ভারতীয় বোর্ডের গঠনতন্ত্র নিয়ে বিভ্রান্ত সিএবি। ছবি: সংগৃহীত।
বোর্ডের নতুন গঠনতন্ত্র নিয়েও দেখা দিল বিভ্রান্তি। তামিলনাড়ুর রেজিস্ট্রার অব সোসাইটিজ-এ ভারতীয় বোর্ডের নতুন গঠনতন্ত্র আদোও নথিবদ্ধ হয়েছে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে মঙ্গলবার।
ভারতীয় বোর্ড এ দিন দেশের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, নতুন গঠনতন্ত্র নথিবদ্ধ হয়ে গিয়েছে, কিন্তু কমিটি অব অ্যাডমিনিস্ট্রেটর্সের (সিওএ) প্রধান বিনোদ রাই যে বিবৃতি দেন, তাতে তিনি বলেন, নতুন গঠনতন্ত্র জমা পড়েছে। তাই ঠিক কত তারিখের মধ্যে রাজ্য সংস্থাগুলিকে তাদের নিজ নিজ গঠনতন্ত্র চূড়ান্ত করতে হবে, তা নিয়েও দেখা দেয় বিভ্রান্তি।
৯ অগস্ট সুপ্রিম কোর্ট রায় দিয়েছিল, চার সপ্তাহের মধ্যে বোর্ডকে তাদের নতুন গঠনতন্ত্র নথিবদ্ধ করতে হবে ও তার পরের ৩০ দিনের মধ্যে রাজ্য সংস্থাগুলিকে নিজ নিজ গঠনতন্ত্র চূড়ান্ত করতে হবে। সেই রায় মেনেই মঙ্গলবার নতুন গঠনতন্ত্র নথিবদ্ধ করানো হয়েছে বলে দাবি জানায় বোর্ড। অনুমোদিত সংস্থাগুলিকে তারা চিঠি দিয়ে জানিয়েও দিয়েছে যে, ২০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে তাদের গঠনতন্ত্র চূড়ান্ত করতে হবে। এমনকি, ১৫ নভেম্বরের মধ্যে নব নির্বাচিত কমিটি সদস্যদের নামও পাঠাতে হবে বলে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। শোনা যায়, রাজ্য সংস্থাগুলিকে পাঠানো চিঠিতে বোর্ড জানায়, নতুন গঠনতন্ত্র জমা পড়ার দিনই তা নথিভুক্ত হয়েছে।
এক রাজ্য সংস্থার শীর্ষকর্তা প্রশ্ন তোলেন, ‘‘গঠনতন্ত্রের যে প্রতিলিপি পাঠানো হয়েছে, তাতে ‘রেজিস্টার্ড’ হওয়ার প্রমাণ নেই কেন?’’ ভারতীয় ক্রিকেট প্রশাসনের সঙ্গে যুক্ত এক আইনজীবী বলেন, ‘‘নথিভুক্তির জন্য জমা পড়া ও নথিভুক্ত হওয়ার মধ্যে তফাত রয়েছে। যতক্ষণ না তাতে শিলমোহর পড়ছে, ততক্ষণ তাকে নথিভুক্ত বলা যায় না বোধহয়।’’
বিনোদ রাই ও অপর সিওএ সদস্যা ডায়না এডুলজি এ দিন যৌথ বিবৃতিতে বলেন, ‘‘মাননীয় সুপ্রিম কোর্টকে নির্দেশ দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ এবং তামিলনাড়ু রেজিস্ট্রার অব সোসাইটিজে নতুন গঠনতন্ত্র জমা দেওয়ার মাধ্যমে প্রক্রিয়া শুরু করতে পেরে আমরা খুশি।’’ অবশ্য আইনি মহল বলছে, জমা হওয়ার পরেই যদি তা নথিভুক্ত হয়ে থাকে, তা হলে তাকে ‘রেজিস্টার্ড’ বলা যায়। কিন্তু তার কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
তবে নতুন গঠনতন্ত্রে একটা ব্যাপার স্পষ্ট, বোর্ড প্রশাসনে প্রাক্তন ক্রিকেটারদের ভূমিকা আগের চেয়ে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে। যে ‘অ্যাপেক্স কাউন্সিল’ বোর্ড চালাবে, তাতে পাঁচ শীর্ষকর্তার সঙ্গে একজন পুরুষ ও এক মহিলা ক্রিকেটারকে রাখা হবে। রেল, সার্ভিসেস ও ইউনিভার্সিটির পক্ষেও ভোট দেবেন প্রাক্তন ক্রিকেটাররা। বেশির ভাগ কমিটিতেই রাখতে হবে, প্রাক্তন ক্রিকেটারদের।
আইপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের সাত সদস্যদের মধ্যে অন্তত তিনজন প্রাক্তন ক্রিকেটারকে রাখতেই হবে। ক্রিকেটারদের নিয়ে একটি সংস্থাও এ বার থেকে শুরু করতে হবে এবং তার ব্যয়ভার বহন করতে হবে বোর্ডকেই। দীর্ঘ বিদেশ সফরে ক্রিকেটারদের সপরিবার যাওয়াও এ বার থেকে আইনসিদ্ধ হতে চলেছে।
সিএবি যুগ্মসচিব অভিষেক ডালমিয়া জানান, ‘‘১৫ নভেম্বরের মধ্যে রাজ্যের নবনির্বাচিত সদস্যদের নাম পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’ এর অর্থ যদিও দাঁড়ায় এই তারিখের মধ্যেই নির্বাচন পর্ব শেষ করতে হবে। কিন্তু তাও স্পষ্ট জানায়নি বোর্ড।