ইনিংস উৎসর্গ বীর অভিনন্দনকে

ঋদ্ধিমানের ব্যাটিং ঝড়ে জয় বাংলার

চোট সারিয়ে সদ্য ক্রিকেটে ফেরা ভারতীয় টেস্ট দলের কিপার সোশ্যাল মিডিয়ায় বার্তা দেন, ‘‘আজকের এই ইনিংসটা আমার কাছে ‘স্পেশ্যাল’। এই ইনিংস আমি উৎসর্গ করছি ভারতের বীর সন্তান বায়ুসেনার উইং কম্যান্ডার অভিনন্দনকে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

শেষ আপডেট: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৪:২৮
Share:

আগ্রাসী: পছন্দের জায়গায় ফিরেই বিধ্বংসী ইনিংস ঋদ্ধির। ফাইল চিত্র

আট মাস পরে মাঠে ফিরে এ বার রানেও ফিরলেন ঋদ্ধিমান সাহা। বুধবার কটকে মুস্তাক আলি ট্রফি টি-টোয়েন্টির ম্যাচে অরুণাচল প্রদেশের বিরুদ্ধে ব্যাটে ঝড় তোলেন তিনি। ৬২ বলে ১২৯ রান করে বুঝিয়ে দেন, কতটা ‘জোশ’ রয়েছে তাঁর মধ্যে। কিন্তু ম্যাচের পরে যা করলেন, তা যে কোনও ভারতীয়কে গর্বিত করার মতো। তাঁর এই স্মরণীয় ইনিংস ঋদ্ধি উৎসর্গ করলেন বায়ুসেনার উইং কম্যান্ডার অভিনন্দনকে। যিনি এ দিন পাকিস্তানি সেনার হাতে আটক হন।

Advertisement

চোট সারিয়ে সদ্য ক্রিকেটে ফেরা ভারতীয় টেস্ট দলের কিপার সোশ্যাল মিডিয়ায় বার্তা দেন, ‘‘আজকের এই ইনিংসটা আমার কাছে ‘স্পেশ্যাল’। এই ইনিংস আমি উৎসর্গ করছি ভারতের বীর সন্তান বায়ুসেনার উইং কম্যান্ডার অভিনন্দনকে। প্রার্থনা করি, উনি যেন সুস্থ শরীরে ভারতে ফিরে আসেন। জয় হিন্দ।’’ তাঁর ও বিবেক সিংহের ব্যাটিং ঝড়ে বাংলা ২৩৪ রান তুলে অরুণাচলকে হারায় ১০৭ রানে। প্রতিপক্ষকে কুড়ি ওভারে ১২৭-৪-এর বেশি এগোতে দেননি বোলাররা।

গত বছর অগস্টে ইংল্যান্ডে কাঁধে অস্ত্রোপচারের পরে দেশে ফিরে সুস্থ হয়ে উঠতে বেঙ্গালুরুর জাতীয় ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতে আট মাস ধরে রিহ্যাব করেন তিনি। সামনে আইপিএল। তাই জাতীয় টি-টোয়েন্টি প্রতিযোগিতাকেই বেছে নেন মাঠে ফেরার জন্য।

Advertisement

প্রথম চারটি ম্যাচে সাবলীল কিপিং করলেও ব্যাট হাতে সব মিলিয়ে ২২ রানের বেশি পাননি ঋদ্ধি। যার ফলে তাঁকে নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে টিম ম্যানেজমেন্ট। অরুণাচলের বিরুদ্ধে ম্যাচই তাঁরা বেছে নেন বঙ্গ কিপারকে রান ও আত্মবিশ্বাসে ফিরিয়ে আনার জন্য। গত চার ম্যাচে তিনি পাঁচ নম্বরে ব্যাট করতে নামায় বেশি সময় পাননি। দু’বার রান আউট হয়ে যান। যে পছন্দের জায়গার কথা তিনি আগেই বলেছিলেন, বুধবার কোচ অরুণ লালের পরামর্শে সেই ওপেনিংয়েই নামেন ঋদ্ধি। এবং বুঝিয়ে দেন, ঠিক জায়গায় নামলে দলকে প্রচুর রান দিতে তিনি প্রস্তুত।

ঋদ্ধিমান এ দিন ৫০-এ পৌঁছন ২২ বল খেলে। একশোয় পৌঁছতে তাঁর লাগে ৪৭ বল। ১৬টি চার ও চারটি ছয় মারেন তিনি। এটি দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি সেঞ্চুরি তাঁর। ২০১৪-য় বেঙ্গালুরুতে আইপিএল ফাইনালে কলকাতা নাইট রাইডার্সের বিরুদ্ধে প্রথম সেঞ্চুরি করেন কিংস ইলেভেন পঞ্জাবের হয়ে। সে দিন তাঁর স্ট্রাইক রেট ছিল ২০৯। বুধবার ২০৮।-ধারে ও ভারে সেই সেঞ্চুরি অনেক বড় হলেও এই সেঞ্চুরি তাঁর প্রত্যাবর্তনের পথে সেরা মাইলফলক। সেই জন্যই বোধহয় এতটা আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন তিনি। অভিনন্দনবার্তায় ভেসে বুধবার ফেসবুকে লেখেন, ‘‘আমার এই ইনিংসের জন্য যাঁরা অভিনন্দন জানিয়েছেন, প্রত্যেককে ধন্যবাদ।’’

টস জিতে ব্যাট করতে নেমে বাংলা এ দিন ঋত্বিক রায়চৌধুরী ও ঋদ্ধিকে ওপেন করতে পাঠায়। যাঁর বদলে ঋদ্ধি ওপেন করতে নামেন, সেই বিবেক সিংহ এ দিন ছ’নম্বরে নেমে ১৮ বলে ৪৯ রান করেন পাঁচটি চার ও তিনটি ছয় হাঁকিয়ে। অভিমন্যু ঈশ্বরন চার নম্বরে নেমে ২২ বলে ৩১ রান করেন। শেষ দুই ম্যাচে শ্রীবৎস ও ঋদ্ধিকে ওপেন করতে পাঠাবেন, ভাবছেন কোচ অরুণ।

এই ম্যাচ জিতে বাংলা গ্রুপে দু’নম্বরে উঠে এল পাঁচ ম্যাচে ১২ পয়েন্ট পেয়ে। ২০ পয়েন্ট পেয়ে শীর্ষে কর্নাটক। গ্রুপে বাংলার শেষ দুই ম্যাচ ছত্তীসগঢ় (বৃহস্পতিবার) ও ওড়িশার বিরুদ্ধে। দুই দলই ১২ পয়েন্ট পেয়ে ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলছে। অসম শেষ দুই ম্যাচ জিতলে বাংলার সুপার লিগে ওঠার আশা শেষ হয়ে যাবে। কারণ, গ্রুপ ম্যাচে অসম হারিয়েছে বাংলাকে। পয়েন্ট সমান হলে গ্রুপ ম্যাচের ফলই দেখা হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন