ডেঙ্গিতে কাবু বীরপ্রতাপ

বাংলা বনাম কেকেআর যুদ্ধে নায়ক অভিমন্যু

শুরুতেই হিট বাংলার ব্যাটিং। রঞ্জি মরসুমের প্রথম ম্যাচেই বাংলার টপ অর্ডার বুঝিয়ে দিল, তাদের এ বার সমীহ করতেই হবে। ওপেনার অভিমন্যু ঈশ্বরনের অপরাজিত সেঞ্চুরি ও টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানদের দাপটে বাংলা রঞ্জির প্রথম ম্যাচে রান-পাহাড় গড়ার স্বপ্ন দেখছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৪ অক্টোবর ২০১৬ ০৩:৪৪
Share:

অভিমন্যু ব্যাটিং ১২৩।

শুরুতেই হিট বাংলার ব্যাটিং। রঞ্জি মরসুমের প্রথম ম্যাচেই বাংলার টপ অর্ডার বুঝিয়ে দিল, তাদের এ বার সমীহ করতেই হবে। ওপেনার অভিমন্যু ঈশ্বরনের অপরাজিত সেঞ্চুরি ও টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানদের দাপটে বাংলা রঞ্জির প্রথম ম্যাচে রান-পাহাড় গড়ার স্বপ্ন দেখছে।

Advertisement

বৃহস্পতিবার সকালে মনোজ তিওয়ারি টস জেতায় এ দিনের লড়াইটা ছিল বাংলার ব্যাটসম্যান ও কেকেআর বোলারদের মধ্যে। অঙ্কিত রাজপুত, কুলদীপ যাদব, পীযূষ চাওলারা তো গম্ভীরের দলেরই। দিনের শেষে কিন্তু হারই মানলেন তাঁরা। মহাভারতের অভিমন্যু চক্রব্যূহে আটকে পড়েছিলেন। কিন্তু কুলদীপ, চাওলারা বাংলার অভিমন্যুর চক্রব্যূহে আটকে পড়লেন।

বৃহস্পতিবার সারাক্ষণ ব্যাট করে দিন শেষে ১২৩-এ অপরাজিত ঈশ্বরন। ড্রেসিংরুম থেকে এই ইনিংস দেখার পর বাংলার ক্যাপ্টেন মনোজ তিওয়ারির প্রতিক্রিয়া, ‘‘এই বয়সে এত ম্যাচিওরড ব্যাটসম্যান! কখনও দেখিনি আমি। ওকে আমরা সবাই ভরসা করি। ও সেই ভরসারই দাম দিল। আশা করি, এই পারফরম্যান্স অভিমন্যু ধরে রাখতে পারবে সারা মরসুম। এত ভাল প্রস্তুতি নিয়েছে ও। সেটা জানি বলেই বলছি। ইনিংসটা দুর্দান্ত খেলেছে। অসাধারণ কিছু শট খেলেছে। বোলারদের সব সময় ডমিনেট করেছে। ওরা ভাল বোলিং করেও অভিমন্যুকে দমাতে পারেনি এতটুকু।’’ আর রঞ্জি অভিষেকে অগ্নিভ পানেরও হাফ সেঞ্চুরি। সুদীপ চট্টোপাধ্যায় তো এখন বরাবরের বড় ভরসা। তাঁর ব্যাট থেকেও এল ৭৩। শেষ বিকেলে যখন ব্যাট হাতে নামলেন ক্যাপ্টেন মনোজ তিওয়ারি, তখন বাংলা ২৮২-৩। শেষ পর্যন্ত দিনের শেষে স্কোরটা দাঁড়াল ২৮৮-৩।

Advertisement

আর দিনের নায়ক কী বলছেন? ‘‘উইকেটটা ব্যাটিং করার পক্ষে বেশ ভাল। শুরু থেকেই বড় ইনিংসের প্ল্যান ছিল। যেমন সব ম্যাচেই থাকে। উইকেটটা তাতে সাহায্য করেছে। তবে ওরা ভাল বোলিং করছিল। বিশেষ করে অঙ্কিত। খুব ভাল লাগছে এ রকম একটা বড় ইনিংস খেলতে পেরে। তবে ডাবল সেঞ্চুরি করতে পারলে আরও ভাল লাগবে,’’ ফোনে বলছিলেন ঈশ্বরন। মনোজ অবশ্য এই ব্যাপারে আশাবাদী। বললেন, ‘‘ভাল ইনিংসকে বড় ইনিংসে পরিণত করতে অভিমন্যুর সমস্যা হত। এখন আর সেটা হচ্ছে না। কেএসসিএ টুর্নামেন্টেও দেখেছি। ও এই সমস্যাটা ক্রমশ কাটিয়ে উঠছে।’’ ঈশ্বরনের নিজেরও উপলব্ধি, ‘‘আগের চেয়ে এখন অনেক বেশি আত্মবিশ্বাস নিয়ে খেলছি।’’ ঈশ্বরন রঞ্জি অভিষেকে সেঞ্চুরি করেছিলেন, তেমন অভিষেকে হাফ সেঞ্চুরি করলেন অগ্নিভ। হাফ ডজন বাউন্ডারি মেরে ৫১ করার পর বললেন, ‘‘ক্যাপ্টেন আর কোচ আমাকে বলেই দিয়েছিলেন, নিজের স্বাভাবিক খেলাটা খেলতে। সেটাই করেছি আমি। কিন্তু একটা বলে লাইন মিস করে বোল্ড হয়ে গেলাম। আরও রান করার ইচ্ছা ছিল।’’

মনোজের ধারণা উইকেট ভাঙবে। তখন বাংলার স্পিনাররা বিপক্ষকে চাপে ফেলে দিতে পারবে। বললেন, ‘‘সকালে আমরা উইকেট দেখে বেশ অবাক হয়ে যাই। কাল যে রকম গ্রিনটপ দেখেছিলাম, আজ সকালে মাঠে এসে দেখি, সেই সবুজ ভাবটাই উধাও। তাই টিম কম্বিনেশনের প্ল্যানটাও বদলে ফেলি।’’ তিন পেসারে নামার ভাবনাটা বদলে দুই পেসার ও দুই স্পিনারে নামে বাংলা। প্রজ্ঞান ওঝা ও আমির গনিই যে দলকে জয়ের দিকে নিয়ে যাবে, সে রকমই বিশ্বাস অধিনায়কের। আর প্রথম ইনিংসে রানের পাহাড় গড়ার পর মনোজের দ্বিতীয় বার ব্যাট করতে নামার তেমন ইচ্ছাও আছে বলে মনে হল না। বললেন, ‘‘উইকেট যে রকম শুকনো, কাল-পরশু থেকেই ভাঙতে শুরু করবে বলেই মনে হচ্ছে। সেই জন্যই আমরা দুই স্পিনারে নেমেছি। এতে আমাদের ভালই হল। পরের দিকে আমাদের স্পিনাররা উইকেট থেকে সাহায্য নিয়ে ভাল করতে পারলে আমরা হয়তো ম্যাচ জিততেও পারি।’’

কিন্তু তার জন্য শুক্রবার প্রায় সারা দিন ব্যাট করতে হবে বাংলাকে। মনোজ ও ঈশ্বরন জুটি দিন শুরু করবেন। দুই ব্যাটসম্যানই জানিয়ে দিলেন, যতটা সম্ভব উইকেটে টিকে থেকে রান তোলার পরিকল্পনা রয়েছে তাঁদের। পঙ্কজ শাউ, আমির গনিরাও ভাল ব্যাটিং করেন ঠিকই। কিন্তু কাজটা তাঁদের জন্য ফেলে না রেখে নিজেই তা করতে চান মনোজ।

এ দিকে মাঠে ভাল সময় গেলেও মাঠের বাইরে বাংলার সময়টা ভাল যাচ্ছে না। দলের অন্যতম প্রধান স্ট্রাইক বোলার বীরপ্রতাপ সিংহর ডেঙ্গি ধরা পড়ায় তাঁকে কলকাতায় ফেরত পাঠানো হল। ইশান পোড়েলকেও ফেরানো হল তাঁর সাইড স্ট্রেইনের জন্য।

সংক্ষিপ্ত স্কোর
বাংলা ২৮৮-৩
(ঈশ্বরন ১২৩ ন.আ. সুদীপ ৭৩, অগ্নিভ ৫১, রাজপুত ৩-৭২)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement