ফেডারেশনের কড়া চিঠি গুরুত্ব না দিয়ে শাস্তির মুখে এটিকে

জুয়ান বেলেনকোসো ঢুঁসো মেরেছিলেন মুম্বই সিটি এফ সি-র এক ফুটবলারকে। কোচের সঠিক সময়ে মিডিয়ার সামনে না আসা, লালকার্ড, হলুদ কার্ড। এসবের জন্য আতলেটিকো দে কলকাতাকে জরিমানা করেছিল ফেডারেশন।

Advertisement

রতন চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ০২ মার্চ ২০১৭ ০৩:৪৩
Share:

বিতর্কে: এটিকে-র চিন্তা আরও বাড়িয়েছেন বেলেনকোসো। ফাইল চিত্র

জুয়ান বেলেনকোসো ঢুঁসো মেরেছিলেন মুম্বই সিটি এফ সি-র এক ফুটবলারকে। কোচের সঠিক সময়ে মিডিয়ার সামনে না আসা, লালকার্ড, হলুদ কার্ড। এসবের জন্য আতলেটিকো দে কলকাতাকে জরিমানা করেছিল ফেডারেশন।

Advertisement

ফেডারেশনের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি বারবার চিঠি দিয়েও সেই জরিমানা টাকা আদায় করতে পারেনি। এবং তার জেরে শাস্তির মুখে পড়তে চলেছে গতবারের চ্যাম্পিয়ন কলকাতা। ফেডারেশনের পক্ষ থেকে শেষ যে কড়া চিঠি পাঠানো হয়েছে তাতে পরিষ্কার জানিয়ে দেওয়া হয়েছে বৃহস্পতিবারের মধ্যে নির্ধারিত টাকা জমা না দিলে শাস্তি পেতে হবে কলকাতা-সহ তিনটি ক্লাবকে। অন্য দুটি ক্লাব হল কেরল ব্লাস্টার্স ও এফ সি গোয়া। ওই দুই ক্লাবের কর্তারা হুমকির চিঠি পেয়েই এ ব্যাপারে ফেডারেশনে যোগাযোগ করলেও মজার ব্যাপার হল এটিকে কর্তারা এখনও কিছুই করেননি। তাদের সচিব বিদেশে থাকায় কেউ খুলেও দেখেনি ই মেলে পাঠানো গুরুত্বপূর্ণ এই চিঠি। হাতে মাত্র আর আট চল্লিশ ঘণ্টা তার মধ্যে জরিমানার টাকা না দিলে শাস্তি হবেই এটিকের। নিয়মানুযায়ী সেক্ষেত্রে বিদেশ থেকে নতুন ফুটবলার আনার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা জারি হতে পারে।

জানা গিয়েছে, গত ২২ ফেব্রুয়ারি ফেডারেশনের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির চেয়ারম্যান নাজির আমেদ খান শেষ চিঠি লিখেছেন কলকাতা-সহ তিনটি ক্লাবকে। সেখানে নিয়মানুযায়ী জরিমানার টাকা সময় মতো জমা না দেওয়ার জন্য দশ শতাংশ বাড়তি টাকা দিতে বলা হয়েছে। তাতে দেখা যাচ্ছে কেরলের জন্য ধার্য্য হয়েছে সাড়ে ৫ লাখ, গোয়ার ৬ লাখ, সবথেকে বেশি জরিমানা হয়েছে এটিকের ১৫ লাখ ৪০ হাজার টাকা। এর মধ্যে বেলেনকোসোকেই তাঁর অপরাধের জন্য জরিমানা করা হয়েছে সাত লাখ টাকা।

Advertisement

আরও পড়ুন: বেঙ্গালুরুতে নেমেই পিচ-দর্শন স্মিথদের

কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে যে টিমটা তিন বারের মধ্যে দু’বার আইএসএল চ্যাম্পিয়ন, এ বারও রবীন্দ্র সরোবর স্টেডিয়াম সংস্কার থেকে টিম তৈরির জন্য খরচ করেছে তিরিশ কোটি টাকা, তাঁরা তুলনায় সামান্য এই টাকা জমা না দিয়ে কেন অস্বস্তিতে ফেললেন নিজেদের? সেটা কী ফেডারেশনের চিঠিকে গুরুত্ব না দেওয়ার জন্য না কি, নিছকই গা ছাড়া মনোভাবের বহি:প্রকাশের জন্য। ঘটনা যাই হোক, জানা গিয়েছে দিল্লির ফুটবল হাউসের কর্তারা এটিকের উপর চটেছেন মূলত তাদের চিঠিকে গুরুত্ব না দেওয়ায়। যা করেনি গোয়া বা কেরল।

কী বলছেন কলকাতার কর্তারা?

এটিকে সচিব সুব্রত তালুকদার ইউরোপে। বিদেশ থেকে ফেরার পথে ফেডারেশনের সময় বেঁধে দেওয়া চিঠির কথা শুনে তিনি বেশ অস্বস্তিতে। ফোনে বললেন, ‘‘আমি ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে দেশের বাইরে। ইউরোপে আছি। ই মেল খুলে দেখিনি। কারণ ওখানে মেল খোলা যাচ্ছিল না। আমি তো ১৫ মার্চের আগে অফিসে যাচ্ছি না। চিঠি এসেছে কী না দেখতে হবে। জরিমানা দিতে হবেই’’ যা শুনে অবাক এবং বিশ্মিত ফেডারেশনের কর্তারা। শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির প্রধান নাজির আমেদ খান বিদেশে। তাঁকে ফোনে পাওয়া যায়নি। কমিটির অন্যতম সদস্য কৃষ্ণেন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন, ‘‘আমরা তো সব ক্লাব, আইএসএল সংগঠক রিলায়্যান্স-সহ সবাইকে বারবার চিঠি পাঠিয়েছি জরিমানার কথা জানিয়ে। এটিকেও চিঠি পেয়েছে। শেষ চিঠি পাঠিয়েছি এ বার। জরিমানার টাকা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে না দিলে কিন্তু সমস্যায় পড়বে ওরা।’’ সে ক্ষেত্রে কী হতে পারে শাস্তি? কৃষ্ণেন্দু আইন ঘেঁটে বললেন, ‘‘আই লিগ হলে আমরা দ্বিতীয় ডিভিশনে টিমকে নামিয়ে দিতাম। আর আইএসএলের নিয়ম হল, বিদেশি ফুটবলার নেওয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি হবে। আশা করব এটিকে দ্রুত সমস্যার সমাধান করবে। বৃহস্পতিবারের মধ্যে টাকা পাঠিয়ে দেবে। তবে এটা বলছি ওদের মতো পেশাদার ক্লাবকে এরকম চিঠি দিতে হবে আশা করিনি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন