মোহনবাগানের আই লিগ জয়ের নায়ককেই তুলে নিল ইস্টবেঙ্গল

আই লিগ জয়ের সপ্তাহ কাটতে না কাটতেই মোহনবাগানে বিরাট ধাক্কা। ধাক্কাটা আবার চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ইস্টবেঙ্গলের। মাত্র ছয় দিন আগে বেঙ্গালুরু ম্যাচ যাঁর গোলে ড্র রেখে সবুজ-মেরুনের আই লিগ জয়, সেই জয়ের নায়ক বেলো রজ্জাককেই তুলে দলবদলের বাজারে এখনও পর্যন্ত সেরা চমকটা দিল লাল-হলুদ। ইস্টবেঙ্গলের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হওয়ার পর শনিবারই কলকাতা ছাড়লেন বেলো। তার আগে আই লিগের সেরা ডিফেন্ডার আনন্দবাজারকে যা বললেন তাতে বিব্রত হতে পারেন বাগান কর্তারা।

Advertisement

দেবাঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ জুন ২০১৫ ০৩:৪৪
Share:

বেলো: এই জার্সি আর থাকছে না।

আই লিগ জয়ের সপ্তাহ কাটতে না কাটতেই মোহনবাগানে বিরাট ধাক্কা। ধাক্কাটা আবার চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ইস্টবেঙ্গলের।
মাত্র ছয় দিন আগে বেঙ্গালুরু ম্যাচ যাঁর গোলে ড্র রেখে সবুজ-মেরুনের আই লিগ জয়, সেই জয়ের নায়ক বেলো রজ্জাককেই তুলে দলবদলের বাজারে এখনও পর্যন্ত সেরা চমকটা দিল লাল-হলুদ।
ইস্টবেঙ্গলের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হওয়ার পর শনিবারই কলকাতা ছাড়লেন বেলো। তার আগে আই লিগের সেরা ডিফেন্ডার আনন্দবাজারকে যা বললেন তাতে বিব্রত হতে পারেন বাগান কর্তারা।
‘‘আই লিগ জিতে কর্তারা এতটাই আনন্দে মেতে ছিলেন, পরের মরসুমের চুক্তি নিয়ে কথা বাড়াননি। উল্টে কৌশলে তাঁরা মিডিয়ায় রটিয়ে দেন, আমি নাকি মোহনবাগানে সামনের মরসুমে খেলার জন্য এক কোটি টাকা চেয়েছি। যা ঠিক নয়।’’ ইস্টবেঙ্গলের দাবি, বেলোর জন্য এক কোটি নয়। তার চেয়ে অনেক কম টাকাতেই পাওয়া গিয়েছে নাইজিরিয়ান স্টপারকে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক লাল-হলুদ কর্তা বললেন, ‘‘টাকার অঙ্ক বলা যাবে না। কিন্তু প্রথম সারির ভারতীয় ফুটবলারদের যে টাকায় সই করানো হয়, সে রকম টাকাতেই ওকে আমরা সই করিয়েছি। কোটি টাকা লাগেনি।’’

Advertisement

ইস্টবেঙ্গলের অপারেশন বেলো-র পিছনে রয়েছে বাগান কর্তাদের চুক্তি নিয়ে টালবাহানা। আই লিগ জয়ের সেলিব্রেশনে বাগান কর্তারা যখন ব্যস্ত তখন গত বুধবার সন্ধেয় আসরে নামে ইস্টবেঙ্গল। সাড়ে আটটা নাগাদ বেলোর কাছে ফোন যায় লাল-হলুদের। আধঘণ্টার মধ্যে তাঁকে বাইপাসের ধারের এক বিলাসবহুল হোটেলের রেস্তোরাঁয় আসতে বলা হয়। কথা মতো রাত ন’টায় সেখানে আসেন বেলো। ততক্ষণে সেখানে পৌঁছে গিয়েছেন ইস্টবেঙ্গলের এ বারের দল গঠনের সঙ্গে জড়িতে দুই কর্তা। টানা আড়াই ঘণ্টা বেলোর সঙ্গে আলোচনার পর তাঁকে নিয়ে গাড়িতে ওঠেন সেই দুই কর্তা। এর পর বেলোকে নিয়ে যাওয়া হয় ফুটবল সচিব সন্তোষ ভট্টাচার্যের বাড়িতে। সেখানেই চুক্তির ব্যাপারে চূড়ান্ত কথাবার্তা হয়। শেষমেশ রাত দেড়টা নাগাদ ইস্টবেঙ্গলে খেলার ব্যাপারে ফুটবল সচিবকে পাকা কথা দেন বেলো। সই করেন চুক্তিপত্রে।

কেন বাগান কর্তাদের জন্য অপেক্ষা না করে লাল-হলুদে চলে গেলেন? বেলো বললেন, ‘‘আমি পেশাদার। মোহনবাগান দেরি করছিল। ইস্টবেঙ্গল আন্তরিক ভাবে আগ্রহ দেখিয়েছে। তা ছাড়া ভারতে আসার পর থেকে লাল-হলুদ জার্সি পরে খেলার একটা ইচ্ছা তো ছিলই। এত দিনে তা পূর্ণ হল।’’

Advertisement

বেলোর ব্যাপারে অবশ্য লাল-হলুদ কর্তাদের মুখে কুলুপ। ফুটবল সচিব পর্যন্ত ফোনে নিস্পৃহ গলায় বললেন, ‘‘আমি কিছু জানি না তো!’’

গত মরসুমের শুরুতে টালিগঞ্জ অগ্রগামীতে ছিলেন বেলো। সঞ্জয় সেন বাগানে কোচ হয়ে আসার পর এই বিদেশি ডিফেন্ডারকে লোনে নেন বাগান কর্তারা। যে কারণে পরস্পরের ফুটবলার নেওয়ার ব্যাপারে মোহন-ইস্টের মধ্যে যে চুক্তি রয়েছে তার মধ্যেও বেলো পড়ছেন না বলে দাবি লাল-হলুদ কর্তাদের।

তেরো বছর আগে গোয়ায় এক নাইজিরিয়ান ডিফেন্ডারের গোলে জাতীয় লিগ জেতার পরের মরসুমেই আর তাঁকে সবুজ-মেরুন জার্সি পরে খেলতে দেখা যায়নি। সেই আব্দুল স্যালিউয়ের সঙ্গে এ বারের বেলোর পার্থক্য— এ বারের বাগান নায়ক পরের মরসুমে কলকাতাতেই খেলবেন।

তবে মোহনবাগানের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ইস্টবেঙ্গলে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন