টিম ইন্ডিয়ার দুই ফর্ম্যাটে হয়তো দু’জন কোচ

এটা হলে ক্রিকেট পৃথিবীতে আজব ব্যাপার হবে। বিষ্যুদবার ওভাল মাঠে ভারতীয় বোর্ড সচিব অনুরাগ ঠাকুর যার আভাস দিলেন। বললেন, ভারতীয় বোর্ড তেমন হলে দুটো ফর্ম্যাটে দুই কোচের কথাও ভাবছে।

Advertisement

গৌতম ভট্টাচার্য

কলম্বো শেষ আপডেট: ২১ অগস্ট ২০১৫ ০৩:৩৯
Share:

সঙ্গকারাকে স্মারক উপহার বিসিসিআই সচিব অনুরাগ ঠাকুরের। বৃহস্পতিবার কলম্বোয়। ছবি: পিটিআই।

এটা হলে ক্রিকেট পৃথিবীতে আজব ব্যাপার হবে। বিষ্যুদবার ওভাল মাঠে ভারতীয় বোর্ড সচিব অনুরাগ ঠাকুর যার আভাস দিলেন। বললেন, ভারতীয় বোর্ড তেমন হলে দুটো ফর্ম্যাটে দুই কোচের কথাও ভাবছে।

Advertisement

দুই ফর্ম্যাট তো নয়। আসলে তিন। যা ভাসা ভাসা বোঝা গেল যে, টি-টোয়েন্টি আর ওয়ান ডে-র জন্য এক জন কোচ। টেস্ট ম্যাচের জন্য আর এক জন। ‘‘দুটো ফর্ম্যাটে যদি দু’জন ক্যাপ্টেন হতে পারে তা হলে দু’জন কোচই বা নয় কেন?’’ বলেন অনুরাগ। তাঁর কথা সত্যি হলে আনুমানিক এমন দাঁড়াতে পারে যে, টেস্টে সৌরভের সঙ্গে কোহলি। ওয়ান ডে আর টি-টোয়েন্টিতে ধোনির সঙ্গে শাস্ত্রী।

আদৌ এমন উদ্ভট কিছু ঘটবে কি না, সময়ই বলবে। তবে ভারত যে উপযুক্ত কোচ পাচ্ছে না, সেটা নিজের মুখে স্বীকারই করে গেলেন বোর্ড সচিব। ‘‘এমন অবস্থা হয়েছে যে, আইপিএলে এরা দেড় মাসের জন্য কোচিং করিয়ে এত বেশি টাকা রোজগার করছে যে কেউ আর বারো মাসের জন্য পড়ে থাকতে রাজি হচ্ছে না,’’ বলেন তিনি।

Advertisement

‘‘এমন করা যায় যে কাউকে আইপিএল আর জাতীয় দল মিলিয়ে অফার দেওয়া। তা হলে হয়তো রাজিও হয়ে যাবে। কিন্তু সেটা করা ঠিক হবে না,’’ বলেন অনুরাগ। ভারতীয় কোচ হতে চেয়ে যে টম মুডি ছাড়া বিশেষ কোনও আবেদনপত্র জমা পড়েনি, তা আগেই জানা গেছিল। এ দিন বোর্ড ঠারেঠোরে সেটা স্বীকারই করে নিল।

সচিব অবশ্য জানালেন, কোচের ব্যাপারটা তাঁরা সেপ্টেম্বরেই ফয়সালা করে ফেলবেন। প্লেয়ারদের মতামত কি সেখানে গুরুত্বপূর্ণ হবে? অনুরাগ বলেন, ‘‘বড়জোর ক্যাপ্টেনের সঙ্গে কথা বলা যেতে পারে। সাধারণ ভাবে আমরা প্লেয়ারদের মতামত নিই না। ভেতর থেকে মোটামুটি ওরা কী চাইছে খবরই পেয়ে যাই।’’

জিজ্ঞেস করা হল, একজন কোচ আবার একজন টিম ডিরেক্টর— এ ভাবেই কি বাছাই হবে? বোর্ড সচিব বললেন, ‘‘আপনারা টিমের সঙ্গে ক’জন ঘুরে বেড়াক চাইছেন?’’ বোঝা গেল ওয়ান ম্যান ওয়ান পোস্ট। ডিরেক্টরের পদ সম্ভবত উঠে যাচ্ছে। তিনি আরও জানান, সৌরভ-সচিনদের কমিটি চলতি সিরিজ শেষ হলে তার পর পর্যালোচনামূলক বৈঠক করবে।

কিন্তু দুই ফর্ম্যাটে আলাদা দু’জন কি অস্বাভাবিক একটা ব্যাপার হবে না? অনুরাগ বলেছেন, ‘‘কত কিছু তো বদলেছে। ষাট দশকের চোখ দিয়ে সব কিছু দেখলে তো হবে না। আপনারা আগে যে ভঙ্গিতে ম্যাচ রিপোর্ট লিখতেন, এখনও কি সে ভাবে লেখেন?’’

বোর্ড এটা সত্যি করে দেখাতে পারবে কি না, কৌতূহলের ব্যাপার। কিন্তু গল টেস্ট বিপর্যয়ে তারা একটা তাৎপর্যপূর্ণ সিদ্ধান্ত মোটামুটি নিয়েছে। আগামী ২৮ অগস্ট কলকাতায় ওয়ার্কিং কমিটি বৈঠকে সম্ভবত সেটা অনুমোদন পাবে, তা হল দেশে ঘাসে ভরা ফাস্ট উইকেট তৈরির যে পরিকল্পনা এত দিন জারি ছিল, এ বার সেটা পরিত্যক্ত হচ্ছে। অ্যাদ্দিন বোর্ডের নির্দেশ ছিল যে, নিয়ম করে প্রতিটি রঞ্জি উইকেটে পাঁচ মিলিমিটার ঘাস রাখতে হবে। এর ফলে বিশেষ করে দেশের উত্তরাঞ্চলে দেখা যাচ্ছিল রঞ্জি ম্যাচ দু’আড়াই দিনে শেষ হয়ে যাচ্ছে। মাঝারি মাপের পেসাররা বিক্রম দেখাচ্ছে। অথচ তাদের যখন বড় ক্রিকেটে আনা হচ্ছে, তারা কিছুই করতে পারছে না। হরভজন ক্ষুব্ধ ভাবে বলেছেন, ‘‘দেশ ম্যালকম মার্শালে ভরে গেছে। ১২০ কিলোমিটার স্পিডে বল করেও এখন সব মার্শাল।’’

বোর্ড দেখেছে এর ফলে স্পিনার তৈরি হচ্ছে না। প্লাস ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা স্পিন খেলার টেকনিক হারিয়ে ফেলেছেন। যে কারণে গলের বিপর্যয় ঘটল। তাই এই সিদ্ধান্ত।

শোনা গেছিল যাবতীয় ক্রিকেট বিষয়ক ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে সৌরভদের কমিটি। কর্তারা দ্রুতই প্রমাণ করলেন ক্ষমতা তাঁরা বরাবরের মতো নিজেদের হাতেই রাখতে চান, তাতে হাইপ্রোফাইল কমিটি যদি হাস্যকর চা-বিস্কুট সঙ্ঘে পরিণত হয়, তাতেও তাঁদের সমস্যা নেই!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন