উৎসব: কোচ মৃদুল উঠলেন ছাত্রদের কাঁধে। টুইটার
সন্তোষ ট্রফি খেলতে গোয়ায় পা দিয়েই কলকাতায় ফিরে এসেছিলেন তাঁর স্ট্রাইকার জিতেন মুর্মু।
রবিবার রাতে সেই গোয়াতেই বাংলাকে পাঁচ বছর পর সন্তোষ ট্রফি চ্যাম্পিয়ন করিয়ে কোচ মৃদুল বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রথম প্রতিক্রিয়া, ‘‘এই জয় উৎসর্গ করছি জিতেনকে।’’
সন্তোষ ট্রফিতে রেকর্ড ৩২ বার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার রাতে টিভিতে মৃদুল বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই কথা শুনে আবেগে গলা বুজে আসে জিতেন মুর্মুর। ফোনে বলেন, ‘‘মৃদুল স্যারই এই সাফল্যের আসল কারিগর। ’’
অতিরিক্ত সময়ের খেলা যখন শুরু হচ্ছে তখন টিভি ক্যামেরায় এক ঝলক ধরা পড়েছিল মৃদুল বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখ। চোখেমুখে একরাশ চিন্তা। মনবীরকে ডেকে কিছু বলে চলে গেলেন রিজার্ভ বেঞ্চের দিকে। শিষ্যকে কী মন্ত্র দিয়েছিলেন জানতে মাঠ থেকে হোটেলে ফেরার পথে ফোনে ধরা হল বাংলা কোচকে। টিম বাসে তখন তারস্বরে বাজছে এক বছর আগে সুপারহিট হওয়া ডোয়েন ব্র্যাভোর ‘চ্যাম্পিয়ন’ গানটা। আর তাতে ভাংড়া, ক্যালিপসো মিশিয়ে কোমর দোলাতে ব্যস্ত মনবীর, বসন্ত, প্রভাতরা। ফোন ধরেই মৃদুল বলতে শুরু করেন, ‘‘বাংলাকে সন্তোষে চ্যাম্পিয়ন করার জন্য একটা চ্যালেঞ্জ নিয়েছিলাম। আজ তাতে পাশ করে গেলাম। অতিরিক্ত সময়ে মনবীরকে বলছিলাম তুমি গোল পাবেই। কথাটা ফলে গেল শেষ পর্যন্ত।’’
টাইব্রেকার বাদ দিলে এ বারের সন্তোষ ট্রফিতে কোনও গোল হজম করেনি মৃদুলের বাংলা। সে কথা মনে করাতেই বাংলা কোচ বলে দেন ‘‘রানাদের বলেছিলাম, গোল খাওয়া চলবে না। আর মাঝমাঠে গোয়ানদের বল ধরতে দিবি না। তা হলেই জিতে যাব। আমাদের রক্ষণ টুর্নামেন্ট জুড়ে দারুণ খেলল। সন্তোষ জয়ে ওদের কৃতিত্ব দিতেই হবে।’’ সঙ্গে এটাও বলে দেন, ‘‘বসন্তকে বলেছিলাম গোয়ার রক্ষণে বাঁ দিকটা নড়বড়ে। ওই দিকটা নিশানা বানাও।’’
তবে সাফল্যের রাতে উচ্ছ্বাসে ভাসতে নারাজ বাংলা কোচ। বলেন, ‘‘বড় ক্লাবে সই করার বছরেই পা ভেঙে গিয়েছিল। তাই ফুটবলার হিসেবে নাম করতে পারিনি। সন্তোষ জিতে সেই যন্ত্রণা কিছুটা হলেও কমল। রঘু নন্দী আর সঞ্জয় সেন ফোন করে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। বন্ধুদের আরও ফোন পাব।’’
ততক্ষণে চলে এসেছে আইএফএ সচিব উৎপল গঙ্গোপাধ্যায়ের ফোন। টিম বাসেই তিনি কলকাতা থেকে জানিয়ে দেন পুরস্কার মূল্যের পাঁচ লক্ষ টাকা ভাগ করে দেওয়া হবে টিমে। এ ছাড়াও আর্থিক পুরস্কার থাকছে। পাঁচ তারা হোটেলে সেলিব্রেশন পার্টিও হবে। টুইট করে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী, ক্রীড়ামন্ত্রী, ইস্টবেঙ্গল ক্লাবও। যা আনন্দবাজারের কাছ থেকে জেনে অধিনায়ক রানা ঘরামির প্রতিক্রিয়া, ‘‘আই লিগ, আইএসএল, ফেডারেশন কাপ বাংলায় এসেছে। এ বার আমরা দিলাম সন্তোষ ট্রফি। বাঙালির ফুটবল শেষ হয়ে গিয়েছে, আশা করি এ বার সেটা বলা বন্ধ হবে কয়েকদিনের জন্য।’’