পাকিস্তান ক্রিকেট দল ও পাক বোর্ডের চেয়ারম্য়ান মহসিন নকভি। —ফাইল চিত্র।
হুমকি দিলেও তা কাজে করে দেখাতে পারল না পাকিস্তান। বিশ্ব ক্রিকেটের মঞ্চে আরও এক বার মুখ পুড়ল তাদের। ভারতীয় ক্রিকেটারেরা হাত না মেলানোয় ম্যাচ রেফারি অ্যান্ডি পাইক্রফ্টকে সরিয়ে দেওয়ার যে দাবি তারা করেছিল, তা খারিজ করে দিয়েছে আইসিসি। পাকিস্তান হুমকি দিয়েছিল, তাদের দাবি মানা না হলে এশিয়া কাপে সংযুক্ত আরব আমিরশাহির বিরুদ্ধে খেলবে না তারা। সেই হুমকি সার। খেলছেন সলমন আলি আঘারা।
‘ইএসপিএন ক্রিকইনফো’ জানিয়েছে, প্রতিযোগিতা থেকে নাম সরিয়ে নেওয়ার কোনও পরিকল্পনা পাকিস্তানের নেই। তাই আইসিসি-র জবাবের আগেই তারা সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছিল, যে এশিয়া কাপের বাকি ম্যাচ খেলবে। আমিরশাহিতেই থাকবে পাক দল। বুধবার আমিরশাহির বিরুদ্ধে গ্রুপের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ খেলতে নামবে পাকিস্তান। সেই ম্যাচের উপর নির্ভর করছে, ভারতের পর এই গ্রুপ থেকে দুই দলের মধ্যে কারা সুপার ফোর-এ যাবে।
ভারত-পাকিস্তান ম্যাচে টসের পর পাক অধিনায়ক সলমনের সঙ্গে হাত মেলাননি ভারত অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদব। খেলা শেষেও সেই ছবি দেখা যায়। সাজঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেন ভারতীয় ক্রিকেটারেরা। প্রতিবাদে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান বয়কট করে পাকিস্তান। এই ঘটনায় ম্যাচ রেফারি পাইক্রফ্টকে নিশানা করে পাকিস্তান। তাঁর অপসারণ চেয়ে সমাজমাধ্যমে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের চেয়ারম্যান মহসিন নকভি লেখেন, ‘‘আইসিসির দ্বারস্থ হয়েছে পিসিবি। ম্যাচ রেফারির বিরুদ্ধে আইসিসির আচরণবিধি এবং এমসিসির নিয়ম লঙ্ঘিত হয়েছে। এশিয়া কাপ থেকে ম্যাচ রেফারিকে অবিলম্বে অপসারণের দাবি জানিয়েছে পিসিবি।’’
পাকিস্তানের অভিযোগ ছিল, ম্যাচ রেফারি আইসিসি-র আচরণবিধি এবং এমসিসি-র নিয়ম লঙ্ঘন করেছেন। কিন্তু নিয়ম অনুযায়ী, প্রতিপক্ষ দলের ক্রিকেটারদের সঙ্গে হ্যান্ডশেক করা, তাঁদের অভিনন্দন বা শুভেচ্ছা জানানো রীতি বা ক্রিকেটীয় সৌজন্য। বাধ্যতামূলক নয়। স্বাভাবিক ভাবেই ম্যাচ রেফারি হিসাবে পাইক্রফ্ট নিয়ম-বিরুদ্ধ কিছু করার পরামর্শ দেননি। তাই তাঁর বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেয়নি আইসিসি। পাক বোর্ডকে চিঠি দিয়ে আইসিসি জানিয়ে দিয়েছে, পাইক্রফ্ট ম্যাচ রেফারি থাকছেন। তাঁকে সরানো হচ্ছে না।
আইসিসি যে পাকিস্তানের দাবি মানবে না, তা আগে থেকেই নিশ্চিত ছিল। কারণ, পাকিস্তানের এই অভিযোগের কোনও ভিত্তি ছিল না। ক্রিকেটে হ্যান্ডশেক নিয়ে কোনও আইন বা নিয়ম নেই। সৌজন্যের খাতিরে ক্রিকেটারেরা তা করে থাকেন। কোনও পরিস্থিতিতে সেই সৌজন্য না-ও দেখাতে পারেন তাঁরা। ভারত ঠিক সেটাই করেছে। তার জন্য কাউকে শাস্তি দেওয়া যায় না। সেই সিদ্ধান্তই নিয়েছে আইসিসি। সেই কারণেই হয়তো আগে থেকেই পাকিস্তান সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছিল, এশিয়া কাপের বাকি ম্যাচে খেলবে তারা।