লক্ষ্য: জাতীয় দলে খেলাই স্বপ্ন নন্দ কুমারের। —নিজস্ব চিত্র।
ইন্ডিয়ান সুপার লিগ (আইএসএল) টেবলে সবার শেষে দিল্লি ডায়নামোজ এফসি। খেতাবি দৌড়ে টিকে থাকতে হলে আজ, শুক্রবার অ্যাওয়ে ম্যাচে মুম্বই সিটি এফসি-র বিরুদ্ধে জিততেই হবে। আর এই মরণবাঁচন ম্যাচে দিল্লির তুরুপের তাস হতে পারেন চেন্নাইয়ের এক অটোচালকের সন্তান। তিনি— ভারতীয় ফুটবলের প্রতিশ্রুতিমান উইঙ্গার নন্দ কুমার।
চেন্নাইয়ের জওহরলাল নেহরু স্টেডিয়ামের কাছে এক বস্তিতে জন্ম নন্দ কুমারের। বাবা শেখর কুমার পেশায় অটোচালক। পাঁচ বছর বয়সে ফুটবল শুরু নন্দ কুমারের। শৈশবে ছেলেকে বুট কিনে দেওয়ার মতো আর্থিক সামর্থ্যও ছিল না তাঁর। নন্দ কুমার বলছিলেন, ‘‘প্রবল দারিদ্রের মধ্যে বড় হয়েছি আমরা দুই ভাই। ফুটবলের প্রতি আগ্রহ দেখে বাবা-ই আমাকে বেসডপাডি-র একটি ক্লাবে ভর্তি করে দেন। যদিও বাবার পক্ষে খেলার সরঞ্জাম কিনে দেওয়ার ক্ষমতা ছিল না।’’ সঙ্গে যোগ করলেন, ‘‘আমাদের পরিবারে আমি ছাড়া কেউ কখনও ফুটবল খেলেনি। তাই হয়তো বাবা খুব খুশি হয়েছিলেন।’’
চেন্নাইয়ে জন্ম। অথচ ক্রিকেট নয়, ফুটবলই প্রিয় নন্দ কুমারের। তিনি বলছিলেন, ‘‘আমি যেখানে বড় হয়েছি, সেখানে ক্রিকেট একেবারেই জনপ্রিয় নয়। ফুটবল খেলত সকলে। তাই আমিও ফুটবলের প্রতি আকৃষ্ট হয়েছিলাম শৈশবেই।’’
ভারতীয় ফুটবলে নন্দ কুমারের নাটকীয় উত্থান গত মরসুমে চেন্নাই সিটি এফসি-র হয়ে। আই লিগে ইস্টবেঙ্গলের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার আশা অনেকটাই শেষ হয়ে গিয়েছিল তাঁর গোলে। চেন্নাই সিটি এফসি-র হয়ে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের পরেই অনূর্ধ্ব-২৩ জাতীয় দলে খেলার সুযোগ পান নন্দ কুমার। ডাক পান আইএসএল ফ্র্যাঞ্চাইজি দিল্লি ডায়নামোজ এফসি-তে। এখনও পর্যন্ত আইএসএল একটি ম্যাচ খেলা নন্দ কুমার বলছিলেন, ‘‘ভাবতেই পারিনি, দিল্লি ডায়নামোজ আমাকে প্রস্তাব দেবে। তবে আমার প্রধান লক্ষ্য ভারতের সিনিয়র দলে খেলা।’’ নেমার দ্য সিলভা স্যান্টোস (জুনিয়র) ও সুনীল ছেত্রীর ভক্ত নন্দ কুমার। সময় পেলেই ব্রাজিলীয় তারকার খেলা দেখেন। আর সুনীলের প্রসঙ্গ উঠতেই অভিভূত দিল্লির উইঙ্গার বললেন, ‘‘গত মরসুমে আই লিগে সুনীল ছেত্রীর বিরুদ্ধে খেলেছিলাম। ম্যাচের পরে সুনীলভাই অভিনন্দন জানিয়েছিলেন ভাল খেলার জন্য। আমার স্বপ্ন জাতীয় দলে সুনীল ভাইয়ের সঙ্গে খেলা।’’
আরও পড়ুন: নতুন বছরে দেখা যাবে আগ্রাসী রজারকে
এই মুহূর্তে নন্দ কুমারের মন থেকে আনন্দ উধাও। আইএসএলে ছ’টি ম্যাচের মধ্যে পাঁচটিতে হেরেছে তাঁর দল। জিতেছে মাত্র একটাই ম্যাচ। নন্দ কুমারের কথায়, ‘‘আমরা ভাল খেলেও গোল করতে পারছি না। আশা করছি, আমরা ঘুরে দাঁড়াতে সফল হব।’’ দিল্লি ডায়নামোজ এফসি-র সহকারী কোচ শক্তি চৌহানও একমত নন্দ কুমারের সঙ্গে। তিনি বলেছেন, ‘‘আমরা ভাল খেলেও গোল করতে পারছি না। কেন বারবার এটা হচ্ছে, সেটাই খুঁজে বার করে ঘুরে দাঁড়াতে হবে।’’