জয়ের পিছনে ভারতের সর্বকালের সেরা বোলিং, বলছেন ২০০১-এর নায়ক হরভজন

প্রায় আঠারো বছর আগে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে অসাধারণ সিরিজ জয়ে অন্যতম নায়ক ছিলেন তিনি। ২০০১ সালে ভারতের মাটিতে স্টিভ ওয়ের ‘অশ্বমেধের ঘোড়া’ থামিয়ে দিয়েছিলেন ইডেনে হ্যাটট্রিক-সহ তিন টেস্টে ৩২ উইকেট নিয়ে। স্বাভাবিক ভাবেই সিরিজের সেরা হয়েছিলেন সেই অফস্পিনার। সোমবার বিরাট কোহালিদের ঐতিহাসিক সিরিজ জয় দেখার পরে মুম্বইয়ের সোনি পিকচার্স নেটওয়ার্কসের স্টুডিয়ো থেকে আনন্দবাজারকে একান্ত সাক্ষাৎকার দিলেন হরভজন সিংহ। সোমবার বিরাট কোহালিদের ঐতিহাসিক সিরিজ জয় দেখার পরে মুম্বইয়ের সোনি পিকচার্স নেটওয়ার্কসের স্টুডিয়ো থেকে আনন্দবাজারকে একান্ত সাক্ষাৎকার দিলেন হরভজন সিংহ। 

Advertisement

কৌশিক দাশ

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ জানুয়ারি ২০১৯ ০৪:৪৭
Share:

হরভজন সিংহ

প্রশ্ন: বিরাট কোহালিদের ইতিহাস গড়া দেখতে দেখতে কী মনে হচ্ছিল?

Advertisement

হরভজন: কোহালিরা আমাদের গর্ব করার মতো একটা মুহূর্ত উপহার দিল। আজ ভারতীয় ক্রিকেটের উজ্জ্বল একটা দিন। দেশবাসীর গর্ব করার দিন। আর পাশাপাশি বিরাটদের উৎসবেরও। ওদের অভিনন্দন।

প্র: বিদেশে সিরিজ জয়ের পিছনে সব চেয়ে বড় কারণ কী বলে মনে হয়?

Advertisement

হরভজন: আমি দুটো কারণের কথা বলব। ব্যাটসম্যানরা তো রান পেয়েইছে। চেতেশ্বর পূজারা তো ভারতীয় ব্যাটিংয়ের মেরুদণ্ড হয়ে দাঁড়িয়েছিল। কিন্তু বোলারদের কথা বলতেই হবে। বোলাররা কুড়িটা উইকেট না পেলে ম্যাচ জেতা যায় না। আরও একটা কারণ কিন্তু আছে। যেটা হল, ভারতীয় দলের টিম গেম। সবারই কিছু না কিছু ভূমিকা আছে এই সিরিজ জয়ে। অতীতে আমরা দেখেছি, ম্যাচে দু’একটা পারফরম্যান্স পাওয়া যেত। ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সে ম্যাচ জেতা যায়। কিন্তু তাতে সিরিজ জেতা যায় না। এখানে দল হিসেবে খেলেই জিতল ভারত। এটা একটা বড় প্রাপ্তি।

প্র: ভারতীয় বোলিংকে কী বলবেন? দেশের সর্বকালের অন্যতম সেরা?

হরভজন: আমি কিন্তু অন্যতম সেরা বলব না। আমার কাছে এটাই দেশের সর্বকালের সেরা বোলিং আক্রমণ।

প্র: কেন বলছেন?

হরভজন: আমাদের পেস শক্তি। আগে আমরা দেখতাম, দলে দু’জন মতো ভাল বোলার থাকত। তারা উইকেট পেত। কিন্তু তিন নম্বর ফাস্ট বোলার অত ভাল হত না। ফলে সেই ঝাঁঝটা হারিয়ে যেত। আর এখন আমাদের তিন পেসারই দুর্দান্ত। যশপ্রীত বুমরা তো আছেই। অবিশ্বাস্য বোলিং করছে। পাশাপাশি ইশান্ত শর্মা, মহম্মদ শামিদের কথাও বলতে হবে। যে কেউ যে কোনও সময় উইকেট নেওয়ার ক্ষমতা রাখে। এ ছাড়া ভারতের রিজার্ভ বেঞ্চের শক্তির কথাও ভাবুন। সেখানে যারা বসে আছে, তারাও কারও থেকে কম নয়। এতে দলের মধ্যে সুস্থ প্রতিযোগিতা বাড়ে। সবাই নিজেকে নিংড়ে দিতে চায়। এটাই বিদেশে ভারতকে জিততে সাহায্য করবে।

প্র: টেস্টে কুলদীপ যাদবের বোলিং কেমন লাগল?

হরভজন: দুর্দান্ত। যেটুকু সুযোগ পেয়েছে, কাজে লাগিয়েছে। সিডনি টেস্টে প্রথম ইনিংসে পাঁচ উইকেট নিয়েছে। আমি নিশ্চিত, শেষ দিন খেলা হলে ও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠত। ভারতও হয়তো ৩-১ জিতত।

প্র: টেস্টে কি কুলদীপ ক্রমে পরিণত হয়ে উঠছেন?

হরভজন: অবশ্যই। কুলদীপ টেস্টেও একা ম্যাচ জিতিয়ে দিতে পারে। আমি তো বলব, কুলদীপ টেস্টে ভারতের এক নম্বর স্পিনার হয়ে ওঠার ক্ষমতা রাখে। ভারতের মাটিতে তো বটেই, বিদেশেও। যদি এক জন স্পিনার খেলাতে হয়, তা হলে আমার পছন্দ কুলদীপই। ওর আক্রমণাত্মক বোলিং একটা বড় অস্ত্র। দ্বিতীয় স্পিনার হিসেবে রবীন্দ্র জাডেজা খেলতে পারে। জাডেজা একদিক দিয়ে রান আটকে রাখতে পারে। ওদের জুটিটা খুব ভাল হবে।

প্র: দুই নতুন মুখ মায়াঙ্ক আগরওয়াল ও হনুমা বিহারীকে কেমন লাগল?

হরভজন: ঘরোয়া ক্রিকেটের ফর্ম আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ধরে রাখতে পেরেছে মায়াঙ্ক। নিজের খেলায় কোনও পরিবর্তন আনেনি। কেএল রাহুল, মুরলী বিজয় টানা ব্যর্থ হওয়ার পরে ওপেনিংয়ে বদল আনা জরুরি ছিল। মায়াঙ্ক শুরুতে রান করে দেওয়ার পরে ছবিটাই বদলে যায়। হনুমা হয়তো বড় কিছু করে উঠতে পারেনি এখনও, কিন্তু টিম ম্যানেজমেন্টের ওর ওপর ভরসা আছে। যে জন্য বিরাটরা ওকে দলের সঙ্গে রাখছে।

প্র: এক বার অতীতে ফেরা যাক। সেই ২০০১ সিরিজে আপনি একাই শেষ করে দিয়েছিলেন অস্ট্রেলিয়াকে। ঐতিহাসিক এই দুই সিরিজ জয়ের তুলনা কী ভাবে করবেন?

হরভজন: (একটু হেসে) আমি কোনও তুলনা করতে চাই না। শুধু এটুকু বলব, যে কোনও সিরিজ জয়ের গুরুত্বই অসীম। তা সে দেশে হোক কী বিদেশে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন