দাদাগিরি

অস্ট্রেলিয়ায় নিশ্চয়ই আগের ছন্দে দেখা যাবে বোলারদের

নিউজিল্যান্ড-পর্ব শেষ হল ভারতের। এখন থেকে ধোনিদের বাকি সব ম্যাচ অস্ট্রেলিয়ায়। অবশ্য নকআউটে জেতা-হারার উপর সব নির্ভর করবে। তবে টানা তিন মাস অস্ট্রেলিয়ায় কাটানোর পর অন্য একটা দেশে পা রাখতে পেরে মানসিক ভাবে ভারতীয় ক্রিকেটাররা নিশ্চয়ই তরতাজা হয়ে উঠতে পেরেছে। বিশেষ করে দেশটা যেখানে নিউজিল্যান্ড!

Advertisement

সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১৬ মার্চ ২০১৫ ০৩:০১
Share:

নিউজিল্যান্ড-পর্ব শেষ হল ভারতের। এখন থেকে ধোনিদের বাকি সব ম্যাচ অস্ট্রেলিয়ায়। অবশ্য নকআউটে জেতা-হারার উপর সব নির্ভর করবে। তবে টানা তিন মাস অস্ট্রেলিয়ায় কাটানোর পর অন্য একটা দেশে পা রাখতে পেরে মানসিক ভাবে ভারতীয় ক্রিকেটাররা নিশ্চয়ই তরতাজা হয়ে উঠতে পেরেছে। বিশেষ করে দেশটা যেখানে নিউজিল্যান্ড!

Advertisement

তাসমান সমুদ্র পেরিয়ে এ দিকটায় না এলে বোঝা যায় না পৃথিবীতে এত অপূর্ব জায়গাও আছে! এই লেখা যেখানে বসে লিখছি সেই অকল্যান্ড অসম্ভব সুন্দর শহর। তার উপর বাইরে ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি। অসাধারণ! ক্রিকেটার হিসেবে নিউজিল্যান্ডে খুব বেশি আসা হয়নি বলেই এ বার দেশটা দেখার সময় বার করেছি। নিউজিল্যান্ডের উত্তর দ্বীপের ওয়াইকাটো নদীর দু’পাশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য পৃথিবী বিখ্যাত। সেই ওয়াইকাটোয় দড়ি থেকে ঝুলে বেড়ানোর অ্যাডভেঞ্চার-সহ দুরন্ত সব অভিজ্ঞতা হল। ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বাভাস থাকায় সমুদ্রে তেমন বোট বা সাঁতারুদের ভিড় ছিল না। নির্জন চোখ জুড়ানো বিচ আর সামনে যত দূর চোখ যায় সমুদ্রের স্বচ্ছ নীল জল।

সব মিলিয়ে ছবিটা যতটা মন ভাল করা, ততটাই ঝকঝকে! অনেকটা এ বারের বিশ্বকাপে ভারতীয় টিমের পারফরম্যান্সের মতো! ইডেন পার্কে জিম্বাবোয়ের বিরুদ্ধে আরও একটা ভাল ম্যাচ খেলল ভারত। ভারতীয় টিমকে জিম্বাবোয়ে চ্যালেঞ্জ করতে পারে, কেউই ভাবেনি। কিন্তু ব্রেন্ডন টেলরের অসাধারণ ইনিংস আর এই আবহাওয়ায় নতুন সাদা বলের মুভমেন্ট— দুইয়ের চাপে ভারত সামান্য সমস্যায় পড়েছিল। দেশের হয়ে জীবনের শেষ ইনিংসে ব্রেন্ডন যে ব্যাটিংটা করল তাতে ও নিজেও নিশ্চয়ই সন্তুষ্ট। বিশ্বকাপে আমার দেখা সেরা ইনিংসগুলোর একটা। আমি অ্যান্ডি ফ্লাওয়ারের সঙ্গে খেলেছি। অ্যান্ডি-ই জিম্বাবোয়ের সর্বকালের সেরা ব্যাটসম্যান। তবে ব্রেন্ডনও পিছিয়ে নেই।

Advertisement

ব্যাট করতে নেমে শুরুতে চাপে পড়া সত্ত্বেও শেষ পর্যন্ত ম্যাচটা জিতে ভারত আবার প্রমাণ করল দলটা কতটা জমাট বেঁধে গিয়েছে। ভারতের দরকার ছিল একটা বড় পার্টনারশিপ। সেটা এল ধোনি-রায়নার ব্যাটে। টুর্নামেন্টের বিজনেস এন্ড শুরুর আগে এই পার্টনারশিপটা রায়না আর ধোনির আত্মবিশ্বাস আরও বাড়িয়ে দেবে। জিম্বাবোয়ে বোলিংয়ের সেই গতি ছিল না যে, বল পুরনো হওয়ার পর এই দু’জনকে সমস্যায় ফেলবে। দুু’জনে খুব বুদ্ধি করে ব্যাটটাও করল। ধোনি একটা দিক ধরে রেখে অন্য দিকে রায়নাকে খোলা মনে মারতে দিল। রান রেট ৯-এ উঠে যাওয়ায় কাউকে না কাউকে ঝুঁকি নিতেই হত। তালমিল এত ভাল হল যে মনেই হল না আস্কিং রেট নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে।

একদিনের ক্রিকেটে ভারতীয় ব্যাটিংয়ের এই দিকটা সবচেয়ে ভাল লাগে। রান তাড়া করতে নেমে সব সময় ইতিবাচক থাকা। উইকেট পড়ে গেলেও রক্ষণাত্মক হয়ে পড়ে না। যেটা টিমের ব্যাটিং শক্তি সম্পর্কে অনেক কিছু বলে দেয়। কৃতিত্বটা ব্যাটসম্যানদেরই প্রাপ্য।

শনিবার ভারতের পারফরম্যান্সে যেটুকু খামতি ছিল সেটা বোলিংয়ে। ব্রেন্ডন বাদে জিম্বাবোয়ে ব্যাটিংয়ের মান ভাল নয় বলে এ যাত্রা বড় লোকসান হল না। তবে অস্ট্রেলিয়ার তুলনায় নিউজিল্যান্ডে ভারতীয় বোলাররা কিন্তু বেশি রান দিয়েছে। কারণ অতিরিক্ত শর্ট পিচ করা। এখানকার পিচে বরং বলকে বেশি সিম করানোর চেষ্টা করা উচিত ছিল। কারণ অস্ট্রেলিয়ার চেয়ে এখানে সুইং হয় বেশি। পিচগুলোও স্লো। তবে ভারতীয় দল আবার অস্ট্রেলিয়া ফিরছে। আশা করা যায় এখনও পর্যন্ত টুর্নামেন্টে যে ভাবে খেলেছে সেই দুরন্ত ফর্মটা ধোনিরা ধরে রাখবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন