‘এ বার দেখতে চাই শামি-বুমরার যুগলবন্দি’

টেস্টে এর আগে দু’বার ৯২ রানে আউট হয়েছেন ঋষভ। তাই শুক্রবার ১৫০তম ওভারে লাবুশানের প্রথম বলে দু’রান নিয়ে যখন ৯৬ রানে পৌঁছালেন ঋষভ, তখন মনে হয়েছিল এ বার সিঙ্গলস নিয়ে শতরান করে ফেলবেন।

Advertisement

সম্বরণ বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০৫ জানুয়ারি ২০১৯ ০৩:৪৫
Share:

মহম্মদ শামি আনবেন তাঁর মারণাস্ত্র রিভার্স সুইং। সঙ্গে বুমরার কিছু খেলতে না পারার মতো ডেলিভারি। ছবি: পিটিআই।

ছোটবেলায় আমাদের কোচেরা বলতেন, নব্বইয়ের ঘরে পৌঁছে গেলে সিঙ্গলস নিয়ে আগে শতরান করতে হয়। কিন্তু দিল্লি ঘরানার ব্যাটসম্যান ঋষভ পন্থ একদমই আলাদা। শুক্রবার সিডনির মাঠে সফররত ভারতীয় দলের হয়ে প্রথম উইকেটকিপার হিসেবে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে টেস্ট শতরান (১৫৯ ন.আ) করলেন তিনি। যা করতে গিয়ে আমাদের সময়কার সেই ধারাপাত মেনে চলেননি ঋষভ।

Advertisement

টেস্টে এর আগে দু’বার ৯২ রানে আউট হয়েছেন ঋষভ। তাই শুক্রবার ১৫০তম ওভারে লাবুশানের প্রথম বলে দু’রান নিয়ে যখন ৯৬ রানে পৌঁছালেন ঋষভ, তখন মনে হয়েছিল এ বার সিঙ্গলস নিয়ে শতরান করে ফেলবেন। কিন্তু বীরেন্দ্র সহবাগের রাজ্যের ছেলে তার পরের বলেই যে ভাবে লাবুশানেকে আগ্রাসী মেজাজে মিডউইকেট অঞ্চল দিয়ে মাঠের বাইরে পাঠিয়ে শতরান পূর্ণ করলেন, তা মুগ্ধ হয়ে দেখছিলাম। আসলে দিল্লির ক্রিকেটার ঋষভের সব চেয়ে বড় সম্পদ হল সাহস। তার উপর ও শট খেলতে ভালবাসে। তাই টেক্সট বই নির্ভর ইনিংস ওর কাছ থেকে মেলে না।

এ দিন অস্ট্রেলিয়ার বোলারদের বিরুদ্ধে সব রকমের শটই খেলতে দেখলাম ঋষভকে। কাট, পুল, কভার ড্রাইভ, ফ্লিক, সুইপ, রিভার্স সুইপ সব রয়েছে ওঁর অপরাজিত ১৫৯ রানের ইনিংসে। তবে চেতেশ্বর পূজারা (১৯৩) যতক্ষণ ব্যাট করছিলেন, ততক্ষণ ঋষভ সংযত মেজাজেই খেলছিলেন। কিন্তু পূজারা আউট হতেই হাত খুলে খেলতে শুরু করেন ঋষভ। একটি মরসুমে ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার মাঠে টেস্ট সেঞ্চুরি করে নিজেকে এই মুহূর্তে অন্য উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছেন ঋষভ। তবে অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিংয়ের সময় তৃতীয় ওভারে মহম্মদ শামির বলে শূন্য রানে থাকা উসমান খোয়াজার সহজ ক্যাচ ঋষভকে ফেলতে দেখলাম। ওই সময় ঋষভ ক্যাচটা ধরতে পারলে নাইটওয়াচম্যান নামাত অস্ট্রেলিয়া। হয়তো, দিনের শেষে দুই উইকেট চলে যেতেই পারত নেথান লায়নদের।

Advertisement

আরও পড়ুন: জীবনযুদ্ধে জয়ী ত্রয়ীর হাতে তৈরি বিজয়মঞ্চ

নব্বইয়ের ঘরে গিয়ে ঋষভ শতরান পেলেও এ দিন দ্বিশতরানের দোরগোড়া থেকে ফিরে এলেন চেতেশ্বর পূজারা। তবে আমার মতে, এ বারের অস্ট্রেলিয়া সফরে ভারতীয় ব্যাটিংয়ের মেরুদণ্ড হলেন পূজারা। এর আগের অস্ট্রেলিয়া সফরে যে সমস্যা হয়েছিল, এ বার তা পুরোপুরি শুধরে ফেলেছেন তিনি। শরীর বলের কাছে নিয়ে গিয়ে খেলছেন।

শুক্রবার দিনের সেরা শটটা খেলেছেন রবীন্দ্র জাডেজা। প্যাট কামিন্সকে যে ভাবে লং অনের উপর দিয়ে মাঠের বাইরে ফেললেন তা ভিভ রিচার্ডসকে মনে করায়। হেজলউডকেও যে ভাবে পরপর চারটে চার মারলেন তাও দেখার মতো।

আরও পড়ুন: দ্রাবিড়কে যদি দেওয়াল বলা হয়, পূজারার কী নাম দেব!

এই সিরিজে অস্ট্রেলিয়া বোলারদের দেখে আমার মানসিক ও শারীরিক ভাবে ক্লান্ত লাগছে। ওঁরা কিন্তু পিচ থেকে সুইং আদায় করতে পারছেন না। অনেকেই বলছেন এই অস্ট্রেলিয়া অনভিজ্ঞ দল। কিন্তু মনে রাখতে হবে ভারতীয়দেরও পাঁচ জন রয়েছেন, যাঁরা এখনও দশটার বেশি টেস্ট খেলেননি।

শনিবার ম্যাচের তৃতীয় দিনে বল পুরনো হলেই মহম্মদ শামি আনবেন তাঁর মারণাস্ত্র রিভার্স সুইং। সঙ্গে বুমরার কিছু খেলতে না পারার মতো ডেলিভারি। শামি-বুমরার সেই যুগলবন্দি দেখতে চাই আজ। তার উপর যদি বল ঘুরতে শুরু করে, তা হলে কুলদীপের গুগলি। কাজেই ‘ক্লোজ-ইনে’ ক্যাচ ছাড়া যাবে না কিছুতেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন