শাহরুখকে দেখলে ইডেনে টেস্ট না খেলার দুঃখ হয় লারার

ক্রিকেটার হিসেবে ইডেনে কোনও টেস্ট খেলা হয়নি তাঁর। তাই আজও আক্ষেপ করেন ক্যারিবিয়ান কিংবদন্তি ব্রায়ান চার্লস লারা।

Advertisement

দেবাঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০৩ নভেম্বর ২০১৮ ০৪:৪২
Share:

অতিথি: জগমোহন ডালমিয়া স্মরণ সভায় লারা।—ছবি পিটিআই

ক্রিকেটার হিসেবে ইডেনে কোনও টেস্ট খেলা হয়নি তাঁর। তাই আজও আক্ষেপ করেন ক্যারিবিয়ান কিংবদন্তি ব্রায়ান চার্লস লারা। শুক্রবার সন্ধেয় তাঁর মনের সেই দুঃখ উগরে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘প্রিয় ক্রিকেটার’ বলছিলেন, ‘‘ইডেনে কোনও টেস্ট খেলতে পারিনি। ভাবলে লজ্জা লাগে। সব চেয়ে বড় হতাশা।’’ সঙ্গে যোগ করেন, ‘‘শেষ বার যখন ইডেনে এসেছিলাম তখন শাহরুখ খান হাজির ছিলেন। ত্রিনিদাদের বসে আইপিএলে যখন এই মাঠে শাহরুখকে উৎসব করতে দেখি তখন দুঃখটা বাড়ে।’’

Advertisement

লারার পাশেই বসে ছিলেন ক্যারিবিয়ান ক্রিকেটের আর এক তারকা কার্ল হুপার। তিনি আবার জানান, পঁচিশ বছর আগে এক নভেম্বর মাসের রাতে ইডেনে অনিল কুম্বলেকে সে ভাবে গুরুত্ব না দেওয়ার ফল কী ভাবে ভুগতে হয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজকে। হিরো কাপ ফাইনালের সেই ম্যাচে ১২ রানে ছয় উইকেট পেয়েছিলেন কুম্বলে। কাপটাও উঠেছিল তৎকালীন ভারত অধিনায়ক আজহারউদ্দিনের হাতে। জানিয়ে হুপার বলেন, ‘‘বিরাট কোহালিকে দেখলে ওর আক্রমণাত্মক মেজাজ টের পাবেন। কিন্তু কুম্বলেকে দেখলে বুঝতেই পারবেন না ওঁর মনের ভিতর কী চলছে।’’

মহম্মদ আজহারউদ্দিন শোনাচ্ছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ‘অন্য রকম’ বলের জন্য কেন কপিলের দু’ওভার বাকি থাকতেও অজয় জাডেজার পরামর্শে সচিন তেন্ডুলকরকে সেই ঐতিহাসিক ওভার করতে ডেকেছিলেন। যা শুনে মঞ্চে বসেই স্মৃতি রোমন্থনে ডুব মারলেন রবিবার ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে টি টোয়েন্টি ম্যাচের ভারত অধিনায়ক রোহিত শর্মা। বললেন, ‘‘তখন বয়স মোটে ছয়। তবে শেষ ওভারে সচিনের বল করে জেতানোর পড়ে উৎসবটা মনে আছে।’’ এ রকম মুঠো মুঠো নস্ট্যালজিয়াকে সঙ্গী করেই শুক্রবার সন্ধেয় পালিত হল ইডেনে প্রথম নৈশালোকে ভারতের হিরো কাপ জয়ের পঁচিশ বছর। নিখাদ ক্রিকেট আড্ডায় উঠে এল সেমিফাইনাল ও ফাইনাল ম্যাচের পরে ইডেনে সে দিন হাজির এক লক্ষ দর্শকের কাগজের মশাল হাতে দাঁড়িয়ে পড়া। চলে এল খেলার মাঝপথে গন্ধগোকুল ঢুকে পড়ার প্রসঙ্গ।’’ ফাইনালের নায়ক অনিল কুম্বলেও দেখা দিলেন পর্দায়। বললেন, ‘‘মাঠে শিশির পড়ছিল খুব। তাই বল গ্রিপ করতে পারছিলাম না। তবে একটা বল এত জোরে পিছলে যায় যে উইনস্টন বেঞ্চামিন ব্যাট নামাতে পারেনি।’’

Advertisement

সিএবি প্রেসিডেন্ট সৌরভ শোনান ক্লাব হাউসের একতলায় বসে তাঁর সেমিফাইনাল, ফাইনাল ম্যাচ দেখে আনন্দে মেতে ওঠার গল্প।

আরও পড়ুন: নিজেই সরে যাক ধোনি, ঋষভের পক্ষে আজহার

এ দিন একই সঙ্গে সিএবি আয়োজন করেছিল জগমোহন ডালমিয়া স্মারক বক্তৃতারও। যা দিতে সুদূর দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে উড়ে এসেছিলেন প্রাক্তন দক্ষিণ আফ্রিকা অধিনায়ক গ্রেম স্মিথ। গত বছর এই স্মারক বক্তৃতা অনুষ্ঠিত হয়েছিল কলকাতার এক অভিজাত হোটেলে। এ বার ইডেনে খোলা আকাশের নিচেই আয়োজন করা হয়েছিল একই সঙ্গে এই দুই অনুষ্ঠানের। সন্ধেবেলা বৃষ্টি আসায় অনুষ্ঠান শুরু হতে কিছুটা দেরি হয়। রোহিত এলেও, ভারতীয় দলের কেউ হাজির ছিলেন না। বৃহস্পতিবার ম্যাচ খেলে ক্লান্ত থাকায় হোটেলেই থেকে গিয়েছিলেন ভারতীয় ক্রিকেটাররা। স্মারক বক্তৃতায় প্রাক্তন দক্ষিণ আফ্রিকা অধিনায়ক বলছিলেন, জগমোহন ডালমিয়ার সময় বর্ণবিদ্বেষ সংক্রান্ত সঙ্কট কাটিয়ে ইডেনে তাঁর দেশের বিশ্ব ক্রিকেটের মূল স্রোতে ফেরার কথা। স্মিথের বক্তৃতায় এসেছে ভারতীয় ক্রিকেট ও তাঁর অধিনায়ক বিরাট কোহালির প্রসঙ্গ। যে সম্পর্কে স্মিথ বলেন, ‘‘বিশ্ব ক্রিকেটে এখন তারকার অভাব। ইংল্যান্ডে দু’একজন রয়েছে। ভারতে যেমন বিরাট কোহালি। টেস্ট ক্রিকেটকে ভালবেসে সমান তালে রান করে যাচ্ছে বিরাট। আইপিএলের দেশে তাই টেস্ট ক্রিকেট গুরুত্ব হারাচ্ছে না। মহাতারকা বিরাট এ ভাবে টেস্ট ক্রিকেটকে কাঁধে নিয়ে এগোলে পাঁচ দিনের ক্রিকেট বেঁচে থাকবে।’’

স্মিথ বলে যান, ‘‘ভারতীয় ক্রিকেটে সিমাররাও এখন নজর কাড়ছে। দু’একজন নয়। একাধিক ভাল বোলার। যাঁরা বিপক্ষকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে

দিতে পারে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন