দুরন্ত: হ্যান্ডসকম্বের দেওয়া দুরন্ত ক্যাচ নিচ্ছেন বিরাট। শুক্রবার। টুইটার
পার্থের উইকেট নিয়ে কয়েক দিন ধরে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচুর চর্চা হয়েছে। যাকে বলে ভাইরাল হয়ে যাওয়া। অস্ট্রেলিয়া থেকে আমার এক বন্ধু পার্থের পিচের যে ছবি পাঠিয়েছিল, তাতে কোনটা আউটফিল্ড, কোনটা উইকেট আলাদা করে বোঝার উপায় ছিল না। তাতেই কি ধোঁকা খেয়ে গেলেন বিরাট কোহালিরা?
টস জিতে অস্ট্রেলিয়ার আগে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেওয়া দেখে এই প্রশ্নটা মনে আসাই স্বাভাবিক। টিম পেনরা বোধহয় জানতেন, পিচটা নিয়ে যে রকম প্রচার করা হচ্ছিল, আসলে তা সে রকম নয়।
পার্থের উইকেট সাধারণত পেসারদের স্বর্গ হয়। ১৯৭১-এ বিশ্ব একাদশ বনাম অস্ট্রেলিয়ার টেস্ট ম্যাচে এই পার্থেই ডেনিস লিলির সেই আট উইকেট নেওয়ার ঘটনা মনে পড়ছে। সেই উইকেটের সঙ্গে চলতি টেস্টের উইকেটের যে আকাশ-পাতাল তফাত, তা চলতি টেস্টের প্রতি মুহূর্তে বোঝা যাচ্ছে।
এটা অনেকটা আমাদের রাজকোটের উইকেটের মতো। ওপর থেকে উইকেটে ঘাস আছে দেখে মনে হতে পারে, এখানে পেসাররা সাহায্য পাবে। কিন্তু আদতে দেখা যায়, তা পাটা। চলতি টেস্টেও সে রকম হয়েছে বলে মনে হচ্ছে। চার পেসারে খেলতে গিয়ে কোনও বিশেষজ্ঞ স্পিনার নিয়ে নামেননি বিরাটরা। দুই পার্ট টাইম স্পিনার হনুমা বিহারী ও মুরলী বিজয়কে দিয়ে কাজ চালাতে হচ্ছে। তার ওপর যশপ্রীত বুমরা বাদে অন্যান্য পেসারদের বোলিং গড়পড়তা। তাই অস্ট্রেলিয়ার স্কোর তিনশোর দিকে যাচ্ছে। যা ওরা পেরোলে চাপে পড়ে যেতে পারেন বিরাটরা। তাঁদের তো চতুর্থ ইনিংসে ব্যাট করতে হবে।
এই উইকেটের চরিত্র যে রকম দ্রুত পাল্টে যাচ্ছে, শেষ দিকে না মনে হয়, দলে একজন বিশেষজ্ঞ স্পিনারের প্রয়োজন ছিল। দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম দিনের শুরু থেকে ভারতীয় পেসারদের একটাও বাউন্সার না দিতে দেখে বেশ অবাক হলাম। প্রথম বাউন্সারটা উমেশ যাদব দেন ৩২তম ওভারে! ততক্ষণ পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়ার দুই ওপেনার পা বাড়িয়ে খেলছিলেন। কিন্তু উমেশের ওই বাউন্সারের পর থেকে লক্ষ্য করলাম, ওঁদের ‘ফুট মুভমেন্টে’ গোলমাল হচ্ছে। প্রথম উইকেটটাও পড়ে ওই সময়েই, ৩৬ তম ওভারে। চায়ের বিরতির পরে ‘অফ দ্য উইকেট’ বল নড়াচড়া শুরু হয়। দ্বিতীয় নতুন বলে তো বুমরাকে খেলতেই পারছিলেন না ব্যাটসম্যানরা।
সঙ্গে যদি কুলদীপকে পাওয়া যেত, তা হলে ওরা আরও চাপে পড়ে যেত হয়তো। কারণ, কুলদীপ হলেন একমাত্র বোলার, যাঁর বল অস্ট্রেলিয়া এখনও ঠিকমতো বুঝে উঠতেই পারেননি। শুক্রবার টিভি ধারাভাষ্যে শুনলাম, আগের টেস্টে ইশান্ত শর্মা ১৬টা নো বল করেও নাকি পার পেয়ে যান, আম্পায়ার ধরতেই পারেননি। তাই মনে হল ইশান্ত এ দিন খুব সাবধানে বল করছিলেন।
দিনের সেরা ঘটনা স্লিপে বিরাটের অসাধারণ ক্যাচ। যা নিয়ে হ্যান্ডসকম্বকে ফেরান তিনি। এই সব ক্যাচেই বোঝা যায় ফিটনেসের কোন জায়গায় আছেন ভারত অধিনায়ক তবে স্টাম্পের পিছনে শন মার্শের সহজ ক্যাচ ফেলে দিয়ে ঋষভ পন্থও ফের বোঝালেন, এখনও তৈরি হতে হবে তাঁকে।