ধাক্কা: ফাইনালের প্রথম দিনের খেলা ভেস্তে গেল। নিজস্ব চিত্র
শনিবার দুপুরে ঘণ্টাখানেকের বৃষ্টিতে পণ্ড হয়ে গেল সিএবি সুপার লিগের প্রথম দিনের খেলা। যা কি না সিএবি-র ‘প্রিমিয়াম টুর্নামেন্ট’। বৃষ্টিতে আউটফিল্ডের যা দশা, তাতে চার দিনের পুরো ম্যাচই অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। অথচ সিএবি-র অদ্ভুত নিয়মে বৃষ্টির সময় পুরো মাঠ ঢাকার ব্যবস্থা থাকা সত্ত্বেও তা ঢাকা হল না। পুরো মাঠ ঢাকা হলে খেলা নিশ্চয়ই হত। এর আগে যেমন আন্তর্জাতিক ও আইপিএল ম্যাচ হয়েছে।
শনিবার দুপুরে ইস্টবেঙ্গল-কালীঘাট ফাইনালের প্রথম দুই বল হওয়ার পরেই বৃষ্টি নামে। বৃষ্টির সময় দেখা যায় ইডেনের আউটফিল্ড ঢাকা নেই। অথচ ৬৫ লক্ষ টাকার বিদেশি আউটফিল্ড কভার ছিল মাঠে। কিন্তু সিএবি থেকে জানানো হল, টুর্নামেন্টের হাস্যকর নিয়মে পুরো মাঠ ঢাকা যায়নি। শুধু পিচ ও তার আশপাশের অঞ্চলে কভার ছিল। কিন্তু বৃষ্টিতে আউটফিল্ডের বাকি অংশে যা অবস্থা হল, তার ফলে আর খেলাই হল না। দুপুর থেকে সন্ধে পর্যন্ত ড্রেসিং রুমে অপেক্ষা করে দুই দলের হতাশ ক্রিকেটাররা রাত আটটা নাগাদ ফিরে গেলেন।
টুর্নামেন্টের প্লেইং কন্ডিশনে মাঠ ঢাকার নিয়ম নেই, জানালেন সিএবি যুগ্মসচিব অভিষেক ডালমিয়া। তাঁর ব্যাখ্যা, ‘‘সুপার লিগের অন্যান্য মাঠে যেহেতু গ্রাউন্ড কভারের ব্যাবস্থা নেই, তাই পুরো টুর্নামেন্টেই মাঠ ঢাকার নিয়ম নেই।’’ কিন্তু ইডেনে যেখানে পুরো মাঠ ঢাকার ব্যবস্থা আছে, সেখানে শুধু ফাইনালের ক্ষেত্রে কি এই নিয়মে বদল আনা অসম্ভব? যেখানে ভরা বর্যার মধ্যেই এই ম্যাচ হচ্ছে। যুগ্মসচিবের উত্তর, ‘‘ওয়ার্কিং কমিটি গত বছরই এই নিয়মে পাস করেছিল। তখন কারও এই কথা মনে হয়নি হয়তো। পরের বছর থেকে নিয়ম বদল করার প্রস্তাব দিতে হবে।’’
কারণ শুধু এটাই নয়। সিএবি সূত্রের খবর, পুরো মাঠ ঢাকা দিতে ৭০-৮০ জন লোক লাগে মাঠে। ঈদ ও রথযাত্রার জন্য ময়দানের সেই লোকেরা অমিল। যুগ্মসচিব নিজেও তা স্বীকার করেন। তা হলে সব জেনেও মরশুমের সেরা টুর্নামেন্টের ফাইনাল এই সময় করা কেন?
ইডেনের চিফ কিউরেটর সুজন মুখোপাধ্যায় স্বাভাবিক ভাবেই এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ। মাঠ ঢাকতে না পারায় ইডেনের আউটফিল্ডের ক্ষতি হল বলে ঘনিষ্ঠদের জানালেও মিডিয়ার কাছে মুখ খুলতে চাইলেন না। শুধু বললেন, ‘‘নিয়মের বাইরে গিয়ে তো কিছু করতে পারব না।’’ পরের বছর থেকে সুপার লিগের সময়ে যে বদল আনা দরকার, সেই দাবিও উঠে গেল বঙ্গ ক্রিকেটের অন্দরমহলেই।
একই ভাবে চলতি পি সেন মেমোরিয়াল ট্রফি ভেস্তে যাওয়ারও আশঙ্কা দেখা গিয়েছে। শুক্রবার থেকে শুরু হওয়া এই ওয়ান ডে টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচই ভেস্তে গিয়েছে। টস করে হার-জিতের ফয়সালা করতে হয়েছে। এই টুর্নামেন্টেও পুরো মাঠ ঢাকার নিয়ম নেই। ফলে এই ম্যাচগুলোরও পুরো হওয়ার সম্ভাবনা কম। ফলে সিএবি-তে প্রশ্ন উঠছে, কেন এই জোর করে টুর্নামেন্টগুলো করা হচ্ছে। যার কোনও সদুত্তর অবশ্য নেই।