তেভেজের পেনাল্টিতেই শেষ চারে।
কলম্বিয়ার বিরুদ্ধে খেলা মানেই লিওনেল মেসির কাছে বড় একটা চ্যালেঞ্জ। এমনিতেই বিপক্ষের সবার উচ্চতা অনেক বেশি। তার উপর শুক্রবার রাতে আবার কলম্বিয়ার বারো নম্বর সদস্যের সঙ্গেও লড়াই করতে হল। ‘বারো নম্বর’ সদস্য বলতে গ্যালারিতে বসে থাকা কলম্বিয়া সমর্থকরা।
গোটা ম্যাচেই মেসির মুখ টার্গেট করে লেজার পেনের আলো দিয়ে গেলেন কলম্বিয়া সমর্থকরা। যে আলো চোখে লাগলে দৃষ্টিশক্তিতে খারাপ প্রভাব পড়তে পারে। এক ব্রিটিশ দৈনিকের ছবিতে ধরা পড়ে, মহাতারকার মনঃসংযোগ নষ্ট করতে কেমন ভাবে তাঁর মুখ তাক করে লেজার আলো দেওয়া হয়। তবে বিপক্ষ সমর্থকদের এ হেন আচরণ মেসির কাছে নতুন নয়। আগেও বার্সেলোনার হয়ে খেলার সময় বহু বার তাঁকে লেজার আলোর অত্যাচার সহ্য করতে হয়েছে।
তবে ম্যাচ শেষে লেজারের চেয়ে মেসি বেশি চিন্তিত ছিলেন দলের গোল-খরা নিয়ে। কোপায় আরও এক বার অনেক সুযোগ তৈরি করেও কোনও গোল পায়নি আর্জেন্তিনা। এলএম টেন নিজেই স্বীকার করছেন, ক্লাব ফুটবলের চেয়ে দেশের জার্সিতে খেলাটা পাঁচশো গুণ বেশি কঠিন তাঁর জন্য। ‘‘এটা সত্যিই অবিশ্বাস্য যে দেশের হয়ে একটা গোল করা কতটা কঠিন,’’ বলছেন মেসি। সঙ্গে তিনি যোগ করেন, ‘‘আমি বুঝতে পারছি না এত সুযোগ তৈরি করেও কেন গোল হল না। ভাগ্য ভাল ছিল তাই আমরা টাইব্রেকারে জিতে গেলাম।’’
ব্রাজিলে যেমন প্রত্যাবর্তনে শিরোনাম ছিনিয়ে নিয়েছেন রবিনহো, তেমন আর্জেন্তিনার কার্লোস তেভেজও জাতীয় দলে ফিরে দেশকে সেমিফাইনালে তুলে দিলেন। তাঁর নেওয়া পেনাল্টি থেকেই তো জিতল আর্জেন্তিনা। তবে তেভেজের পেনাল্টি নেওয়ায় প্রথমে সম্মতি ছিল না কোচ জেরার্ডো মার্টিনোর। কারণ ২০১১-র কোপা আমেরিকায় উরুগুয়ের বিরুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ পেনাল্টি ফস্কেছিলেন তেভেজ। মার্টিনো চাননি ফের তাঁর উপরে এই দায়িত্ব দেওয়া হোক। ‘‘আমি তেভেজকে প্রথম পাঁচ জনের মধ্যে রাখিনি কারণ ও গত কোপায় পেনাল্টি থেকে গোল করতে পারেনি। কিন্তু ঘুরেফিরে ওকে নিতেই হল। আর ওর গোলেই জিতলাম। এরই নাম ফুটবল।’’ নব্বই মিনিটে কোনও গোল না পেলেও মার্টিনো মনে করছেন, যোগ্য দল হিসাবেই জিতেছে আর্জেন্তিনা। ‘‘আরও ভাল খেলতে পারতাম। তবে গোটা ম্যাচে আমাদের দাপট ছিল। ওরা খুব বেশি সুযোগ তৈরি করতে পারেনি।’’
ম্যাচ শেষে ড্রেসিংরুমেও চলল ফুটবলারদের সেলিব্রেশন। মেসি থেকে আগেরো ব্যস্ত ছিলেন একে অপরের সঙ্গে সেলফি তুলতে।
টাইব্রেকে শেষরক্ষার পরে।
কলম্বিয়ার কোচ হোসে পেকারম্যানের আবার নিজের দেশ আর্জেন্তিনার ঘাতক হয়ে ওঠা হল না। বরং বিশ্বকাপের মতো আবার কোয়ার্টার ফাইনালেই ছিটকে গেল তাঁর টিম। পেকারম্যান বলছেন, ‘‘আর্জেন্তিনা প্রথমার্ধে খুব ভাল খেলেছে। বিরতির পরে আমরা উন্নতি করলেও গোলটা পেলাম না।’’
সেমিফাইনালে আর্জেন্তিনার মুখোমুখি হতে চলেছে ব্রাজিল বনাম প্যারাগুয়ে ম্যাচের জয়ী। তার আগে অবশ্য জাভিয়ার মাসচেরানো জানিয়ে দিচ্ছেন, দলকে আরও উন্নতি করতে হবে। মাসচেরানো বলছেন, ‘‘আমরা সেমিফাইনালে উঠে গিয়েছে ঠিকই। তবে কাজ এখনও শেষ হয়নি। আজ আমরা খারাপ খেলিনি। কিন্তু আরও ভাল খেলতে হবে।’’