যের চেয়ে দলগত লড়াইয়ের জয়গান। ছয় ম্যাচে আট গোল করে ফেলা ফেরান কোরোমোনাস তোরোচা বা কোরোকে নিয়ে তাই আতিশয্য নেই।

একেবারে উল্টো ছবি টেডির টিমে। গত তিন বছর মার্কি ফুটবলার চোট পেয়েছেন, কিন্তু তার প্রভাব কখনও পড়েনি টিমে। ফিকরু তোফেরা থেকে সমীঘ দ্যুতিরা, কেউ না কেউ তারকা হয়ে গিয়েছেন এটিকে-তে। এখন অন্য ছবি টেডি-র আমলে। রবি কিন না থাকলেই থমকে যাচ্ছে কলকাতার জয়রথ। প্রাক্তন টটেনহ্যাম তারকা না খেললে নতুন এমন কোনও নাম নেই যাঁকে নিয়ে আশাবাদী হওয়া যেতে পারে। সে জন্যই আইরিশ স্ট্রাইকারের থাকা বা না থাকা পার্থক্য গড়ে দিচ্ছে অনেকটাই। সেটা অবশ্য মানছেন ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের সর্বকালের অন্যতম সেরা গোলদাতা। টেডি বলে দিলেন, ‘‘রবি যে কোনও সময় অনেক কিছু করে দিতে পারে। সে জন্যই অনুশীলনেও সবাই ওর দিকে তাকিয়ে থাকে। এ জন্যই তো ওকে এখানে আসতে বলেছিলাম।’’ কিন যে তাঁদেরও ভাবাচ্ছে সেটা মানছেন ডেরিক পেরিরাও। গোয়ার সহকারী কোচ বলছিলেন, ‘‘রবি মাঝমাঠে খেলাটা তৈরি করে। পুরো টিমটাকে খেলায়। ওঁর থাকা না থাকাটা তো ফ্যাক্টরই।’’ গোয়া টিম অবশ্য বিমান বিভ্রাটের জন্য মঙ্গলবার বিকেলে কলকাতায় পৌঁছতে আসতে পারেনি। তাদের আজ বুধবার ম্যাচের দিন সকালে মারগাও থেকে শহরে আসার কথা।

গোয়া-ম্যাচ টেডি শেরিংহ্যামের কাছে কার্যত সুপার লিগে ওঠার অন্যতম লাইফ লাইন। কর্তাদের মতো এটিকে কোচেরও অঙ্ক, শেষ চারে যেতে হলে বাকি বারোটি ম্যাচের অন্তত ছ’টিতে তো জিততে হবেই। পাশপাশি হারাতে হবে গোয়া, জামশেদপুর, বেঙ্গালুরুর মতো দলকেও। যা বেশ কঠিন।

সাংবাদিক সম্মেলন সেরে যুবভারতী সংলগ্ন হোটেলে ফেরার পথে দেবজিৎ মজুমদারদের কোচকে ঘিরে ধরেছিলেন একদল খুদে ফুটবলার। তাদের হাত থেকে ছাড়া পাওয়ার পর টেডি বলছিলেন, ‘‘গোয়া টিমটা ভয়ঙ্কর। ওদের আসল শক্তি লুকিয়ে আক্রমণে আর মাঝমাঠে। আমরা সেটা আটকানোর অঙ্ক করছি। তবে ফুটবল সব সময় তো অঙ্ক মেনে চলে না, যে কোনও সময় অঘটন ঘটে যেতে পারে।’’ টুনার্মেন্টে প্রথম বার তাঁর টিমে কোনও চোট নেই।

টেডির টিম গত তিন বারের মতো জয়রথ ছোটাতে না পারায় এটিকে নিয়ে সেই উন্মাদনা তৈরি হয়নি এখনও। তবুও এটিকের ম্যাচে আই লিগের ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগানের চেয়ে দ্বিগুণ লোক হচ্ছে। এ দিনও দেখা গেল স্টেডিয়ামের বাইরের টিকিট কাউন্টারে লাইন। পুরো স্টেডিয়াম সাজিয়ে ফেলা হয়েছে অনূর্ধ্ব ১৭ যুব বিশ্বকাপের মতোই রঙিন করে। যা দুই প্রধানের ম্যাচে যুবভারতীতে কখনও দেখা যায়নি। আর নীতা অম্বানির টুনার্মেন্টের এই বৈভব-ই সম্ভবত ভিড় টানছে। ফলে ডেরিক পেরিরার মতো আই লিগের পরিচিত কোচ হলেও সহকারী হয়ে গিয়েছেন গোয়া টিমে।

এমনিতে আইএসএলের চতুর্থ সংস্করণ এ বার তেমন জমেনি। ভাল বা নামী তারকাও হাতে গোনা। অর্ধেক মাঠেই দর্শক হচ্ছে না। তবে কলকাতা এবং গোয়া ব্যতিক্রম। আসলে আই লিগের ক্লাবগুলির হাল দেখে, দেশীয় ফুটবলের দুই রাজ্যের দলই ঝুঁকছে মশলাদার লিগে। ফেডারেশনও তো সেটাই চাইছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement