মহম্মদ শামি। ছবি: পিটিআই।
দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে দুই টেস্টের সিরিজ়ের জন্য ভারতীয় দল ঘোষণা করা হল। নজর ছিল মহম্মদ শামির দিকে। তিনি জায়গা পাবেন কি না সেই আলোচনা চলছিল। দেখা গেল, শামির দিকে নজর দিলেন না অজিত আগরকরেরা। আরও একটি সিরিজ়ে দলের বাইরে বাংলার শামি। জায়গা পেলেন না বাংলার অভিমন্যু ঈশ্বরণও। তবে ফিরলেন বাংলার আকাশদীপ ও ঋষভ পন্থ। অর্থাৎ, বাংলার এক পেসার জায়গা পেলেন। আর এক পেসার পেলেন না। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে চতুর্থ টেস্টে চোট পাওয়ার পর থেকে মাঠের বাইরে ছিলেন পন্থ। চোট সারিয়ে দলে ফিরেছেন তিনি। পন্থ ফেরায় বাদ গিয়েছেন নারায়ণ জগদীশন। চোট সারিয়ে ফিরেছেন আকাশদীপ। বাদ পড়েছেন প্রসিদ্ধ কৃষ্ণ। ওয়েস্ট ইন্ডিজ় সিরিজ়ের দল থেকে এই দু’টিই বদল হয়েছে।
চোট সারিয়ে ফিরলেও ভারতের টেস্ট দলে জায়গা পাচ্ছিলেন না শামি। অস্ট্রেলিয়া সফরের দল ঘোষণার পর আগরকর বলেছিলেন, শামি কতটা ফিট সেই তথ্য তাঁদের কাছে নেই। শামি পাল্টা বলেছিলেন, তথ্য দেওয়া তাঁর কাজ নয়। বোর্ডের কেউ তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেননি। তার পর দু’টি রঞ্জি ম্যাচে ১৫ উইকেট নেন তিনি। অনেকে মনে করেছিলেন, এর পর ভারতীয় দলে জায়গা পাওয়া উচিত তাঁর। কিন্তু ত্রিপুরার বিরুদ্ধে ২৫ ওভার বল করে একটিও উইকেট পাননি শামি। অনেকে মনে করছেন, রঞ্জির তৃতীয় রাউন্ডের ম্যাচ দেখে দল নির্বাচন করতে চেয়েছিলেন আগরকরেরা। সেখানে ভাল করলে হয়তো জায়গা পেতেন শামি। কিন্তু খারাপ খেলায় আরও এক বার দলের বাইরেই থাকলেন।
আগরকরদের মনোভাব থেকে স্পষ্ট, শামির দিকে আর তাকাচ্ছেন না তাঁরা। দেশের মাটিতেই খেলার সুযোগ পাচ্ছেন না। অর্থাৎ, বিদেশের সিরিজ়ে তাঁর সুযোগ পাওয়ার সম্ভাবনা প্রায় নেই। সাদা বলের ক্রিকেটেও আর ভাবা হচ্ছে না শামিকে। জল্পনা শুরু হয়েছে, ভারতের জার্সি গায়ে শামির হয়তো আর মাঠে নামা হবে না।
শামির মতোই ব্রাত্য হয়ে পড়ছেন ঈশ্বরণ। ভারতের টেস্ট দলে এখন ওপেন করছেন যশস্বী জয়সওয়াল ও লোকেশ রাহুল। অধিনায়ক শুভমন গিলও ওপেন করেছেন। ফলে যদি এই দুই ব্যাটারের কেউ না খেলতে পারেন, তৃতীয় ওপেনিং বিকল্প রয়েছে গৌতম গম্ভীরদের হাতে। সেই কারণেই হয়তো ঈশ্বরণের কথা ভাবছেন না নির্বাচকেরা। জায়গা পাননি সরফরাজ় খানও। মিডল অর্ডারে অধিনায়ক শুভমন, দেবদত্ত পাড়িক্কল, ধ্রুব জুরেলরা থাকায় হয়তো সরফরাজ়ের কথা ভাবছেন না নির্বাচকেরা।
চোট সেরে গেলে পন্থ যে ভারতের টেস্ট দলে ফিরবেন, তা নিশ্চিত ছিল। পন্থ না থাকায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ের বিরুদ্ধে দু’টি টেস্টে খেলেছিলেন ধ্রুব জুরেল। শতরানও করেছিলেন। কিন্তু পন্থ ফেরায় হয়তো বসতে হবে তাঁকে। তবে শুধু ব্যাটার হিসাবে কি তাঁকে খেলানোর কথা ভাববেন গম্ভীরেরা? তেমনটা হলে জায়গা হারাতে পারেন সাই সুদর্শন।
ভারতের বোলিং আক্রমণে একটিই বদল হয়েছে। প্রসিদ্ধের জায়গায় ফিরেছেন আকাশদীপ। এক পেসারের বদলে আর এক পেসারকে নেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ, তিন স্পিনার-অলরাউন্ডার, এক পেসার-অলরাউন্ডার, এক বিশেষজ্ঞ স্পিনার ও তিন বিশেষজ্ঞ পেসারই রেখেছেন নির্বাচকেরা।
দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ভারতের প্রথম টেস্ট হবে কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে। ১৪ নভেম্বর থেকে শুরু খেলা। ২২ নভেম্বর থেকে শুরু দ্বিতীয় টেস্ট। খেলা হবে গুয়াহাটিতে।
দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজ়ে ভারতের টেস্ট দল—
শুভমন গিল (অধিনায়ক), যশস্বী জয়সওয়াল, লোকেশ রাহুল, সাই সুদর্শন, দেবদত্ত পাড়িক্কল, ধ্রুব জুরেল, ঋষভ পন্থ, রবীন্দ্র জাডেজা, নীতীশ কুমার রেড্ডি, অক্ষর পটেল, ওয়াশিংটন সুন্দর, জসপ্রীত বুমরাহ, কুলদীপ যাদব, মহম্মদ সিরাজ, আকাশদীপ।
দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজ়ের পর হবে এক দিনের সিরিজ়। তার আগে দক্ষিণ আফ্রিকা ‘এ’ দলের বিরুদ্ধে তিনটি এক দিনের ম্যাচ খেলবে ভারত ‘এ’। সেই দলও ঘোষণা করা হয়েছে।
ভারত ‘এ’ দল— তিলক বর্মা (অধিনায়ক), রুতুরাজ গায়কোয়াড় (সহ-অধিনায়ক), অভিষেক শর্মা, রিয়ান পরাগ, ঈশান কিশন, আয়ুষ বদোনি, নিশান্ত সিন্ধু, বিপরাজ নিগম, মানব সুথার, হর্ষিত রানা, অর্শদীপ সিংহ, প্রসিদ্ধ কৃষ্ণ, খলিল আহমেদ, প্রভসিমরন সিংহ।