অবিশ্বাস্য। মারণ সুইংয়ের ফাঁদে। স্টুয়ার্ট ব্রড ৯.৩-৫-১৫-৮।
বিশ্বাসই হচ্ছিল না, এটা লাইভ কভারেজ। স্টুয়ার্ট ব্রডের পরপর উইকেট নেওয়া দেখে মনে হছিল হাইলাইটস দেখছি। অ্যাসেজ টেস্টে এত ঘন ঘন উইকেট! সত্যিই অবিশ্বাস্য। শেষ কবে এমন ভয়ঙ্কর ফাস্ট বোলিং দেখেছি, মনে করতে পারছিলাম না।
মাথা ঠান্ডা করে যখন ভাবতে বসলাম, তখন আগুনে বোলিংয়ের কয়েকটা স্পেলের কথা ভেসে উঠল। বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে নিউজিল্যান্ডের টিম সাউদির ৭-৩৩-এর কথা মনে পড়ে গেল। সাত বছর আগে আমদাবাদে ডেল স্টেইনের (৫-২৩) যে বোলিং ভারতকে ৭৬-এ অল আউট করে দিয়েছিল, সেটার কথাও মনে পড়ছে। স্টেইন আরও কয়েকটা ম্যাচে এমন বোলিং করেছে। ১৯ বছর আগে ইডেনে ভারতের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় ইনিংসে লান্স ক্লুজনারের ৮-৬৪-র কথাই বা ভুলি কী করে? ইডেন আর ট্রেন্টব্রিজ— যদিও দুটো পরিবেশ আলাদা, কিন্তু ভয়াবহতার দিক দিয়ে দুটো প্রায় একই গোত্রের। আমার দেখা সেরা পাঁচের মধ্যে অবশ্যই রাখব ব্রডের এ দিনের বোলিং।
এমনিতেই এই সিরিজে ভাল ফর্মে আছে ব্রড। বৃহস্পতিবার ট্রেন্টব্রিজে যে বোলিংটা করল, তা অসাধারণ। ট্রেন্টব্রিজ ব্রডের ঘরের মাঠ। ছোট থেকে এখানেই ওর ক্রিকেটার হয়ে ওঠার লড়াই। এখানকার উইকেটে কতটা লেংথ রেখে কোন জায়গায় বল ফেলে ব্যাটসম্যানদের চাপে রাখা যায়, তা ও খুব ভাল জানে। তার উপর বৃহস্পতিবার সকালে যে রকম আবহাওয়া ছিল, তা পেস বোলারদের পক্ষে একেবারে আদর্শ। ‘টিপিক্যাল ইংলিশ ওয়েদার’। স্যাঁতসেঁতে ভাব, হাওয়া চলছিল। তার উপর কুকের টসে জিতে ফিল্ডিং নেওয়ার সিদ্ধান্ত— ব্রডের মতো সুইং বোলারের এর চেয়ে বেশি আর কী চাই? প্রায় পাঁচ মিলিমিটার ঘাস উইকেটে। এই আবহাওয়া এবং পরিবেশকে ভরপুর কাজে লাগিয়ে নিল ব্রড।
ব্রড একটা জিনিস এ দিন পেয়েছে, যেটা সব ফাস্ট বোলার এ রকম পরিবেশে পাওয়ার জন্য প্রার্থনা করে। দুর্দান্ত স্লিপ ফিল্ডিং। সকালের ওই ঠান্ডা আবহাওয়ায় ইংরেজ স্লিপ ফিল্ডাররা যে আটটা ক্যাচ নিয়েছে, তা সত্যিই দেখার মতো। বিশেষ করে ভোজেসের যে ক্যাচটা পঞ্চম স্লিপে নিল স্টোকস, তা এক কথায় অবিশ্বাস্য। সত্যি, ট্রেন্টব্রিজে এ দিন অনেক অবিশ্বাস্য ঘটনাই ঘটল।