ঠিক যা সন্দেহ করেছিলাম, তাই হল। গৌতম গম্ভীর দিল্লি ডেয়ারডেভিলসের অধিনায়কত্ব ছেড়ে দেওয়ায় গোটা দল তেতে ছিল পাল্টা জবাব দেওয়ার জন্য। ছ’দিনের ছুটি থেকে ফিরেই যার মাঝে পড়ে গেলাম আমরা। দিল্লি দারুণ খেলেছে। আমাদের ভালমতোই হারিয়েছে ওরা। প্রত্যেকটা ম্যাচ থেকেই কিছু শেখার থাকে। সে ম্যাচ জিতি বা হারি। তবে অনেক সময় বেশি শিক্ষা নিতে গিয়ে উল্টো ফলও হতে পারে। তাই আমাদের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ছিল এই হার থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে পরের ম্যাচে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের বিরুদ্ধে জয়ে ফেরা।
সে দিক থেকে আমাদের ঘুরে দাঁড়ানোটা খুব তৃপ্তিদায়ক ছিল। প্রতিযোগিতায় হার-জিতের অনুপাতটা ভাল রাখতে প্রত্যেকটা দলই চায়। তবে আইপিএলের এই পর্যায়ে আমাদের ৪:৪ অনুপাত নিয়ে আমি খুব অখুশি নই। বরং আমার মনে হয় এই ফলের উপর ভিত্তি করে প্রথম দুই দলের মধ্যে উঠে আসার লড়াই করা যায়। অনেক সময়ই কেকেআরের চার, পাঁচ বা ছ’টা টানা ম্যাচ জয়ের দলে আমি ছিলাম। আমরা তাই জানি, আবার সে রকম করে দেখানো অসম্ভব নয়। আমাদের এই দলটারও সেই ক্ষমতা নিয়ে আমার কোনও সন্দেহ নেই। আমরা প্রায় একই দল ধরে রাখছি প্রতি ম্যাচে। কেকেআরের প্রত্যেক ক্রিকেটার জানে, দলে তাঁর জায়গা কোথায়। ক্রিকেটারদের উপর দল আস্থা রাখলে, তাঁদের আত্মবিশ্বাস বাড়ে। তবে একই সঙ্গে এটাও গুরুত্বপূর্ণ, যদি কোনও ক্রিকেটারকে কোনও ম্যাচ থেকে বাদ দেওয়া হয়, তা হলে কেন, কোন পরিস্থিতিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, সে যেন বুঝতে পারে।
আমাদের দলে চোট-আঘাতের সমস্যা রয়েছে। প্রতিযোগিতার অন্য দলগুলোরও তাই। তবে চোটের জন্য কোনও ক্রিকেটারকে না পাওয়ার জন্য হা হুতাশ করা বা তার অজুহাত দেওয়া শুরু করলে গোটা পরিকল্পনা থেকেই সরে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। দলের প্রত্যেককেই তাই এর সঙ্গে মানিয়ে নিতে হবে। চোট-আঘাত দলের বিকল্প পরিকল্পনা কতটা জোরদার সেটারও একটা পরীক্ষা। আগেও আমি এ কথা বলেছি। তবে আইপিএল এমন একটা প্রতিযোগিতা যেখানে সাপোর্ট স্টাফের উপরও রান তোলা বা উইকেট নেওয়ার মতোই চাপ থাকে। তাই কেউ যদি এই নিয়ে অভিযোগ করতে থাকে তা হলে সে চ্যালেঞ্জটাই হেরে গেল। অনেক সময় কোনও ক্রিকেটার চোট থেকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই সুস্থ হয়ে যায়। কিন্তু এখানে তাঁর শুশ্রূষার জন্য বিশ্রাম নেওয়ার সময় নেই, চোট নিয়েই ১২ ঘণ্টা সফর করতে হয়। আইপিএল এ রকমই। তবে সূচি অনুযায়ী, আমাদের ম্যাচের মধ্যে এখন দুই বা এক দিনের বিশ্রাম নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। আশা করি তাতে আমাদের সুবিধে হবে।
চেন্নাই সুপার কিংসের বিরুদ্ধে ম্যাচ মানেই বিরাট ব্যাপার। এম এস ধোনি তো এখন নিয়মিত সংবাদ শিরোনামে উঠে আসছে। তবে সিএসকে মানে কিন্তু একা ধোনি নয়, ওদের হাতে আরও অস্ত্র রয়েছে। আমাদের সামনে এখনও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল প্রথম দুই স্থানের মধ্যে উঠে আসা। সেই লক্ষ্যে পুরনো ক্লিশে কথাটা চিরকালের সত্যি— একটা করে ম্যাচ ধরে এগোও। এখন আর কোনও অস্ত্র গোপন করে ম্যাচে নামা নয়, এখন আমাদের সর্বস্ব দিয়ে জয়ের জন্য ঝাঁপানোর সময়।