সিএসকে-র অন্যতম কর্তা গুরুনাথের সঙ্গে তৎকালীন বোর্ড প্রেসিডেন্ট শ্রীনিবাসন। —ফাইল চিত্র।
ক্রিকেট প্রশাসনে স্বার্থের সংঘাত আটকাতে অভিনব নির্দেশিকা জারি করল ভারতীয় বোর্ড। বোর্ডের কর্তারা তো বটেই, এমনকী রাজ্য প্রশাসনের মুখ্যদেরও মুচলেকা দিয়ে বলতে হবে যে, তাঁরা কোনও রকম স্বার্থের সংঘাতে জড়িত কি না।
শুধু তাই নয়, এটাও শোনা যাচ্ছে যে চুত্তিবদ্ধ ভারতীয় ক্রিকেটারদেরও নাকি অদূর ভবিষ্যতে একই মুচলেকা দিতে হতে পারে। যা খবর, তাতে নাকি আসন্ন শ্রীলঙ্কা সফর শেষের পরপরই ধোনি-রায়নাদেরও নাকি চিঠি পাঠিয়ে একই কথা বলা হতে পারে।
কিন্তু আচমকা এমন ফতোয়া জারি করল কেন ভারতীয় বোর্ড? বোর্ড প্রেসিডেন্ট জগমোহন ডালমিয়া শুক্রবার বিবৃতিত পাঠিয়ে বলেন যে, বোর্ডে স্বচ্ছ্বতা বজায় রাখার কারণেই এমন নির্দেশিকা। ডালমিয়া বলে দেন, ‘‘বোর্ড ও রাজ্য সংস্থাগুলির ক্রিকেট প্রশাসকদের যথাযথ দায়িত্ব ও কর্তব্যের গুরুত্ব মনে করিয়ে দেওয়ার জন্যই এই পদক্ষেপ।’’ বোর্ড প্রেসিডেন্টের দাবি, ২০০৫-এও এমনই এক উদ্যোগ তিনি নিয়েছিলেন এবং সে বছর বোর্ডের ওয়ার্কিং কমিটির সদস্যরা তাতে সইও করেছিলেন। বোর্ড প্রেসিডেন্টের বক্তব্যের পাশাপাশি আরও একটা মত পাওয়া গেল। বলা হল, লোঢা কমিশনের দ্বিতীয় রিপোর্টে বোর্ড প্রশাসনে বিভিন্ন সংস্কার প্রস্তাব আসতে চলেছে। তার আগে এটা করে অন্তত বোঝানো গেল যে, ভারতীয় বোর্ড তার আগেই সংস্কার-সাধনে নেমে পড়েছে।
নারায়ণস্বামী শ্রীনিবাসন যে তিরে বিদ্ধ হয়ে ভারতীয় বোর্ড প্রশাসন থেকে বিতাড়িত, সেই বিষে যাতে বোর্ড ভবিষ্যতে আর না আক্রান্ত হয়, সে কারণেই নাকি এমন পদক্ষেপ। সাত বছর আগে যখন বোর্ডের কোষাধ্যক্ষ ছিলেন শ্রীনিবাসন, তখন তিনি আইপিএল ফ্র্যাঞ্চাইজির মালিক হয়েছিলেন। আইপিএল স্পট ফিক্সিং মামলায় সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিরা তা নিয়ে প্রবল আপত্তি তোলেন এবং মূলত এই কারণেই শ্রীনিবাসনকে বোর্ডের প্রেসিডেন্টের আসন থেকে সরে দাঁড়াতে বলা হয়। বেশ কয়েকটা রাজ্য সংস্থাকে এ দিনই অনুরাগ ঠাকুরের সই করা এই নোটিস পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে খবর। যেখানে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, কোনও বোর্ড বা রাজ্য ক্রিকেট সংস্থার কোনও শীর্ষকর্তার ক্রিকেট সংক্রান্ত ব্যবসায় জড়িয়ে থাকা চলবে না। তেমন কোনও কিছুতে জড়িয়ে থাকলে তাঁকে ক্রিকেট প্রশাসনের পদ ছাড়তে হবে। সিএবি-তে এখনও তা এসে পৌঁছয়নি। তবে দু-একদিনের মধ্যেই এই নোটিস সমস্ত রাজ্য সংস্থা এবং অনুমোদিত সংস্থাগুলি পেয়ে যাবে বলে দাবি বোর্ডসূত্রের। রাজ্য সংস্থার শীর্ষকর্তাদের তো বটেই এমনকী যে সব কর্তা বোর্ডের সাব কমিটিতে রয়েছে, তাঁদেরও নাকি এই নোটিস ধরানো হবে বলে শোনা যাচ্ছে। কর্মকর্তাদের নোটিস পাঠানোর পর চুক্তিবদ্ধ ক্রিকেটারদের কাছেও নোটিস পাঠানো শুরু করবে বোর্ড।