রায় ঘিরে বিভ্রান্তি আর ডামাডোলে ডুবে সিএবি

লোঢা কমিশনের সুপারিশ ঘিরে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে তা নিয়ে তীব্র ডামাডোল বেধে গেল সিএবিতে। এক-এক জন কর্তা রায়ের এক-এক রকম মানে বার করতে শুরু করে দিলেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ জুলাই ২০১৬ ০৪:২৩
Share:

লোঢা কমিশনের সুপারিশ ঘিরে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে তা নিয়ে তীব্র ডামাডোল বেধে গেল সিএবিতে। এক-এক জন কর্তা রায়ের এক-এক রকম মানে বার করতে শুরু করে দিলেন। কোনও কোনও পদাধিকারী আবার অসূয়া দেখাতে শুরু করলেন তাঁদের অন্ধকারে রেখে সিএবি প্রেসিডেন্ট সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা নির্ধারণে বসে যাওয়া নিয়ে।

Advertisement

এক কথায়, বিভ্রান্তি, ধোঁয়াশা আর ধুন্ধুমারের বাতাবরণ বঙ্গ ক্রিকেট প্রশাসনে।

মঙ্গলবার সিএবি আইনজীবী উষানাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, যুগ্ম-সচিব অভিষেক ডালমিয়াকে নিয়ে রায়ের প্রেক্ষিতে পরবর্তী পদক্ষেপ নির্ধারণে বসেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। যা নিয়ে ক্ষোভ দেখাতে থাকে বিশ্বরূপ দে গোষ্ঠী। বলা হতে থাকে, কেন এত গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকের ব্যাপারে তাঁদের জানানো হবে না? সিএবি কোষাধ্যক্ষ এবং যুগ্ম-সচিব সুবীর গঙ্গোপাধ্যায়ের বক্তব্য ধরলে, তাঁরা এ রকম কোনও বৈঠকের কথা জানতেনই না। বিশ্বরূপ বললেন, ‘‘আমি সিএবি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর খবর পেলাম যে, ওখানে মিটিং চলছে। অন্তত এক ঘণ্টা আগে তো জানাবে!’’ ক্ষুব্ধ বিশ্বরূপের আরও বক্তব্য— দেশের সর্বোচ্চ আদালত রায় দেওয়ার চব্বিশ ঘণ্টা পরেও তাঁদের সামনে তা নিয়ে কোনও আইনি ব্যাখ্যা নেই। এবং শুধু এক জন নয়, আরও বেশি আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলা উচিত ছিল সিএবি-র।

Advertisement

সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় রাতে এই অভিযোগ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাইলেন না। কিন্তু তাতে উত্তেজনা প্রশমিত হল, এমন নয়। গতকাল রায়ের পরে মনে করা হয়েছিল, ক্রিকেট প্রশাসনে বিশ্বরূপ দে-র কেরিয়ার অতীত হয়ে গিয়েছে। প্রথমত, বঙ্গ ক্রিকেট প্রশাসনে তাঁর ন’বছর হয়ে গিয়েছে। রায় ধরলে যার পর তাঁর থাকা আর সম্ভব নয়। আর দ্বিতীয়ত, ছ’মাসের মধ্যে এখন সংশোধন করতে হবে সিএবি সংবিধান। সংশোধনের পরে নির্বাচন। বিশ্বরূপ লড়ার সুযোগই পাবেন না। কিন্তু এ দিন বিশ্বরূপ হুঙ্কার দেন, ছ’মাস সময় বোর্ডের ক্ষেত্রে। রাজ্য সংস্থার ক্ষেত্রে এক বছর। অতএব, এখনই নির্বাচন হলে তাঁর দাঁড়াতে কোনও অসুবিধে নেই। আরও এক বছর তিনি অনায়াসে থাকতে পারবেন। একই সঙ্গে সিএবি কোষাধ্যক্ষ এটাও মনে করিয়ে দিচ্ছেন যে, ক্রিকেট প্রশাসনে কোনও পদে সর্বাধিক ন’বছর থাকা যাবে বলে যে বলা হচ্ছে, তা কবে থেকে মানতে হবে পরিষ্কার বলা নেই। বলা নেই যে, রায়ের আগে থেকে সেটা ধরা হবে না পরের দিন থেকে। বিশ্বরূপের বক্তব্য, ‘‘গত কাল থেকে আগামী ন’বছর যে ধরা হচ্ছে না, রায়ে লেখা আছে কোথায়? তা ছাড়া বলা আছে, হু হ্যাজ বিন অ্যান অফিস বেয়ারার অব দ্য বিসিসিআই ফর আ কিউমুলেটিভ পিরিয়ড অব নাইন ইয়ার্স। এরা পারবে না। রাজ্য সংস্থা শব্দটা আছে কোথায়?’’

সৌরভ-গোষ্ঠী যা শুনে হাসছে। এদের যুক্তি, অনুদান বন্ধের কথা বলা হয়েছে এক বছরের মধ্যে রায় অনুযায়ী সব কার্যকর না করলে। কিন্তু সংবিধানে সংশোধন আমদানির সময়সীমা সর্বোচ্চ ছ’মাস। আর ন’বছরের মেয়াদ ‘হু হ্যাজ বিন অ্যান অফিস বেয়ারার’ মানেই যাঁরা এত দিন ধরে আছেন। সে ক্ষেত্রে সোমবার থেকে তা ধরার প্রশ্ন আসছে কোথা থেকে? আর সিএবি কি বোর্ডের বাইরে নাকি যে আলাদা করে রাজ্যের কথা উল্লেখ করতে হবে? এটাও বলা হল, কোষাধ্যক্ষের কথা মেনে নিলেও তাঁকে এখন তিন বছরের জন্য ‘কুলিং অফ’ পিরিয়ডে চলে যেতে হবে। কারণ, কোষাধ্যক্ষ পদে তাঁর চার বছর হয়ে গেল। রায় ধরলে, এক পদে তিন বছর থাকার পর তো সামনে তিন বছরের ‘হিমঘর’।

এমনিতে যা খবর, আগামী ৩১ জুলাই সিএবি নির্বাচন হচ্ছে না। শোনা গেল, আগামী কয়েক দিনে বিশেষ সাধারণ সভা ডাকতে পারে সিএবি। সদস্যদের সেখানে কী কী সংশোধন করা হচ্ছে, বলা হবে। তার পর তা যাবে সোসাইটি রেজিস্ট্রার অফিসে। সব মিটিয়ে মাস দেড়েক পর হয়তো সিএবি নির্বাচন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন