সুপ্রিম কোর্টে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের মামলায় যে নতুন মোড় এল মঙ্গলবার, তাতে বোর্ড কর্তারা কিছুটা হলেও স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে পারেন।
বিচারপতি লোঢা কমিশনের ‘এক রাজ্য এক ভোট’ সুপারিশে আগে সায় ছিল সর্বোচ্চ আদালতের। এ বার তা নিয়ে নতুন করে বিবেচনা করা হবে বলে জানাল সুপ্রিম কোর্ট। এমনকি, এত দিন ধরে রাজ্য ক্রিকেট সংস্থাগুলির প্রতি যে অনমনীয় মনোভাব ছিল আদালতের, তাও কিছুটা নরম হতে শুরু করেছে বলে ওয়াকিবহাল মহলের ধারণা।
বোর্ডের নতুন গঠনতন্ত্র তৈরিতে রাজ্য সংস্থাগুলির মতামত চেয়েছেন বিচারপতিরা। নতুন গঠনতন্ত্রে জাতীয় নির্বাচকদের যোগ্যতা নিয়ে লোঢা কমিশনের সুপারিশও প্রতিফলিত না হতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছে আদালত। লোঢাদের সুপারিশ ছিল, নির্বাচকদের টেস্ট খেলার অভিজ্ঞতা থাকতেই হবে। কিন্তু নতুন নিয়মে সেই যোগ্যতামান শিথিল করা হতে পারে বলে শোনা যাচ্ছে। আদালতের বক্তব্য, ঘরোয়া ক্রিকেটের কিংবদন্তি পদ্মাকর শিভালকর, রাজিন্দার গোয়েলরা কোনও দিন টেস্ট খেলেননি। তবু অভিজ্ঞতাই তাঁদের সম্পদ। তাই টেস্ট খেলাই একমাত্র যোগ্যতা নাও হতে পারে।
প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রর বেঞ্চ রাজ্য ক্রিকেট সংস্থাগুলিকে ১১ মে-র মধ্যে নতুন গঠনতন্ত্র নিয়ে তাদের মতামত দেওয়ার নির্দেশ দেয়। ওই দিনই পরবর্তী শুনানি হবে। সুপ্রিম কোর্ট সাফ জানিয়ে দিয়েছে, বোর্ডের গঠনতন্ত্র চূড়ান্ত না হওয়া পর্যন্ত কোনও রাজ্য সংস্থায় নির্বাচন করা যাবে না।
আদালতের এই নির্দেশে প্রশ্ন উঠছে, গঠনতন্ত্রে বদল নিয়ে রাজ্য সংস্থাগুলির কাছে মতামত চাওয়া হলে, তারা কতটা লোঢা সুপারিশের পক্ষে মত দেবে? তা ছাড়া ২০১৬ সালের ১৮ জুলাই সুপ্রিম কোর্ট ‘এক রাজ্য এক ভোট’-এর সুপারিশ মেনে নেওয়ার পরেও মঙ্গলবার এই নির্দেশ দেওয়ায় বোর্ড কর্তারা অনেকে মনে করছেন, আদালত এই ব্যাপারে ক্রমশ নরম হচ্ছে। এবং, এই জায়গায় দাঁড়িয়ে সত্তরোর্ধ কর্তাদের অবসর ও তিন বছরের ‘কুলিং অফ পিরিয়ড’ নিয়ে অনেকের আতঙ্কও কাটতে শুরু করেছে। আদালত নিযুক্ত ‘কমিটি অব অ্যডমিনিস্ট্রেটর্স’ (সিওএ) নতুন গঠনতন্ত্র তৈরির আগেই বর্তমান শীর্ষকর্তাদের সরিয়ে দেওয়ার আর্জি জানিয়েছিল। সেই আর্জি নিয়ে কোনও সরাসরি প্রতিক্রিয়া মঙ্গলবার দেয়নি আদালত।