বাংলার প্রাক্তনের লড়াই কঠিন করে দিল বাংলার জয়

ভেবেছিলেন কালীপুজোর দিনই ম্যাচ শেষ করে দিওয়ালি উৎসব শুরু করে দেবেন। বাংলার ক্রিকেটারদের সেই ইচ্ছেয় বাধ সাধলেন এক বাঙালিই। যিনি বাংলার প্রাক্তন ও বর্তমানে বাংলার শত্রুপক্ষে। অরিন্দম ঘোষ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ অক্টোবর ২০১৬ ০৩:১০
Share:

রেলের অরিন্দম ঘোষ: ৫১ রান

ভেবেছিলেন কালীপুজোর দিনই ম্যাচ শেষ করে দিওয়ালি উৎসব শুরু করে দেবেন। বাংলার ক্রিকেটারদের সেই ইচ্ছেয় বাধ সাধলেন এক বাঙালিই। যিনি বাংলার প্রাক্তন ও বর্তমানে বাংলার শত্রুপক্ষে। অরিন্দম ঘোষ।

Advertisement

জয়ের জন্য ৩১৫-র টার্গেট রেলওয়েজের। ধর্মশালার এই আতঙ্কের উইকেটে যা কঠিন বললেও কম বলা হয়। ব্যাটিংয়ের শুরুতে ২২-৩ হয়ে প্রায় বেলাইনও হতে বসেছিল রেল। কিন্তু অরিন্দম (৫১) ও ওপেনার শিবকান্ত শুক্লর (৮৩) ১৩৪ রানের পার্টনারশিপই রেলকে ফের লাইনে নিয়ে আসেন। বাংলার তিন দিনে ম্যাচ শেষ করার প্ল্যানও ভেস্তে দিলেন তাঁরা। দিনের শেষে রেলওয়েজ ১৯৬-৫। জিততে দরকার আরও ১১৯। আর বাংলার দরকার পাঁচ উইকেট। বঙ্গ পেসারদের হাতে নতুন চেরি চলে এসেছে। রবিবার সকালের স্যাঁতসেঁতে আবহাওয়ায় সেই লাল চেরিকেই আগুনের গোলা বানানোর পরিকল্পনা নিয়ে নামবেন অশোক দিন্দা, অমিত কুইলা, সায়ন ঘোষরা।

আগের ইনিংসে পাঁচ উইকেট নেওয়া অশোক দিন্দা এ দিন ২০ ওভার বল করেও অদ্ভুত ভাবে শিকারহীন। বরং জুনিয়র পেসাররা এ দিন বাংলাকে ভরসা দিলেন। রেলের ইনিংসের শুরুতে অমিত কুইলা তিন উইকেট ফেলে দিয়েছিলেন। দিনের শেষ দিকে আর এক আনকোরা পেসার সায়ন ঘোষ ফেরালেন ম্যাচের সবচেয়ে বড় পার্টনারশিপের দুই নায়ককে। এখন এই পেসারদের দিকেই তাকিয়ে বাংলা। উল্টোদিকে ক্রিজে রেলের পোড় খাওয়া ব্যাটসম্যান মহেশ রাওয়াত ও ক্যাপ্টেন কর্ণ শর্মা। রানে ফেরা কর্ণ আগের ম্যাচে ৪৮ করার পর এই ম্যাচে প্রথম ইনিংসে করেছেন ৪০। আর রাওয়াত আগের ম্যাচেই দ্বিতীয় ইনিংসে হাফ সেঞ্চুরি করেছিলেন। সকালটা সামলে এই দু’জন ফের একটা বড় পার্টনারশিপ গড়লে বাংলার কাজ ফের কঠিন হয়ে উঠবে।

Advertisement

তবে অত খারাপ সময় আসবে না বলেই বাংলা শিবিরের আশা। বলছেন, রবিবার সকালের সেশনেই ম্যাচ শেষ করে দিতে পারবে তারা। ক্যাপ্টেন মনোজ তিওয়ারি রাতে ধর্মশালা থেকে ফোনে বললেন, ‘‘আমরা আজ শেষ ওভারে নতুন বল নিয়েছি। আর এখানে প্রথম সেশনেই বেশি উইকেট পড়ে উইকেটে ময়েশ্চার থাকার জন্য। রবিবার সকালেই আমাদের বোলাররা মনে হয় শেষ পাঁচটা উইকেট ফেলে দিতে পারবে। বড় জোর দুটো সেশন হবে হয়তো। ম্যাচ এখনও আমাদের হাতেই।’’

কিন্তু সকালের দিকে পরপর তিনটে উইকেট পড়ার পর উইকেটের খরা কেন?

অমিত কুইলা ব্যাখ্যা দিলেন, ‘‘শুরুতে উইকেট পেলেও পরের দিকে বল বেশি সুইং করানো যাচ্ছিল না। আর ওরা তো বেশির ভাগ বলই ছেড়ে দিয়ে খেলছিল।’’ রেলের দুই ব্যাটসম্যান যে রানের কথা না ভেবে উইকেটে পড়ে থাকার পরিকল্পনা নিয়েই নেমেছিলেন তা অরিন্দমের ২৮ ও শুক্লর ৪৪-এর স্ট্রাইক রেট দেখেই বোঝা যাচ্ছে।

অধিনায়ক মনোজের বক্তব্য, ‘‘এই সময় ওদের একটা ভাল পার্টনারশিপই স্বাভাবিক ঘটনা। কিন্তু আমাদেরও বড় পার্টনারশিপ ভাঙার মতো বল করতে হবে। সে রকম প্ল্যান আজ ছিলও। কিন্তু ব্যাটসম্যানরা যদি কেউ রান না করার কথা ভেবে শুধু উইকেটে টিকে থাকার জন্য ব্যাট করতে নামে, তা হলে বোলারদের কাজটা খুব কঠিন হয়ে যায়। তবে ওদের দিক থেকে ওরা ঠিকই আছে।’’

কুইলার আশা, রবিবার সকালে নতুন বল নিয়েই সব শেষ করে দেবেন। তার পর দীপাবলীর উৎসবে মাতবেন তাঁরাই।

সংক্ষিপ্ত স্কোর: বাংলা ২০৫ ও ২১৪, রেলওয়েজ ১০৫ ও ১৯৬-৫ (শুক্ল ৮৩, অরিন্দম ৫১, কুইলা ৩-৪২, সায়ন ২-৫২)।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement