World Cup Ticket Black Marketing

গ্রেফতার আরও ৫, হাজিরা দুই সিএবি কর্তারও

এ বার যে ভাবে টিকিট বিক্রি হয়েছে তা নিয়ে অনেকেই ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। সেই তালিকায় আছেন সিএবি-র আজীবন সদস্যেরাও।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ নভেম্বর ২০২৩ ০৭:০২
Share:

ইডেন গার্ডেন্স। —ফাইল চিত্র

ইডেনে বিশ্বকাপ ক্রিকেট ম্যাচের টিকিট নিয়ে কালোবাজারির অভিযোগে আরও পাঁচ জনকে গ্রেফতার করেছে লালবাজারের গুন্ডাদমন শাখা। পুলিশ জানিয়েছে, ময়দান এলাকা থেকে ধৃত ওই পাঁচ জনের কাছ থেকে ৩৩টি টিকিট বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। এ নিয়ে মোট ২১ জন ধৃতের কাছ থেকে ১২৭টি টিকিট উদ্ধার করা হলেও সেগুলি কোথা থেকে এসেছে, তা নিয়ে ধন্দে পড়েছে পুলিশ। কারণ, সিএবি দাবি করেছে যে তারা কোনও টিকিট বিক্রি করেনি। যদিও পুলিশের একাংশের মতে, ধৃতেরা নেহাতই এই কালোবাজারি চক্রের দালাল। এর পিছনে কোনও সংগঠিত চক্র থাকতে পারে। তবে সেই সংগঠিত চক্র কে চালাচ্ছে, তার কোনও স্পষ্ট উত্তর পুলিশের কাছে নেই। পুলিশি ধরপাকড় চললেও শনিবারও ইডেনে ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচের টিকিট নিয়ে কালোবাজারির অভিযোগ উঠেছে। ময়দান এলাকায় ৮০০ টাকার টিকিট কয়েক হাজার টাকায় হাতবদল হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

Advertisement

বস্তুত, এ বার যে ভাবে টিকিট বিক্রি হয়েছে তা নিয়ে অনেকেই ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। সেই তালিকায় আছেন সিএবি-র আজীবন সদস্যেরাও। টিকিট না পেয়ে সিএবি-র বিরুদ্ধে ময়দান থানায় অভিযোগও দায়ের করেছেন এক আজীবন সদস্য। প্রসঙ্গত, টিকিট নিয়ে এমন কালোবাজারি চললেও সিএবি-র শীর্ষকর্তারা তদন্তের ব্যাপারে পুলিশের সঙ্গে কত দূর সহযোগিতা করছেন, তা নিয়েও অনেকের মনে প্রশ্ন আছে। পুলিশের খবর, কালোবাজারিরা কী ভাবে টিকিট জোগাড় করেছে তা জানতে সিএবি-র সভাপতি স্নেহাশিস গঙ্গোপাধ্যায় বা তাঁর প্রতিনিধিকে ময়দান থানায় হাজির হওয়ার জন্য নোটিস দিয়েছিল লালবাজার। শুক্রবার তাঁরা কেউ আসেননি। সিএবি দাবি করে, তাঁরা ব্যস্ত থাকায় পুলিশের কাছে যেতে পারেননি। শনিবার তাঁদের ফের হাজিরার চিঠি দেয় পুলিশ। তার পরে বিকেল ৫টা নাগাদ সিএবি-র সচিব নরেশ ওঝা এবং আর এক প্রতিনিধি বিশ্বপতি সেন ময়দান থানায় হাজির হন।

দুই কর্মকর্তার হাজিরার আগে এ দিন বেলা ১২টা নাগাদ লালবাজারে পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলের চেম্বারে যান সিএবি সভাপতি। দু’জনের প্রায় আধ ঘণ্টা আলোচনাও হয়েছে। পুলিশ সূত্রের খবর, ওই আলোচনার পরেই দুই কর্মকর্তা ময়দান থানায় হাজিরা দেন। সেখানে গিয়ে তাঁরা টিকিট বিক্রি নিয়ে সিএবি-র তরফে ব্যাখ্যা দিয়েছেন বলে খবর। এ দিন পুলিশের সামনে হাজিরা দেন খেলার টিকিট বিক্রির দায়িত্বে থাকা বেসরকারি সংস্থার দুই কর্তাও। তাঁদের বক্তব্য শুনেছেন তদন্তকারীরা এবং টিকিটের হিসাব খতিয়ে দেখছেন। প্রয়োজনে তাঁদের ফের তলব করা হতে পারে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

Advertisement

লালবাজার জানিয়েছে, ইডেনের মোট টিকিট প্রায় ৬৭ হাজার। তার মধ্যে বেসরকারি সংস্থাটি অনলাইনে ১৮,০৭৫ টিকিট অনলাইনে বিক্রি করেছে। ‘কমপ্লিমেন্টারি টিকিট’ ২০,১৬৮টি। তিন হাজার সদস্যকে অনলাইনে টিকিট দিয়েছে বলে সিএবি-র দাবি। বাকি ২৫,৯৭৫টি টিকিট সিএবি এবং বিসিসিআই-এর হাতে ছিল। সিএবি-র প্রতিনিধি পুলিশকে জানিয়েছেন, তারা ২৫,৯৭৫টি টিকিট অধীনস্থ ক্লাবগুলিকে বিক্রি করতে দিয়েছিলেন। সিএবি সরাসরি কোনও টিকিট বিক্রি করেনি।

পুলিশের বক্তব্য, কমপ্লিমেন্টারি টিকিট বা কোন ক্লাবকে কত টিকিট দেওয়া হয়েছে তা বার করতে পারলেই কালোবাজারির উৎস জানা যেতে পারে। যদিও অনেকের প্রশ্ন, আজ, রবিবার খেলা মিটে গেলেই টিকিটের কালোবাজারির তদন্ত থমকে যাবে না তো?

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন