অ্যান্ডারসন। ৬-৪৭।
নিজেই নিজের পিঠ চাপড়ে দিতে পারেন ইয়ান বোথাম।
রিকি পন্টিং, ম্যাথু হেডেনরা যখন অস্ট্রেলিয়ার মিডিয়ায় ব্র্যাড হাডিনকে দলে না নেওয়া নিয়ে ঝড় তুলছেন, তখন এজবাস্টনে টেস্ট শুরুর আগে এক ব্রিটিশ সংবাদপত্রে বোথাম লিখেছিলেন, ‘‘এজবাস্টনে জিমি অ্যান্ডারসনকেই হয়তো ইংল্যান্ডকে জেতানোর দায়িত্ব নিতে দেখা যাবে।’’ তাঁর দেওয়া প্রথম কারণটা ছিল, ‘‘যদি পিচে হাল্কা ঘাস আর ক্যারি থাকে, তা হলে জিমি মারাত্মক হয়ে উঠতে পারে।’’ আর দ্বিতীয়টা ছিল, ‘‘টেস্টে উইকেটহীন থাকাটা ওর স্বভাববিরুদ্ধ। লর্ডসে সেটাই হয়েছে। তাই এই টেস্টে ও খিদে মেটানোর জন্য মরিয়া হয়ে উঠবেই।’’
বোথামের কথা অক্ষরে অক্ষরে মিলিয়ে দিয়ে নিজের ৩৩ তম জন্মদিনের সেরা উপহারটা এক দিন আগেই নিজেকে দিলেন ল্যাঙ্কাশায়ারের এই বিধ্বংসী পেসার। অস্ট্রেলিয়াকে ১৩৬-এ শেষ করে দিতে তাঁর অবদান ৬-৪৭। অ্যান্ডারসনের টেস্ট কেরিয়ারে সেরা বোলিংয়ের তালিকায় যা চার নম্বরে থাকবে। অস্ট্রেলিয়ার যে ব্যাটিং বাহিনী লর্ডসে প্রথম ইনিংসে ৫৬৬ তুলেছিল, সেই বাহিনীর উপর দিয়ে প্রায় বুলডোজার চালালেন অ্যান্ডারসন।
টস জিতে ব্যাটিং নেওয়া মাইকেল ক্লার্কের হাসি প্রথম দিনেই মুছে দিয়েছেন ইংরেজ পেসার। ওয়ার্নার, ভোজেস, মার্শ, নেভিল, জনসন ও লিয়ঁকে ফিরিয়ে। তাঁর দুই শিকার বোল্ড, দু’জন কট বিহাইন্ড, একজন এলবি ও আর একজন চতুর্থ স্লিপে ক্যাচ। এই তথ্যই তাঁর লাইন-লেংথ বুঝিয়ে দেওয়ার পক্ষে যথেষ্ট। ক্রিস ব্রড (২-৪৪) ও প্রায় দু’বছর পর টেস্টে নামা স্টিভন ফিন (২-৩৮) অন্যদের দায়িত্ব নেন। কুকরা ব্যাট করতে নেমে অবশ্য ক্লার্কদের মতো কোণঠাসা নন। দুই ওপেনারকে হারিয়ে দিনের শেষে ইংল্যান্ড ১৩৩-৩।
ওপেনার ক্রিস রজার্স (৫২) ছাড়া অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিং লাইন-আপে বাকিরা সবাই এজবাস্টনের পিচে ফ্লপ। যেমনটা হয়েছিল ২০১০-এর বক্সিং ডে টেস্টে। যে বার অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে অস্ট্রেলিয়া ৯৮-এ অল আউট হয়ে গিয়েছিল। এই অ্যান্ডারসন নিয়েছিলেন চার উইকেট। তফাৎটা ছিল, সেবার অজিদের ব্যাট করতে পাঠিয়েছিল ইংল্যান্ড। এ বার নিজেদের সিদ্ধান্তেই ব্যাট করতে নেমে এই ভরাডুবি অস্ট্রেলিয়ার। টিভি বক্সে বসে যাদের শট বাছাই নিয়ে তীব্র নিন্দা শুরু করে দেন জিওফ বয়কট।
তবে অজিদের ব্যাটিংয়ের ভুল নিয়ে যতই মুখর হোন প্রাক্তন ইংরেজ অধিনায়ক, একাধিকবার বৃষ্টিবিঘ্নিত দিনে স্যাঁতসেঁতে আবহাওয়া এবং পিচের ঘাস ও চরিত্র কাজে লাগিয়ে যে ভাবে বিপক্ষ শিবিরে ত্রাস সৃষ্টি করলেন ইংরেজ পেসাররা, তাতে কিন্তু লর্ডসের বদলার ইঙ্গিত স্পষ্ট।