নজরে: মাঠে ফিরতে বাধা রইল না শামির। নতুন উদ্যোগ হাসিনের।
ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের দুর্নীতি দমন শাখার সপ্তাহব্যাপী তদন্তের পরে ক্রিকেট-দুর্নীতির অভিযোগ থেকে ছাড় পেলেন জাতীয় ক্রিকেট দলের পেসার মহম্মদ শামি। বৃহস্পতিবার এ কথা জানিয়ে দিল বোর্ড। যার ফলে এ দিনই বোর্ডের বার্ষিক চুক্তির আওতায় ‘গ্রেড বি’-তে নিয়ে আসা হল শামি-কে। একই সঙ্গে আইপিএলে দিল্লি ডেয়ারডেভিলসের হয়ে খেলতেও কোনও সমস্যা রইল না শামির।
এ দিন ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের তরফে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের দুর্নীতি দমন শাখার প্রধান নীরজ কুমার গোপন তদন্ত রিপোর্ট প্রশাসকদের কমিটির কাছে পেশ করেছেন। সেই রিপোর্ট দেখার পরে শামির বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। শামি-কে বোর্ডের বার্ষিক চুক্তির ‘গ্রেড বি’-তে রাখা হচ্ছে।’
বোর্ডের কাছে নির্দোষ প্রমাণিত হওয়ার পরে শামির প্রতিক্রিয়া, ‘‘গত কয়েক দিন প্রচণ্ড চাপে ছিলাম। কারণ দেশের প্রতি আমার সততা ও দায়বদ্ধতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছিল। বোর্ডের তদন্তের প্রতি পূর্ণ আস্থা ছিল। জানতাম নির্দোষ প্রমাণিত হব। এ বার দ্রুত ক্রিকেটে মন দিতে চাই।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘এটা আমার বড় জয়। আশা রাখি, আমার বিরুদ্ধে আনা অন্য অভিযোগগুলোও মিথ্যা প্রমাণিত হবে।’’
তবে শামি-কাণ্ডের একটি দিকের নিষ্পত্তি হলেও অন্য অঙ্কও রয়েছে। শুক্রবার বিকেলেই শামির স্ত্রী হাসিন জাহানের সঙ্গে দেখা করার সময় দিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যে কথা জানিয়ে এ দিন সন্ধ্যায় হাসিনের আইনজীবী জাকির হুসেন বললেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী হাসিনের সঙ্গে একান্তে দেখা করার জন্য সময় দিয়েছেন। বোর্ডের নির্দেশ জেনেছি। কিন্তু তা এই তদন্তকে প্রভাবিত করবে না। হাসিন কখনও ম্যাচ গড়াপেটার অভিযোগ করেননি।’’ সঙ্গে যোগ করেন, ‘‘একটি রেকর্ড করা ফোন-কল শুনিয়েছিলেন হাসিন। সেখানে শামিকেই বলতে শোনা গিয়েছিল, বিদেশে কারও কাছ থেকে টাকা নিতে গিয়েছিল ও। সেই টাকা আবার অন্য কারও। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড সেই বিদেশি ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলেছেন কি না তা জানি না।’’
আরও পড়ুন: মুখ্যমন্ত্রী সময় দিতে পারেন, আশায় হাসিন
সাধারণ ক্রীড়াপ্রেমীদের মনেও কিন্তু বোর্ডের কাছে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে, কে এই মহম্মদ ভাই? কে এই আলিশবা? নীরজ কুমারের দুর্নীতি দমন শাখা শামি ও হাসিনের সঙ্গে নয়াদিল্লি ও কলকাতায় কথা বললেও, এই দুই ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলেছেন কি? এ ছাড়াও গোটা ভারতে আলোড়ন সৃষ্টিকারী এই ধরনের একটি তদন্ত রিপোর্ট বোর্ডের তরফে জনসমক্ষে প্রকাশ করাও প্রয়োজন বলে মনে করছেন কেউ কেউ। বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত যদিও এই তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়নি ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের ওয়েবসাইটে। এমনকি কোনও সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজনও করা হয়নি বোর্ডের তরফে। যেখানে সাংবাদিকরা এ ব্যাপারে প্রশ্ন করতে পারতেন দুর্নীতিদমন শাখার প্রধান নীরজ কুমারকে। কেনই বা বোর্ড এই তদন্ত নিজেদের দুর্নীতি দমন শাখার মাধ্যমে না করিয়ে অন্য কোনও নিরপেক্ষ সংস্থাকে দিয়ে করাল না? ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড সুপ্রিম কোর্ট নিযুক্ত প্রশাসকদের কমিটির মাধ্যমে চললেও এ ক্ষেত্রে কেন স্বচ্ছতার অভাব রয়ে গেল, তা নিয়ে প্রশ্ন থাকছেই।