দু’মাস প্রস্তুতি নেওয়ার ফল পেয়েছি: ঝুলন

নতুন বছরে শহরে পা রাখলেন ঝুলন গোস্বামী ও তাঁর সতীর্থেরা। সঙ্গে নিয়ে ফিরলেন জাতীয় ওয়ান ডে লিগের ট্রফি। ভারতীয় বোর্ড অনুমোদিত মেয়েদের জাতীয় ওয়ান ডে লিগে এই প্রথম বার চ্যাম্পিয়ন হল বাংলা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ জানুয়ারি ২০১৯ ০৩:৪৮
Share:

ফেরা: জাতীয় ওয়ান ডে-তে চ্যাম্পিয়ন হয়ে ফিরলেন ঝুলনরা। মঙ্গলবার কলকাতা বিমানবন্দরে। নিজস্ব চিত্র

নতুন বছরে শহরে পা রাখলেন ঝুলন গোস্বামী ও তাঁর সতীর্থেরা। সঙ্গে নিয়ে ফিরলেন জাতীয় ওয়ান ডে লিগের ট্রফি। ভারতীয় বোর্ড অনুমোদিত মেয়েদের জাতীয় ওয়ান ডে লিগে এই প্রথম বার চ্যাম্পিয়ন হল বাংলা। ১৯৮৩ সালে প্রাক্তন অধিনায়ক লোপামুদ্রা ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে জাতীয় ওয়ান ডে জিতলেও তখন এই প্রতিযোগিতার আয়োজক ছিল ভারতীয় মহিলা ক্রিকেট সংস্থা। ২০০৭ থেকে এই প্রতিযোগিতা আয়োজন করে ভারতীয় বোর্ড। তার পরেই এই প্রথম সাফল্য। সুতরাং, ঝুলনের নেতৃত্বে ৩৫ বছরের খরা কাটিয়ে চ্যাম্পিয়ন বাংলা। কিন্তু এই জয়ের পিছনে কতটা পরিশ্রম লুকিয়ে রয়েছে, তা আনন্দবাজারকে জানালেন বাংলার অধিনায়ক।

Advertisement

প্রতিযোগিতা শুরু হওয়ার দুই মাস আগে থেকেই প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছিলেন বাংলার মেয়েরা। হয়তো এই দিনটির অপেক্ষায়। ভারতীয় বোর্ডের নতুন নিয়ম অনুযায়ী মেয়েদের ওয়ান ডে লিগ‌ ম্যাচের সংখ্যা বেড়েছে। প্রায় আটটি ম্যাচ খেলে কোয়ার্টার ফাইনালের রাস্তা পাকা করতে হচ্ছে প্রত্যেক দলকে। তাই বাংলার অধিনায়ক ঝুলন গোস্বামী ও দুই কোচ জয়ন্ত ঘোষদস্তিদার এবং ঋতুপর্ণা রায় মিলে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, দলকে আরও ফিট করে তোলার। সেই মতোই জুলাই মাস থেকে প্রাক-মরসুম প্রস্তুতি শুরু হয় ঝুলনদের। উদ্দেশ্য একটাই, আরও ফিটনেস বাড়াও। ‘‘ফিটনেস না থাকলে এক মাসের লম্বা প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা কঠিন। কোচেদের সঙ্গে এটাই আলোচনা করেছিলাম যে, ফিটনেসই বড় প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার রসদ। সেই মতোই ইয়ো ইয়ো টেস্ট হয়। মেয়েদের ফিটনেস কোন জায়গায় রয়েছে, তা পরীক্ষা করে নেওয়া হয়,’’ বলেন ঝুলন।

ফল কি পেলেন? ঝুলনের উত্তর, ‘‘আজ যে চ্যাম্পিয়নের ট্রফিটা তুলতে পেরেছি, তার অন্যতম কারণ দলের ফিটনেস। তাই তো এত দিন আগে থেকে প্রস্তুতি শুরু করা হয়েছিল। সব চেয়ে ভাল ব্যাপার, দলের একজনও ফাঁকি দেয়নি।’’

Advertisement

এর আগেও ঝুলন পাঁচ বার জাতীয় ওয়ান ডে লিগ জিতেছেন। কিন্তু বাংলার হয়ে নয়। এয়ার ইন্ডিয়ার হয়ে জিতেছিলেন কিংবদন্তি পেসার। বাংলার জার্সিতে প্রথম বার এই প্রতিযোগিতা জেতার স্বাদ যে আলাদা, তা নিজেই স্বীকার করে নিলেন ঝুলন। বলছেন, ‘‘যখন থেকে বাংলার হয়ে খেলা শুরু করেছিলাম, তখন থেকেই আমার স্বপ্ন ছিল, দলকে ট্রফি জেতাবো। ২০১৮ সালে বছরের শেষ দিন অবশেষে সেই স্বপ্নপূরণ হল। এই আনন্দ ভাষায় প্রকাশ করা যায় ‌না।’’

কিন্তু একটি প্রতিযোগিতা জিতেই স্বস্তি পেতে চান না। ধারাবাহিক পারফরম্যান্স চান অধিনায়ক। ‘‘এক বার জিতলে তো আর বড় দল হওয়া যায় না। এই পারফরম্যান্স ধরে রাখতেই হবে। না হলে এই পরিশ্রমের কোনও মানে থাকবে কি!’’ সাফ

বার্তা ঝুলনের।

ঝুলনের পাশাপাশি দীপ্তি শর্মার মতো তারকা রয়েছেন বাংলা দলে। এ বছর ভারতীয় দলের পেসার শুভলক্ষ্মীও বাংলার হয়ে খেলা শুরু করেছেন। ঝুলন জানিয়েছেন, দীপ্তি ও শুভলক্ষ্মী থাকায় অনেকটাই চাপ কমেছে দলের। তিনি বলেন, ‘‘ওদের অভিজ্ঞতা আমাদের দলকে আরও পরিণত করতে সাহায্য করেছে। দীপ্তি ও শুভ থাকায় অনেকটাই চাপ কমে গিয়েছে বাকিদের।’’

ঝুলনের চোখে বাংলার উঠতি তারকা কে? অধিনায়কের উত্তর, ‘‘প্রতিভার কোনও অভাব নেই। নেহা মাজি ভাল পারফর্ম করেছে। মন্দিরা (মহাপাত্র), তনুশ্রী (সরকার) প্রত্যেকেই অত্যন্ত দক্ষ। কিন্তু তাদেরও ধারাবাহিকতা প্রয়োজন। মনে রাখতে হবে একটি মরসুম ভাল খেলে নাম করা যায় না।’’

টানা এক মাস বাড়ির বাইরে থাকতে হয়েছে ভারতীয় পেসারকে। ১৩ জানুয়ারি নিউজিল্যান্ড সফরে উড়ে যাচ্ছেন তিনি। তার আগে এই ক’দিন বিশ্রাম চান ঝুলন। বলে দিলেন, ‘‘সামনেই নিউজিল্যান্ড সফর। তার আগে কয়েক দিন বাড়িতেই থাকতে চাই।’’ ঝুলন কলকাতায় এলেও শুভলক্ষ্মী, দীপ্তি ও তনুশ্রী সরকার উড়ে গিয়েছেন চ্যালেঞ্জার ট্রফি খেলতে। ১১ জানুয়ারি তাঁরা ফেরার পরে ক্রিকেটারদের নিয়ে একটি নৈশভোজের আয়োজন

করবে সিএবি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন