Sports News

মুম্বইয়ের লোকাল ট্রেন থেকে ৫০ টেস্টের স্টেশন

একটা সময় ছিল যখন ব্যাট হাতে বড় রান আসছিল না। ভারতীয় দলের সতীর্থরাই তাঁকে আশ্বস্ত করেছিল। পূজারা বলেন, ‘‘একটা সময় ছিল, আমি রান পাচ্ছিলাম না। কিন্তু সবাই আমাকে নিয়ে আত্মবিশ্বাসী ছিল। যেদিন আমি আমার কামব্যাক টেস্ট খেললাম, রান পেলাম, সেদিন সবাই এসে বলেছিল, আমরা সবাই জানতাম তুমি রানে ফিরবেন। সেদিন খুব ভাল লেগেছিল।’’

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ৩০ জুলাই ২০১৭ ২২:০৩
Share:

চেতেশ্বর পূজারা। ছবি: এপি।

শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে প্রথম টেস্টে নিজের ৫০তম ম্যাচটি খেলে ফেলেছেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন। দ্বিতীয় টেস্টের আগে একই মাইলস্টোনের সামনে দাঁড়িয়ে আর এক ভারতীয়। প্রথম টেস্টে তাঁর ব্যাট থেকে এসেছে সেঞ্চুরি। কলম্বোতে এ বার তার জীবনের ৫০তম টেস্টটি খেলতে নামবেন চেতেশ্বর পূজারা। এরকম কোনও সাফল্যের সামনে দাঁড়িয়ে সব সময়ই মনে পরে যায় সেই সব খারাপ সময়গুলো। ঠিক যে ভাবে পূজারার মনে পরছে চোটের সময়গুলো। তাঁর মতে, সেটাই সব থেকে খারাপ সময়। ৪৯তম টেস্টে পূজারার মোট রান ৩৯৬৬। গড় ৫২.১৮। এর মধ্যে রয়েছে ১২টি সেঞ্চুরি। পূজারা বলেন, ‘‘অসাধারণ একটা জার্নি। দেশের জন্য ৫০তম টেস্ট খেলাটা আমার কাছে গর্বের। এটা ঠিক এই চলায় সব সময়ই ওঠাপড়া ছিল। কিন্তু আমার বর্তমান ফর্ম দেখে মনে হচ্ছে ৫০তম টেস্টে কিছু রান করতে পারব।’’

Advertisement

আরও খবর: হার না মানা এক নিত্যযাত্রী তারকা

শ্রীলঙ্কাকে প্রথম টেস্টে হারিয়ে আত্মবিশ্বাসী পূজারার ক্রিকেট জীবন থমকে গিয়েছিল দু’বছর আগে হাঁটুর চোটের জন্য। সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়াতে কম সময় লাগেনি। কিন্তু তিনি পেরেছেন। তিনি বলেন, ‘‘আার কেরিয়ারের সব থেকে চ্যালেঞ্জিং ছিল চোট পেয়ে বাইরে থাকার সময়। ছ’মাস বাইরে থাকতে হয়েছিল। দু’বার করে ছ’মাস বাইরে থাকতে হয়েছে হাঁটুর চোটের জন্য। সব মিলে এক বছর খেলতে পারিনি। খুব কঠিন ছিল।’’ ২০১৫তে শ্রীলঙ্কার মাঠেই সেঞ্চুরি পেয়েছিলেন পূজারা। এর পর ডোমেস্টিক ক্রিকেটেও রান এসেছে। তার পরই আত্মবিশ্বাস ফিরে আসার শুরু। ডোমেস্টিক ক্রিকেট খেলেই নিজিকে ক্রমশ ফিরে পেয়েছেন তিনি। বলেন, ‘‘আমার টেকনিকে কোনও সমস্যা ছিল না। কারণ তার পর আমি রাহুলভাই (রাহুল দ্রাবিড়)এর সঙ্গে কথা বলি। ও আমাকে বলে, আমি যে ভাবে খেলছি সে ভাবেই খেলে যেতে। নিজের খেলাকে বিশ্বাস করে অনুশীলন করে গিয়েছি।’’ আর এখন ৫০ ম্যাচ থেকে এক ইনিংস পিছনে দাঁড়িয়ে রয়েছেন তিনি।

Advertisement

একটা সময় ছিল যখন ব্যাট হাতে বড় রান আসছিল না। ভারতীয় দলের সতীর্থরাই তাঁকে আশ্বস্ত করেছিল। পূজারা বলেন, ‘‘একটা সময় ছিল, আমি রান পাচ্ছিলাম না। কিন্তু সবাই আমাকে নিয়ে আত্মবিশ্বাসী ছিল। যেদিন আমি আমার কামব্যাক টেস্ট খেললাম, রান পেলাম, সেদিন সবাই এসে বলেছিল, আমরা সবাই জানতাম তুমি রানে ফিরবেন। সেদিন খুব ভাল লেগেছিল।’’ সচিন তেন্ডুলকর, রাহুল দ্রাবিড়ের সঙ্গে ড্রেসিংরুম ভাগাভাগি করে নেওয়ার অভিজ্ঞতাই তাঁকে এখনও প্রতিদিন শেখার অনুপ্রেরণা দেয়।

আর একজন অনুপ্রেরণা দেন পূজারাকে। তিনি আর কেউ নন, তাঁর বাবা অরবিন্দ পূজারা। প্রাক্তন এই সৌরাষ্ট্র রঞ্জি ক্রিকেটার ছেলের মধ্যে নিজেকে দেখেন। তাই হয়তো শুধু ছেলের দিকেই তাকিয়ে থাকেন। চেতেশ্বর পূজারা বলেন, ‘‘আমার বাবা সব সময় আমার সব থেকে ভাল আর সব থেকে খারাপ সমালোচক। একটা সময় ছিল বাবা সবসময় সমালোচনা করত। কিন্তু এখন একটা বোঝাপড়ায় এসেছে। এখন আর এতটা রাগি নেই বাবা।’’ সেই বাবা তাকিয়ে ছেলের ৫০তম টেস্টের দিকে তাকিয়ে। হার না মানা এক নিত্যযাত্রীর তারকা হয়ে ওঠার পথ প্রদর্শক তো তিনিই। ঘুপচি ঘর আর লোকাল ট্রেনের ধাক্কাটাই যে শিখিয়ে দিয়েছে এই কঠিন চলাটা। সেই চলাই বৃহস্পতিবার আরও একটা স্টেশনে পৌঁছতে চলেছে। সেই দিকেই তাকিয়ে গোটা ভারতবর্ষ। সঙ্গে এক লড়াকু বাবাও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন