মধুমিতার পরে ফের ভারতসেরা বাংলার ঋতুপর্ণা

মধুমিতা বিস্তের চোখ ধাঁধানো সাফল্যের বহুদিন পর আবার এক বঙ্গতনয়ার মাথায় উঠল ভারত সেরার মুকুট। এবং জাতীয় ব্যাডমিন্টনের সিনিয়র বিভাগে দেশের এক নম্বর হয়ে হলদিয়ার ঋতুপর্ণা দাশ পটনা থেকে ফোনে বলে দিলেন, ‘‘আমার লক্ষ্য ২০২০-র টোকিও অলিম্পিক্সের দলে ঢোকা।

Advertisement

রতন চক্রবর্তী

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০৩:৪১
Share:

পটনায় জাতীয় সেরা বাংলার মেয়ে। ছবি: পিটিআই।

মধুমিতা বিস্তের চোখ ধাঁধানো সাফল্যের বহুদিন পর আবার এক বঙ্গতনয়ার মাথায় উঠল ভারত সেরার মুকুট। এবং জাতীয় ব্যাডমিন্টনের সিনিয়র বিভাগে দেশের এক নম্বর হয়ে হলদিয়ার ঋতুপর্ণা দাশ পটনা থেকে ফোনে বলে দিলেন, ‘‘আমার লক্ষ্য ২০২০-র টোকিও অলিম্পিক্সের দলে ঢোকা। তার আগে আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট খেলে নিজের র‌্যাঙ্কিং বাড়ানোটাও লক্ষ্য।’’

Advertisement

আটবারের চ্যাম্পিয়ন মধুমিতা ভারতীয় ব্যাডমিন্টনের সফলতম মেয়ে খেলোয়াড়। বাংলার মেয়ে হলেও খেলতেন রেলওয়েজের জার্সিতে। আর হায়দরাবাদে গোপীচন্দের অ্যাকাডেমিতে থাকার সুবাদে ঋতুপর্ণা খেলেন তেলঙ্গনার হয়ে। তাতে অবশ্য খেদ নেই ওসমানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীর। বরং নিজেকে বাংলার মেয়ে বলতেই ভালবাসেন, মধুমিতার মতোই। বলছিলেন, ‘‘বাংলায় তো আমাদের খেলার ভাল সেরকম ভাল পরিকাঠামো নেই। তাই এখানে এসেছি গোপীস্যারের কাছে। ছয় বছর বাংলার বাইরে থাকলেও আমি নিজেকে বাংলারই মেয়ে মনে করি।’’ এ বার নিয়ে পরপর তিনবার ফাইনালে উঠলেন ঋতু। আগের দু’বার পারেননি। এ বার পারলেন। সাতাশ বছর পর ফের কোনও বাঙালি কন্যার মাথায় উঠল জাতীয় চ্যাম্পিয়নের মুকুট। সে জন্যই খুশিটা একটু বেশিই মনে হল। বলছিলেন, ‘‘আগের দু’বার ফাইনালে উঠেও পারিনি। এ বার পেরেছি। দারুণ লাগছে। পোল্যান্ডে এবং হায়দরবাদে আন্তর্জাতিক সিরিজ জয়ের পাশে রাখব এই জয়কে। চোটের পর এটাই আমার বড় সাফল্য বলে। হাঁটুর অস্ত্রোপচারের পর ফিরে এসে এরকম সাফল্য আমাকে নতুন জীবন দিল বলতে পারেন।’’

চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর প্রথমেই ফোন করেছিলেন কোচ গোপীচন্দকে। কিন্তু ধরতে পারেননি। ‘‘উনি ব্যস্ত ছিলেন। হোটেলে ফিরে আবার চেষ্টা করব ফোনে ধরার। আমার ট্রফিটা মা-বাবা এবং কোচেদের উৎসর্গ করছি।’’ বলছিলেন দেশের অন্যতম সেরা ব্যাডমিন্টন খেলোয়াড়। বিশ্বে এখন তাঁর র‌্যাঙ্কিং ৫৫। ‘‘এরপরই আমি এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে খেলতে যাচ্ছি। এরপর আরও কিছু আন্তর্জাতিক টুনার্মেন্ট খেলব। আমার লক্ষ্য র‌্যাঙ্কিংয়ে যত বেশি সম্ভব ওপরে ওঠা। ফোকাসটা ঠিক রেখেছিলাম বলে এখানে চ্যাম্পিয়ন হয়েছি। সেটা ধরে রাখতে হবে।’’

Advertisement

মঙ্গলবার পাটলিপুত্র স্টেডিয়ামে ঋতুপর্ণা দাঁড়াতেই দেননি প্রতিপক্ষ রেশমাকে। জিতলেন ২১-১২, ২১-১৪-তে। এই টুনার্মেন্টে কুড়ি বছরের ঋতু ছিলেন দ্বিতীয় বাছাই। শীর্ষ বাছাই মহারাষ্ট্রের তানভি লাভি হেরে যাওয়ায় লাভই হয়েছিল বি কম পড়া ছাত্রীর।

সাইনা নেহওয়াল সাত বছর হল জাতীয় টুনার্মেন্টে খেলেন না। পিভি সিন্ধু এ বার খেলেননি। চোটের জন্য ছিলেন না ঋতিকা এবং তুলসী। এরকম মঞ্চে পাঁচটি ম্যাচেই দুর্দান্ত খেললেন ঋতু। এমনিতে তিনি দেশের অন্যতম প্রতিশ্রুতিমান ব্যাডমিন্টন খেলোয়াড়, যাঁকে নিয়ে স্বপ্ন দেখছিলেন অনেকেই। কিন্তু হঠাৎ-ই হাঁটুতে চোট পেয়ে ছিটকে গিয়েছিলেন তিনি। বহুদিন পর ফিরলেন আলোয়। বাংলার ঋতুপর্ণা ফিরলেও উত্তরাখন্ডের বিস্ময় বালক লক্ষ্য সেন হেরে গেলেন সিনিয়র পুরষদের বিভাগে। সৌরভ বর্মা জিতলেন ২১-১৩, ২১-১২।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন