স্বস্তির মধ্যেও মলিনার চিন্তা বাড়াচ্ছে ডিফেন্স

জোসে মলিনার মুখে এ রকম হাইভোল্টেজ হাসি মনে হয় কখনও দেখেনি কলকাতা। যা দেখা গেল মঙ্গলবার কেরলের সঙ্গে ম্যাচ ড্রয়ের পর। আন্তোনিও হাবাসের সঙ্গে ছায়াযুদ্ধে একটা হার্ডল টপকে গেলেন তিনি। টিমকে শেষ চারে তুলে দিয়ে। তা-ও আবার পুণের স্প্যানিশ কোচের মুখোমুখি হওয়ার ঠিক আগে।

Advertisement

সোহম দে

শেষ আপডেট: ৩০ নভেম্বর ২০১৬ ০২:৫৩
Share:

হিউমকেও নামতে হচ্ছে গোল বাঁচাতে। ছবি: উৎপল সরকার

জোসে মলিনার মুখে এ রকম হাইভোল্টেজ হাসি মনে হয় কখনও দেখেনি কলকাতা। যা দেখা গেল মঙ্গলবার কেরলের সঙ্গে ম্যাচ ড্রয়ের পর।

Advertisement

আন্তোনিও হাবাসের সঙ্গে ছায়াযুদ্ধে একটা হার্ডল টপকে গেলেন তিনি। টিমকে শেষ চারে তুলে দিয়ে। তা-ও আবার পুণের স্প্যানিশ কোচের মুখোমুখি হওয়ার ঠিক আগে।

অন্য দিন এক পয়েন্ট পেলে মলিনার মেজাজ থাকত গম্ভীর। রেফারিং নিয়ে অভিযোগ তুলতেন। দাবি করতেন, দল ফের জয়ে ফিরবে।

Advertisement

কিন্তু মঙ্গলবারের এক পয়েন্টের গুরুত্বটা ছিল একটু আলাদা। এই এক পয়েন্ট অঙ্কের প্যাঁচ থেকে বাঁচিয়ে সেমিফাইনালের টিকিট ধরিয়ে দিল কলকাতাকে। তাই আজ এক পয়েন্টকে জয়ের মতোই দেখছেন মলিনা।

পূবর্সূরির মতো তাঁরও সাদা রংটা পছন্দ। সাদা টি-শার্ট পরা মলিনা বললেন, ‘‘জেতার সুযোগ ছিল। কিন্তু এক পয়েন্ট যথেষ্ট ছিল। কোনও ঝুঁকি নেওয়ার দরকার ছিল না। আসল লক্ষ্য ছিল সেমিফাইনালে যাওয়া। সেটা করতে পেরে আমি খুশি। পরের ম্যাচে অনেক প্লেয়ারকে বিশ্রাম দিতে পারব।’’

সেমিফাইনালে উঠে গেলেও রক্ষণ এখনও কাঁটা হয়ে থাকল কোচের। শেষ চারের চ্যালেঞ্জের আগে আরও পড়াশুনো করতে চান মলিনা। রক্ষণ নিয়ে প্রশ্ন করায় তাই একটু ভেবেই বললেন, ‘‘ইয়েস ইয়েস। ডিফেন্স ভুল করছে। আমরা খারাপ গোল খাচ্ছি। কোনও কারণ ছাড়াই। আমায় ভাবতে হবে রক্ষণ নিয়ে।’’

ডিফেন্সের গলদ আরও বড় করে তুলে ধরেন দেবজিৎ মজুমদার। গোটা মরসুমে তিনি নির্ভরযোগ্য ফুটবল খেললেও তাঁর ভুলেই এ দিন কলকাতা পিছিয়ে যায়। মলিনা যে পরিস্থিতিটা খুব ভাল বোঝেন। নিজে গোলকিপার ছিলেন। ২০০০ ইউরোয় তাঁর ভুল স্পেনকে হারের মুখে ফেলে দিয়েছিল নরওয়ের বিরুদ্ধে। মলিনা তাই বললেন, ‘‘গোলকিপারদের মুশকিল হচ্ছে, একটা ভুল মানেই গোল। গোলকিপারদের এটা নিয়েই বাঁচতে হবে। কিন্তু আমি খুশি নই। আর দেবজিতও খুশি নয়।’’

তবে মিক্সড জোনে স্বস্তির আবহাওয়াই পাওয়া গেল। এক ম্যাচ বাকি থাকতে সেমিফাইনালে উঠে গিয়ে ফুটবলাররা খোশমেজাজে। গোলদাতা স্টিভন পিয়ারসন হাসিমুখে বলে গেলেন, ‘‘চেয়েছিলাম দলকে সাহায্য করতে। গোল করে দলকে সেমিফাইনালে তুলতে পেরে তাই আমি খুশি।’’

এত আনন্দের মধ্যেও দলের মার্কি হেল্ডার পস্টিগাকে একটু গম্ভীর দেখাচ্ছিল। কারণটা অনুমান করা কঠিন নয়। চাপেকোয়েনসের মর্মান্তিক বিমান দুর্ঘটনায় তাঁর মন পড়ে ছিল। ‘‘খুব খারাপ লাগছে। প্লেয়ারদের পরিবারের প্রতি আমার সমবেদনা,’’ বললেন পস্টিগা। গোলটা এসেছে তাঁর পাস থেকেই। পর্তুগিজ স্ট্রাইকার তাই বললেন, ‘‘সেমিফাইনালে উঠতে পেরে ভাল লাগছে। এ রকম খেলা দেখতেই তো সমর্থকরা মাঠে আসেন। পরের ম্যাচের আগে আরও খাটতে হবে।’’

এটিকের মতো এক পয়েন্ট পেয়ে খুশি কেরলও। যাদের আর এক পয়েন্ট লাগবে শেষ চারে যেতে। দলের ব্রিটিশ কোচ স্টিভ কপেল বললেন, ‘‘আটলেটিকোর সবচেয়ে বড় গুণ ওরা প্রতিআক্রমণে দারুণ। পস্টিগার মতো প্লেয়ার আছে। গোলটাও দারুণ করল। সুন্দর পাসিং মুভ। এ রকম একটা কঠিন ম্যাচ থেকে এক পয়েন্ট পেয়ে তাই খুশি।’’

রবীন্দ্র সরোবরে মাত্র একটা জয়। ঘরের মাঠে এত খারাপ ফর্মের কারণটা কী? মলিনার মতে যুবভারতীর আবেগটা হয়তো মিস করছেন ফুটবলাররা। ‘‘আমি প্লেয়ারদের থেকে শুনেছি, যুবভারতীর আবহ কেমন থাকে। এখানে সেই ব্যাপারটা ঠিক হচ্ছে না। হয়তো সেটাই একটা কারণ ঘরের মাঠে জয় না পাওয়ার।’’ শেষ চারে কোন দল তাঁকে মুশকিলে ফেলতে পারে? মলিনার উত্তরটাও স্পষ্ট, ‘‘সব দলই ভাল। কিন্তু এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে কঠিন দল ছিল দিল্লি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন