পিচ নিয়ে পাওয়া যাচ্ছে রহস্যের গন্ধ

প্রথম দিনের শেষেই এমন প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। আর তার সঙ্গে দক্ষিণ আফ্রিকা অধিনায়ক ফ্যাফ ডুপ্লেসি-র টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত মিলিয়ে পিচ-রহস্য আরও ঘনীভূত হয়ে পড়েছে। ডুপ্লেসি-র ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নিয়ে অবাক নয় ভারতীয় শিবির।

Advertisement

সুমিত ঘোষ

কেপ টাউন শেষ আপডেট: ০৬ জানুয়ারি ২০১৮ ০৪:০০
Share:

ছবি: সংগৃহীত।

কেপ টাউনের প্রথম টেস্ট কত দিন গড়াবে?

Advertisement

প্রথম দিনের শেষেই এমন প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। আর তার সঙ্গে দক্ষিণ আফ্রিকা অধিনায়ক ফ্যাফ ডুপ্লেসি-র টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত মিলিয়ে পিচ-রহস্য আরও ঘনীভূত হয়ে পড়েছে। ডুপ্লেসি-র ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নিয়ে অবাক নয় ভারতীয় শিবির। প্রথম দিনের শেষে সফল বোলার ভুবনেশ্বর কুমারও সাংবাদিক বৈঠকে বলে গেলেন, তাঁরা দক্ষিণ আফ্রিকার সিদ্ধান্তে অবাক হননি। কিন্তু ভুবনেশ্বরের কথা শোনার মতো খুব বেশি লোক শুক্রবার নিউল্যান্ডসে পাওয়া যায়নি।

অনেকেরই মনে প্রশ্ন জাগছে, দুরন্ত চার পেসারে এই টেস্ট খেলতে নেমেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। তার পরেও তারা প্রথম দিনের তরতাজা পিচে পেসারদের দিয়ে আক্রমণ শানিয়ে ভারতকে কোণঠাসা করল না কেন? দিনের শেষে ভারত নিজেরাই উল্টোপাল্টা ব্যাটিং করে দেওয়ালে পিঠ ঠেকিয়ে দিয়েছে। তাতেও দক্ষিণ আফ্রিকার টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়ে আলোচনা থামছে না। কারও কারও বক্তব্য, এটাই যদি ভারতকে প্রথম ব্যাট করতে দেওয়া হতো, তা হলে হয়তো শিখর ধবনদের অবস্থা আরও খারাপ দেখাতে পারত। প্রশ্ন হচ্ছে, সেই সুযোগ নিতে চাইল না কেন তারা?

Advertisement

দু’টো তত্ত্ব শোনা যাচ্ছে। একটা মত হচ্ছে, পিচ নিয়ে নিজেরাই খুব আত্মবিশ্বাসী নয় দক্ষিণ আফ্রিকা শিবির। সবুজ ঘাস ছেড়ে রাখা হয়েছে বাইশ গজে, কিন্তু সেগুলো একটু হলেও এলোমেলো দেখাচ্ছে। স্থানীয় বিশেষজ্ঞদের ধারণা, যত সময় যাবে, পিচ খারাপ হতে থাকবে এবং এখানে শেষের দিকে ব্যাটিং করা খুবই কঠিন হয়ে পড়বে। সেই কারণেই চার পেসার হাতে থাকা সত্ত্বেও আগে ব্যাট করে নেওয়ার সতর্ক রাস্তা ধরল দক্ষিণ আফ্রিকা। অন্যরা এই মতকে উড়িয়ে দিচ্ছেন। তাঁরা মনে করেন, ভারতের হাতে ‘নিউ ইয়ার গিফ্‌ট’ তুলে দিয়েছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকান অধিনায়ক। এটা অস্ট্রেলিয়ার মতো দলের সঙ্গে করলে এ দিনই ব্যুমেরাং হয়ে ফিরত। ভারত উপহার পেয়েও সেটাকে ধরে রাখতে পারল না।

আরও পড়ুন: টেস্ট দলে অভিষেকেই বুমরাহর শিকার ডি ভিলিয়ার্স

ভুবনেশ্বর কুমার এর মধ্যেই স্বীকার করে গেলেন, অন্তত ২৫-৩০ রান বেশি দিয়ে ফেলেছেন তাঁরা। একদম ঠিকই বলেছেন। যে ভাবে ভুবি চাপে ফেলে দিয়েছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকান ব্যাটিংকে, তার পরে অন্য পেসাররা সহায়তা করলে আরও আগে শেষ করে দেওয়া যেত ডুপ্লেসি-দের। মহম্মদ শামি বা যশপ্রীত বুমরা ধারাবাহিক ভাবে সেই চাপটা রাখতে পারেননি। কোথায় ভারতের হেড কোচ রবি শাস্ত্রীর প্রিয় স্লোগান ‘কট সাহা বোল্ড শামি’ রাজ করবে। তা না, শামি সেই ভয়ঙ্কর বোলিংটা করতেই পারলেন না। ঋদ্ধির পাঁচটা ক্যাচও যেন চাপা পড়ে গেল দিনের শেষবেলার বিপর্যয়ে।

আরও আতঙ্কের কথা শুনিয়ে গেলেন ভুবনেশ্বর যে, সকালের দিকে পেসারদের জন্য আদর্শ পরিবেশ থাকছে। বেশ হাওয়া দিচ্ছে, পিচে সামান্য ভিজে ভাব থাকতে পারে। আর তাতে পেসারদের বাড়তি সাহায্য মিলতে পারে কেপ টাউনের মাঠে।

তার মানে রোহিত শর্মা এবং চেতেশ্বর পূজারা-কে জীবনের কঠিনতম পরীক্ষা দিতে নামতে হচ্ছে শনিবার। আর দক্ষিণ আফ্রিকার চার পেসারকে দেখে পুরনো আমলের সেই ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান প্রবাদ মনে পড়ে যেতে পারে। তখন সাবাইনা পার্কে বলা হতো, যদি রবার্টস-মার্শাল তোমাকে শিকার না করতে পারে, হোল্ডিং-গার্নার করবে। নিউল্যান্ডসে না দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেট ভক্তরা গান ধরে, যদি স্টেন-ফিল্যান্ডার তোমাকে না পায়, রাবাডা-মর্কেল তুলে নেবে!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন