Team India

টি-টোয়েন্টিতে কোহলি-রোহিত অতীত, কারা উঠে আসছেন? জবাব নিয়ে হাজির আইপিএল

পরের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ২০২৬ সালে। এ বারের আইপিএলই খুঁজে দেবে আগামীর তারকা। পরের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে জায়গাও করে নিতে পারেন তাঁদের মধ্যে কেউ। ভারতীয় দলের বেঞ্চ স্ট্রেংথ কেমন?

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০২৫ ০৯:০০
Share:

গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম। গ্রাফিক সহয়তা: এআই।

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয়ের পরেই ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ততম ফর্ম্যাট থেকে অবসর নিয়েছিলেন রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলি এবং রবীন্দ্র জাডেজা। পরের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ২০২৬ সালে। এ বারের আইপিএলই খুঁজে দেবে আগামীর তারকা। পরের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে জায়গাও করে নিতে পারেন তাঁদের মধ্যে কেউ। ভারতীয় দলের বেঞ্চ স্ট্রেংথ কেমন?

Advertisement

টপ অর্ডার

টি-টোয়েন্টিতে ভারতের হয়ে নিয়মিত ওপেন করেন সঞ্জু স্যামসন এবং অভিষেক শর্মা। এ বারের আইপিএলে ওপেনার হিসাবে নজর কেড়েছেন সাই সুদর্শন। গুজরাত টাইটান্সের এই ওপেনার ৬ ম্যাচে ৩২৯ রান করেছেন। চারটি অর্ধশতরান করে ফেলেছেন। রোহিত শর্মা অবসর নেওয়ায় ভারতের এক জন ওপেনার প্রয়োজন। এ বারের আইপিএল দেখলে সুদর্শনের অবশ্যই সুযোগ পাওয়া উচিত। সেই সঙ্গে দাবি জানাবেন ওপেনার প্রিয়াংশ আর্যও। দিল্লি প্রিমিয়ার লিগে ছ’বলে ছ’ছক্কা মেরেছিলেন প্রিয়াংশ। তাঁকে ৩ কোটি ৮০ লক্ষ টাকা দিয়ে কিনেছিল পঞ্জাব। প্রথম ম্যাচে ২৩ বলে ৪৭ রান করে বুঝিয়ে দেন, তাঁর উপর ভরসা রেখে ঠিক করেছে তারা। এখনও পর্যন্ত ৬ ম্যাচে ২১৬ রান করেছেন তিনি। একটি শতরানও করেছেন।

Advertisement

ভারতের হয়ে তিন নম্বরে খেলার জন্য রয়েছেন সূর্যকুমার যাদব এবং তিলক বর্মা। তাঁদের সঙ্গে লড়াই হতে পারে রজত পাটীদারের। পাঁচটি ইনিংস খেলেছেন তিনি। করেছেন ১৮৬ রান। দু’টি অর্ধশতরান করেছেন পাটীদার। তবে তিন নম্বরে খেলার জন্য এখনও পরিণত নন তিনি। তাই সূর্যকুমার বা তিলককে টপকে জায়গা করে নেওয়া কঠিন হবে তাঁর জন্য। এ বারের আইপিএল থেকে তিন নম্বরে খেলার মতো উঠতি ক্রিকেটার এখনও পর্যন্ত পাটীদারই।

মিডল অর্ডার

টি-টোয়েন্টিতে ভারতের মিডল অর্ডারে খেলেন সূর্যকুমার, তিলক, হার্দিক পাণ্ড্য, অক্ষর পটেলের মতো ক্রিকেটারেরা। এ বারের আইপিএলে ধারাবাহিক ভাবে রান করছেন অঙ্গকৃশ রঘুবংশী। কলকাতা নাইট রাইডার্সের এই ক্রিকেটার ইতিমধ্যেই ৬ ম্যাচে ১৭০ রান করেছেন। তাঁর গড় ৩৪ এবং স্ট্রাইক রেট ১৪২.৮৫। একটি ম্যাচে অর্ধশতরান করেছেন। অভিজ্ঞ ক্রিকেটারদের সঙ্গে রঘুবংশীকে তৈরি করার কথা ভাবতে পারে বোর্ড।

ফিনিশার

ভারতীয় দলে এই মুহূর্তে ফিনিশারের অভাব নেই। রিঙ্কু সিংহ রয়েছেন। কিন্তু তিনি এ বারের আইপিএলে ফর্মে নেই। তাঁকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিতে পারেন আশুতোষ শর্মা। ২০২৩ সাল থেকেই আইপিএলে পরিচিত মুখ আশুতোষ। আগে খেলতেন পঞ্জাব কিংসের হয়ে। এখন তিনি দিল্লির ভরসা। ২৬ বছরের আশুতোষ লখনউ সুপার জায়ান্টসের বিরুদ্ধে ৩১ বলে ৬৬ রান করেন। তিনি প্রায় একার হাতেই ম্যাচ জেতান। আশুতোষ ব্যাট করতে নামার সময় দিল্লি ৬৬ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে ধুঁকছিল। সেখান থেকে ২১০ রান তাড়া করে ম্যাচ জিতে নেয় দিল্লি। এখনও পর্যন্ত চারটি ইনিংসে ৯৯ রান করেছেন। তাঁর স্ট্রাইক রেট ১৭৩.৬৮।

অলরাউন্ডার

টি-টোয়েন্টি দলে অলরাউন্ডারদের ভিড়। হার্দিক, অক্ষর, ওয়াশিংটন সুন্দর, শিবম দুবের মতো ক্রিকেটারেরা রয়েছেন। এ বারের আইপিএলে অলরাউন্ডার হিসাবে নজর কেড়েছেন বিপরাজ নিগম। লখনউ সুপার জায়ান্টসের বিরুদ্ধে ২০ বছরের তরুণ ক্রিকেটার ১৫ বলে ৩৯ রান করেন। পাঁচটি চার এবং দু’টি ছক্কা মারেন বিপরাজ। আশুতোষ এবং বিপরাজ মিলে ২২ বলে ৫৫ রান করেন। উত্তরপ্রদেশের বিপরাজ ঘরোয়া ক্রিকেটে খুব বেশি ম্যাচ খেলেননি। তবে সৈয়দ মুস্তাক আলি ট্রফিতে অন্ধ্রের বিরুদ্ধে তাঁর ৮ বলে ২৭ রানের ইনিংস নজর কেড়েছিল। তবে বিপরাজ ব্যাটার নন, বোলার হিসাবেই দলে জায়গা পান। লেগ স্পিনার তিনি। আইপিএলে ছ’টি ম্যাচে এখনও পর্যন্ত নিয়েছেন সাতটি উইকেট। অলরাউন্ডার বিপরাজ ব্যাট হাতে তিনটি ইনিংসে করেছেন ৫৪ রান। তাঁর স্ট্রাইক রেট ২১৬। অলরাউন্ডার হিসাবে তাঁর কথা ভাবা যেতেই পারে।

উইকেটরক্ষক

ভারতীয় দলে উইকেটরক্ষক হিসাবে সঞ্জু স্যামসন ছাড়াও রয়েছেন লোকেশ রাহুল, ঋষভ পন্থ, ধ্রুব জুরেলের মতো ক্রিকেটার। তাঁদের সঙ্গে পাল্লা দিতে পারেন বাংলার অভিষেক পোড়েল। ৬ ম্যাচে ১৫৬ রান করেছেন তিনি। গড় ৩১.২০ এবং স্ট্রাইক রেট ১৪৩.১১। পন্থ গাড়ি দুর্ঘটনায় আহত হওয়ার পর পরিস্থিতি সামাল দিতে দিল্লি ক্যাপিটালসের তৎকালীন ডিরেক্টর অফ ক্রিকেট সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় অভিষেককে দলে নেন। অভিষেক কিন্তু ভারতীয় দলের প্রাক্তন অধিনায়ককে হতাশ করেননি। আইপিএলে পারফর্ম করে অভিষেক নিজেকে প্রমাণ করে চলেছেন। দিল্লির প্রথম দলে নিয়মিত হয়ে উঠেছেন।

স্পিনার

টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছেন রবীন্দ্র জাডেজা। সেই জায়গায় অক্ষর, ওয়াশিংটন যেমন রয়েছেন, তেমনই রবি বিশ্নোই এবং বরুণ চক্রবর্তীও রয়েছেন। তাঁদের সঙ্গে এ বারের আইপিএলে নজর কেড়েছেন বিগ্নেশ পুতুর। বাঁহাতি স্পিনারের বয়স ২৪ বছর। কব্জির মোচড়ে নজর কেড়েছেন পুতুর। চেন্নাই সুপার কিংসের বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচেই চমকে দিয়েছিলেন। ঘরোয়া ক্রিকেট না-খেলা এই স্পিনার কেরলের ক্লাব ক্রিকেটে খেলতেন। সেখান থেকেই তাঁকে খুঁজে এনেছে মুম্বই। চেন্নাইয়ের বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচেই তিন উইকেট নিয়েছিলেন তিনি। ৪ ওভারে ৩২ রান দিয়ে আউট করেন রুতুরাজ গায়কোয়াড়, শিবম দুবে এবং দীপক হুডাকে। মুম্বইকে যদিও ম্যাচটা জেতাতে পারেননি। কিন্তু পুতুর নজর কেড়ে নেন। তাঁর প্রশংসা করেন ধোনিও। চার ম্যাচে ছ’টি উইকেট নিয়েছেন পুতুর। তাঁর সঙ্গে সাই কিশোরও ভারতীয় দলে ঢোকার দাবি জানাতে পারেন। ৬ ম্যাচে ১০টি উইকেট নিয়েছেন তিনি। তামিলনাড়ুর কিশোরের বয়স ২৮ বছর। দেশের হয়ে তিনটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছিলেন ২০২৩ সালে। কিন্তু তার পর থেকে আর জায়গা পাননি। এ বারের আইপিএলে ফর্মে রয়েছেন বাঁহাতি স্পিনার। সেই সঙ্গে অবশ্যই নজরে থাকবেন দিগ্বেশ রাঠী। আইপিএলে সাত ম্যাচে ন’উইকেট তুলে নিয়েছেন এই লেগস্পিনার। দিল্লির দিগ্বেশকে কিনেছে লখনউ সুপার জায়ান্টস। মুস্তাক আলি ট্রফিতে পাঁচ ম্যাচে আট উইকেট নিয়েছিলেন দিগ্বেশ। নিলামের আগে যদিও প্রথম দু’টি ম্যাচে তিন উইকেট নিয়েছিলেন। কিন্তু লখনউ তাঁকে নিয়ে যে ভুল করেনি সেটা প্রমাণিত। প্রতি ম্যাচেই উইকেট নিচ্ছেন তিনি। সেই সঙ্গে চর্চায় তাঁর নোটবই উৎসব।

পেসার

পেস আক্রমণ সামলানোর জন্য ভারতীয় দলে জসপ্রীত বুমরাহ, মহম্মদ শামি, হর্ষিত রানা, অর্শদীপ সিংহের মতো ক্রিকেটার রয়েছেন। এ বারের আইপিএলে নজর কাড়ছেন খলিল আহমেদ। ২৭ বছর বয়সি এই বাঁহাতি পেসারের জন্ম রাজস্থানে। আইপিএলে তিনি খেলছেন চেন্নাই সুপার কিংসের হয়ে। এর আগে দিল্লি ক্যাপিটালস এবং সানরাইজার্স হায়দরাবাদের হয়ে খেলেছেন। ভারতের হয়েও ১৮টি টি-টোয়েন্টি এবং ১১টি এক দিনের ম্যাচ খেলেছেন। দেশের হয়ে শেষ বার তাঁকে খেলতে দেখা গিয়েছিল গত বছর শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে। তার আগে ২০১৯ সালে খেলেছিলেন তিনি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার চেষ্টায় রয়েছেন খলিল। এ বারের আইপিএল তাঁকে সেই মঞ্চ তৈরি করে দিচ্ছে। খলিল ছাড়াও নজরে থাকবেন মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের অশ্বনী কুমার। বাঁহাতি পেসার নজর কেড়েছিলেন কলকাতা নাইট রাইডার্সের বিরুদ্ধে। ৩ ওভারে ২৪ রান দিয়ে ৪ উইকেট তুলে নেন। তরুণ পেসারের জন্ম পঞ্জাবে। ২৩ বছরের এই পেসার ডেথ ওভারে ভাল করার জন্য নজর কেড়েছিলেন। মুম্বই যদিও তাঁকে ডেথ ওভারে বল করায়নি। তাতেও সাফল্য পেতে সমস্যা হয়নি। নিলামে ৩০ লক্ষ টাকা দিয়ে কিনেছিল মুম্বই। তাঁর মতো ক্রিকেটারদের খুঁজে আনার জন্য কৃতিত্ব দেওয়া হয়েছে মুম্বইয়ের স্কাউটদেরও। অশ্বনী এখনও পর্যন্ত দু’টি ম্যাচে পাঁচটি উইকেট নিয়েছেন। পঞ্জাবে জন্ম অশ্বনীর। ২৩ বছরের এই বাঁহাতি পেসার নিজেকে প্রমাণ করার জন্য এ বারের আইপিএলে আরও সুযোগ পাবেন তা নিশ্চিত।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement