মহারণের মহড়ায় মহাশক্তি

ছন্দ আর বৈচিত্রে সামান্য এগিয়ে ব্রাজিল

অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপে ব্রাজিল ও জার্মানি দু’দলেরই খেলা দেখেছি। সাধারণ ক্রীড়াপ্রেমীদের কাছে ব্রাজিলের খেলা অনেক বেশি আকর্ষণীয়।

Advertisement

সুব্রত ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ২১ অক্টোবর ২০১৭ ০৪:৪৬
Share:

প্রস্তুতি: যুবভারতীতে অনুশীলন। ব্রাজিলের লুকাস হল্টার। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক।

শিল্প বনাম গতি।

Advertisement

ব্রাজিল মানেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে ছন্দময় ফুটবল। দুর্ধর্ষ স্কিল।

জার্মানির অস্ত্র গতি, শৃঙ্খলা, হার না মানসিকতা এবং অঙ্ক কষে খেলা।

Advertisement

অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপে ব্রাজিল ও জার্মানি দু’দলেরই খেলা দেখেছি। সাধারণ ক্রীড়াপ্রেমীদের কাছে ব্রাজিলের খেলা অনেক বেশি আকর্ষণীয়। কারণ, পাওলো হেনরিক সাম্পাইও ফিলফো (পাওলিনহো), আলেন সৌজা-দের খেলার মধ্যে খুঁজে পাওয়া যায় রিভাল্ডো, কাকা, রোনাল্ডিনহো-দের সেই ছন্দ।

জার্মানির খেলা দেখে কিন্তু তৃপ্তি পাওয়া যায় না। মনে হয় যেন, এগারোটা রোবট নব্বই মিনিট বল নিয়ে দৌড়চ্ছে। আগে থেকেই প্রোগ্রামিং করা রয়েছে, কে কতটা দৌড়বো। কখন সেন্টার করতে হবে। নিজেদের মধ্যে কটা পাস খেলতে হবে। ছন্দের মাদকতা বা সৃষ্টির সেই উন্মাদনা নেই।

বিশ্বফুটবলের আঁতুরঘর ব্রাজিল। তার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে, ওরা ঘরানা বদল করার চেষ্টা কখনও করেনি। পরিস্থিতি অনুযায়ী মাঝেমধ্যে হয়তো স্ট্র্যাটেজি একটু অদলবদল করেছে। কিন্তু মূল ধারাটা বজায় রেখেছে।

তবে জোয়াকিম লো দায়িত্ব নিয়ে জার্মানির সিনিয়র দলের খেলার ধরন অনেকটাই বদলে দিয়েছেন। থোমাস মুলার-রা এখন অনেক বেশি পাস নিজেদের মধ্যে খেলে। বল ধরে খেলার চেষ্টা করে। কিন্তু অনূর্ধ্ব-১৭ জার্মানি পুরনো স্ট্র্যাটেজিতেই খেলছে। অর্থাৎ, তিন চারটে পাস খেলে বিপক্ষের বক্সে কাছে পৌঁছে গোল করা। ব্রাজিলের মতো খেলতে খেলতে হঠাৎ করে স্ট্র্যাটেজি বদলে ফেরার দক্ষতা ওদের নেই।

উত্তর কোরিয়া বনাম ব্রাজিল ম্যাচটার কথাই মনে করার চেষ্টা করুন। প্রথমার্ধে লিঙ্কন ডস স্যান্টোস-রা প্রতিপক্ষের গতির সঙ্গে লড়াইয়ে বারবার পিছিয়ে পড়ছিল। দ্বিতীয়ার্ধে কিন্তু ছবিটা বদলে গিয়েছিল। কারণ, নিজেদের মধ্যে বেশি পাস খেলে ম্যাচের গতিটা কমিয়ে দিয়েছিল ওরা। উত্তর কোরিয়ার ফুটবলাররা স্বাভাবিক খেলা খেলতে না পেরে ম্যাচ থেকেই হারিয়ে যায়। এর পরে আর জিততে সমস্যা হয়নি ব্রাজিলের। ব্রাজিলের দলটা প্রয়োজনে যেমন আক্রমণে ঝড় তুলতে পারে, তেমন অতিরক্ষণাত্মক খেলার ক্ষমতাও রাখে। জার্মানির খেলায় এই বৈচিত্র নেই। যে কারণে ইরানের বিরুদ্ধে চার গোলে বিপর্যয় এড়াতে পারেনি ইয়ান ফিটো আর্প-রা। ব্রাজিলের এই দলটাই একটাই দুর্বলতা এখনও পর্যন্ত আমার চোখে পড়েছে। সেটা হচ্ছে, পাল্টা আক্রমণে উঠতে না পারা। আসলে এই দলটায় রবার্তো কার্লোস, কাফুর মতো কেউ নেই, যারা প্রতিপক্ষের ফুটবলারদের করা সেন্টার হেড করে মাঝমাঠে পাঠিয়ে দেবে। সেই বল নিয়ে আক্রমণে উঠবে ফরোয়ার্ডরা। এই মুহূর্তে ব্রাজিল যে রকম ছন্দে আছে, তাতে খুব একটা চিন্তিত হওয়ার কারণ নেই কার্লোস আমাদেউ-এর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন