দেশের সর্বোচ্চ আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে এ বার পাল্টা লড়াইয়ের পথে গেল ভারতীয় বোর্ড। গত ১৮ জুলাই দেশের প্রধান বিচারপতি টিএস ঠাকুর ও বিচারপতি ইব্রাহিম খলিফুল্লার দেওয়া রায়ে পক্ষপাতিত্বের প্রভাব রয়েছে বলে অভিযোগ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে ‘রিভিউ পিটিশন’ দিল বোর্ড।
এই আবেদনে সুপ্রিম কোর্টের রায়কে ‘অযৌক্তিক’ আখ্যা দেওয়া হয়েছে। এমনকী এ-ও অভিযোগ করা হয়েছে যে, এই মামলায় হওয়া যুক্তি-তর্ক ও তথ্যগুলি ঠিকমতো ‘নোট’ করেননি সংশ্লিষ্ট বিচারপতিরা। সেগুলোর সঠিক বিচারও হয়নি। এই রায়কে ‘অসাংবিধানিক’ বলতেও ছাড়েনি বোর্ড। ভারতীয় সংবিধানের ১৯(১)(সি) ধারায় ভারতীয় নাগরিকদের যে মৌলিক অধিকার দেওয়া হয়েছে, এই রায় তার পরিপন্থী বলা হয়েছে আবেদনে। শুধু তাই নয়, রায় প্রদানে যে ভাবে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিদের নিয়ে গড়া কমিটির সাহায্য নেওয়া হয়েছে, তাকে আইনসিদ্ধ নয় বলে অভিযোগ বোর্ডের।
রায়ের ভাষায় যে পক্ষপাতিত্বের প্রভাব স্পষ্ট, তা-ও দাবি করা হয়েছে। বর্তমান রায় আপাতত স্থগিত রেখে মুক্ত আদালতে নতুন শুনানির আবেদন জানিয়েছে বোর্ড। যা নিয়ে আইনি মহলে রীতিমতো ঝড় উঠেছে। সর্বোচ্চ আদালতের রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে এমন আক্রমণাত্মক ভাষায় রিভিউ পিটিশন এর আগে কখনও কেউ করেছে কি না, সেই প্রশ্নও উঠতে শুরু করেছে।
অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি আরএম লোঢার নেতৃত্বে আদালত নিযুক্ত এক কমিটি ভারতীয় ক্রিকেট প্রশাসনে আমূল সংশোধনের বিভিন্ন সুপারিশ করে। বেশির ভাগ সুপারিশই বোর্ড মেনে নিলেও কয়েকটি সুপারিশ বাস্তবসম্মত নয় বলে আদালতকে জানিয়েছিলেন বোর্ডের আইনজীবীরা। কিন্তু কোনও যুক্তিই আদালত মানেনি। প্রায় সবই উড়িয়ে দিয়েছে। শুধু ক্রিকেটের টিভি সম্প্রচারের মাঝে বিজ্ঞাপন বন্ধের সুপারিশ এবং বোর্ডকে আরটিআইয়ের আওতায় আনার ব্যাপারে সম্মতি দেয়নি আদালত।
লোঢা কমিটির সুপারিশ পুরো মানতে হলে যে ক্রিকেট প্রশাসনকে ব্যাপক সমস্যায় পড়তে হবে, তা বোর্ডের অনুমোদিত সংস্থাগুলো প্রায় সবাই জানিয়েছে। বোর্ড এই বিষয়টি নিয়ে খতিয়ে দেখার জন্য অবসরপ্রাপ্ত সুপ্রিম কোর্ট বিচারপতি মার্কণ্ডেয় কাটজুকে দায়িত্ব দেয়। যদিও তাঁর সঙ্গে মুখোমুখি বসতে রাজি হননি বিচারপতি লোঢা। উল্টে সময়সীমা কমিয়ে বোর্ডকে ২৫ অক্টোবরের মধ্যে সমস্ত সুপারিশ কার্যকর করার নির্দেশ দেন। এর পর এই আবেদন নিয়ম অনুযায়ী যখন প্রধান বিচারপতি টিএস ঠাকুরের কাছেই পৌঁছবে, তখন তিনি তা গ্রাহ্য করেন কী না, সেটাই এখন দেখার।