ইন্দোনেশিয়ায় দেশের হয়ে নামছে মদনপুরের ত্রীয়াসা

ইন্দোনেশিয়ায় এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে যোগ দিতে যাওয়ার আগে শনিবার বিকালে দিল্লি থেকে মদনপুরের বাড়িতে দাদাকে ফোন করেছিল সাইক্লিস্ট ত্রীয়াসা পাল। আগামী ৮ জানুয়ারি সেখানকার মাঠে দেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করতে নামবে বছর ষোলোর মেয়েটি।  

Advertisement

সৌমিত্র সিকদার 

চাকদহ শেষ আপডেট: ০৭ জানুয়ারি ২০১৯ ০১:৪২
Share:

সাইক্লিস্ট ত্রীয়াসা পাল।—নিজস্ব চিত্র।

সপ্তাহান্তেই নয়াদিল্লি থেকে বিমানে উড়ে গিয়েছে সে।

Advertisement

তার আগে ফোনে বলে গিয়েছে— ‘‘দাদা, আজ আমি রওনা হচ্ছি। দেখবি ভাল ফল করব।’’

ইন্দোনেশিয়ায় এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে যোগ দিতে যাওয়ার আগে শনিবার বিকালে দিল্লি থেকে মদনপুরের বাড়িতে দাদাকে ফোন করেছিল সাইক্লিস্ট ত্রীয়াসা পাল। আগামী ৮ জানুয়ারি সেখানকার মাঠে দেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করতে নামবে বছর ষোলোর মেয়েটি।

Advertisement

বছর পাঁচেক বয়েসে দৌড়তে শুরু করেছিল চাকদহ থানার মদনপুরের ১ নম্বর গোবিন্দগরের বাসিন্দা ত্রীয়াসা। এলাকার মাঠে মামা তাপস সেনের কাছে এ্যাথলিট হিসাবে তার প্রশিক্ষণ শুরু হয়েছিল। গোড়ায় ১০০ ও ২০০ মিটার দৌড়ত সে। ছোট থেকে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় যোগও দিয়ে এসেছে। বেশ কিছু পুরস্কারও পেয়েছে। তার ইচ্ছা ছিল, ‘সাই’ ক্যাম্পে থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে আরও ভাল জায়গায় পৌছাবে। সে কারণে দিল্লিতে পরীক্ষা দিতে গিয়েছিল। সেখানেই তার জীবন পাল্টে যায়। দৌড়বিদ হিসাবে নয়, সাইক্লিস্ট হিসাবে উঠে আসে সে।

তিন বছর আগে দিল্লির মাঠে পরীক্ষা দিতে গিয়েছিল ত্রীয়াসা। সেখানে সাইক্লিং কোচ অমর সিংহের নজরে পড়ে যায় সে। তিনি বুঝতে পারেন, সাইক্লিস্ট হলে মেয়েটা ভাল জায়গায় পৌঁছতে পারবে। তাকে ডেকে বিষয়টি বলেন অমর। ত্রীয়াসা জানায় তার মামাকে। মামা তাপস বলেন, “অমর সিংহ আমাকে বুঝিয়েছিলেন, অ্যাথলেটিক্সে লড়াইটা অনেক বেশি। ত্রীয়াসা যদি সাইক্লিস্ট হয়, অল্প সময়ে খুব ভাল জায়গায় পৌঁছতে পারবে। এ কথা শোনার পরে আমি রাজি হয়ে যাই।’’

তাপস জানান, জেলার সাইক্লিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের বাণী ঘোষ (এখন প্রয়াত) বিভিন্ন ভাবে সহযোগিতা করেছেন ত্রীয়াসাকে। প্রথমে জেলা সাইক্লিং অ্যাসোসিয়েশনের অধীনে প্রশিক্ষণ নিচ্ছিল ত্রীয়াসা। পরে দিল্লি চলে যায়। প্রায় এক বছর সেখানে থেকে সে প্রশিক্ষণ নিয়েছে। বাড়ির সঙ্গে যোগাযোগ ছিল ফোনে।

মদনপুর ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের ১ নম্বর গোবিন্দনগরে চাকদহ-কল্যাণী রাজ্য সড়কের ধারে বাড়ি ত্রীয়াসাদের। দুই ভাই বোন। সে ছোট। শিমুরালি উপেন্দ্র বিদ্যাভবন বালক বিদ্যালয়ের কলা বিভাগের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী সে। বাবা ত্রিদীপ পাল এখন কিছু করতে পারেন না। দাদা আকাশ পাল পানীয় জলের ব্যবসা করে। আকাশ বলেন, ‘‘রবিবার বোন বিমান ধরে ইন্দোনেশিয়ার উদেশ্যে রওনা হয়েছে। শনিবার আমায় ফোন করে বাড়ির সকলের খোঁজখবর নিচ্ছিল। আশা করছি, ও ভাল করবে।”

আপাতত সুখবরের জন্য অপেক্ষা করছে গোবিন্দনগর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন