কোপার মাঠ থেকে বিশ্ব ফুটবলকে কাঁদিয়ে গেলেন লিওনেল মেসি। বিশ্বকাপের পর দু’বার কোপা ফাইনালে হার। সেটাই কি ফ্যাক্টর হয়ে গেল? আলোচনা হচ্ছে, সমালোচনাও হচ্ছে। কিন্তু সব কিছু ছাড়িয়ে হচ্ছে মনখারাপ। শেয়ার করলেন তিন ফুটবল পাগল সেলেব। শুনলেন স্বরলিপি ভট্টাচার্য।
কলকাতার ওপর এই মেঘটা বোধহয় আজ মেসির জন্যই হয়েছে। মনখারাপের মেঘ। ভোররাতেও যখন টিভিতে মেসির মুখটা দেখছিলাম, সকালে উঠে এমন একটা খবর দেবে একবারও ভাবিনি। মানছি, পর পর দু’বার চিলির কাছে হার। আসলে কোনও কিছুই ঠিকঠাক ক্লিক করছিল না। এটাও মানছি বিশ্বকাপ পাননি। তবুও মেসি তো মেসিই। এ সব সমালোচনা তো বেশ কিছু দিন হল শুরু হয়েছে যে, দেশকে বড় ট্রফি জেতাতে পারেননি। কিন্তু, আর্জেন্তিনার বিশ্বকাপ জিততে হলে তো অনেক ফ্যাক্টর কাজ করে। একা মেসি কী করবে? এটা কেউ কেন বুঝবে না? আমারই এত মনখারাপ হয়ে যাচ্ছে…। মেসি যে খুব ইমোশনাল হয়ে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে সেটা আমি সিওর। জানেন তো, এটা অনেকটা ওই ভোটের মতো। মানে ক্যাম্পেনিংয়ের সময় হেভিওয়েটরা যেমন বলেন, এ বারও আমিই জিতব। তার পর হেরে গেলে যা হয়, ঠিক তেমন। আমি খুব একটা গুছিয়ে হয়তো বোঝাতে পারছি না। নিঃসন্দেহে মেসির এখনও অনেক কিছু দেওয়ারও আছে। আমরা যারা ফুটবল ভালবাসি, মেসিকে ভালবাসি, আর্জেন্তিনার সমর্থক তারা সকলে চাই মেসি এই ডিসিশন উইথড্র করুন।
লাস্ট কোপাতেও এমন হয়েছিল। কালকের ফাইনালেও মেসি আটকে গেল। কিন্তু, তার জন্য একেবারে রিটায়ারমেন্ট! এটা মেনে নিতে পারছি না। খুব মন খারাপ হয়ে গেল। আমার মনে হয়, কালকের পেনাল্টি মিস করাটাই ফ্যাক্টর হয়ে গেল। পেনাল্টি মিস করলে যে কোনও প্লেয়ারেরই মন খারাপ হয়ে যায়, আর এটা তো মেসি। সেই কবে খেলা দেখে একটা ছোট্ট লোকের (মারাদোনা) প্রেমে পড়েছিলাম, আর তারপর তো মেসি। আসলে দেশকে বিশ্বকাপ দেওয়াটা আলাদা প্রেস্টিজ। সেই ব্যর্থতা থেকে হয়তো ডিপ্রেশন এসেছিল। তবে ক্লাবের হয়ে সর্বস্ব দিচ্ছে, আর দেশের হয়ে পা বাঁচিয়ে খেলছে, এমন অভিযোগ কিন্তু কখনও মেসির বিরুদ্ধে ওঠেনি। জানিনা…। কী জন্য এমন সিদ্ধান্ত তা নিয়ে কমেন্ট করাটা ইট’স টু আরলি। আর আমাদের কী বলুন তো? এত দূরে বসে আর্জেন্তিনা জিতল কি হারল, মেসি কী করল— এ সব নিয়ে ভাবলেই মন খারাপ হয়ে যাচ্ছে। আজ মেসিরও কি কম মনখারাপ!
আমি মারাদোনার ভক্ত। কিন্তু মেসির খেলাও খুব পছন্দের। উনি এটা কী করলেন? আমরা যারা শিল্পী তাদের ওর কাছ থেকে অনেক কিছু শেখার রয়েছে। এমন ঠান্ডা মাথার ফুটবলার খুব কম দেখা যায়। এখনও পর্যন্ত মাঠে কোনও হাতাহাতিতে জড়ায়নি। কোনও প্লেয়ারকে খারাপ কিছু বলেনি— অনেক কিছু শেখার রয়েছে। কিন্তু আমার মনে হয়, পর পর এই হারটা আর মেনে নিতে পারছিলেন না। আর্জেন্তিনাকে বিশ্বকাপ না দিতে পারার চাপটা তো কম নয়। যাই হোক এই সিদ্ধান্তটা খুব শকিং।