Achinta Sheuli

Achinta Sheuli: ছেঁড়া শাড়ি থেকে পদকের ঠাঁই আলমারি! চিন্তা মিটতে চলেছে সোনাজয়ী অচিন্ত্যের মায়ের

ছেলের সাফল্যে বুক গর্বে ভরে যেত। সেই সঙ্গে পদক কোথায় রাখবেন ভেবে চিন্তায় পড়তেন অচিন্ত্য শিউলির মা। সেই চিন্তা মিটছে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ অগস্ট ২০২২ ১৯:৪৮
Share:

নিজের বাড়ির সামনে অচিন্ত্য। ছবি পিটিআই

দেশ-বিদেশ থেকে একের পর এক পদক জিতে আনতেন ছেলে। আর বার বার চিন্তায় পড়তেন মা। ছেলের সাফল্যে বুক গর্বে ভরে যেত। সেই সঙ্গেই ভাবতেন, এত পদক রাখবেন কোথায়! এ বার সেই চিন্তা দূর হতে চলেছে পূর্ণিমা শিউলির। ছেলে কমনওয়েলথ গেমসে সোনা জিতে ফেরার পর তাঁর কাছে আব্দার করেছেন একটি আলমারি কিনে দেওয়ার। যাবতীয় পদক-ট্রফি সাজিয়ে-গুছিয়ে তুলে রাখতে চান তিনি।

Advertisement

কখনও দেওয়ালে পেরেক বেঁধে, কখনও ছেঁড়া শাড়িতে পুঁটলির মধ্যে পাকিয়ে ছোট ছেলে অচিন্ত্যর পদকগুলি রেখে দিতেন পূর্ণিমা। দু’কামরার ঘরে একটিই বিছানা। তার তলায় সাবধানে রেখে দিতেন সব পদক। সঙ্গে ছিল ট্রফিও। মাঝেমাঝেই চিন্তায় পড়তেন। সব ঠিক থাকবে তো? পূর্ণিমার আশা, আর সেই চিন্তা থাকবে না।

ছেলে বাড়ি ফেরার পর সব পদক বের করে রেখেছিলেন পূর্ণিমা। বলেছেন, “জানতাম ছেলে ফেরার পরে সাংবাদিক এবং সাধারণ মানুষ আসবে। তাই সব পদক আর ট্রফি বের করে রেখেছি, যাতে সবাই বুঝতে পারে অচিন্ত্য কতটা প্রভিভাবান। কখনও স্বপ্নেও ভাবিনি ও দেশের হয়ে সোনা জিতবে।”

Advertisement

পূর্ণিমা আরও বললেন, “ঈশ্বর মুখ তুলে তাকিয়েছেন। এত মানুষ বাড়িতে এসেছে। সত্যিই মনে হচ্ছে এ বার সময় বদলাতে চলেছে। কেউ বুঝতে পারবে না যে অচিন্ত্যকে মানুষ করতে কতটা কষ্ট করেছি আমি। রোজ ঠিক করে খাবার তুলে দিতে পারতাম না। অনেক দিন এমনও গিয়েছে যখন না খেয়ে ওরা ঘুমিয়ে পড়ত। জানি না কী ভাবে এত কিছু সম্ভব হল।”

ভারোত্তোলনের পাশাপাশি দুই ভাই মায়ের সঙ্গে এক সময় জরির কাজ করেছেন। মাল ওঠানো-নামানোর কাজও করতে হয়েছে। সেই প্রসঙ্গে পূর্ণিমা বলেছেন, “আমার কাছে আর কোনও উপায় ছিল না। দুই ছেলে কাজ না করলে পরিবারকে বাঁচাতে পারতাম না।”

সোনাজয়ী অচিন্ত্যর মুখেও মায়ের কথা। বলেছেন, “আজ যা অর্জন করেছি তা মা এবং কোচ অষ্টম দাসের জন্যেই। ওদের ছাড়া কিছুই সম্ভব হত না। বাবা মারা যাওয়ার পর জীবন খুবই কঠিন হয়ে গিয়েছিল। এখন আমরা দুই ভাই রোজগার করছি। তবে এখনও আর্থিক সমস্যা পুরোপুরি মেটেনি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন