জলাতঙ্ক কাটছে না আইপিএলে।
বৃহস্পতিবার আদালতের নির্দেশে প্রথম ম্যাচ আয়োজন করার দায়িত্ব পাওয়ার পর হাসি হাসি মুখে ঘুরছিলেন মুম্বই ক্রিকেট সংস্থা ও বোর্ডের কর্তারা। কিন্তু শনিবার ওয়াংখেড়েতে মহারাষ্ট্র ডার্বি চলার দিনে সেই কর্তাদেরই দেখা গেল মুখ চুন করে ঘুরতে।
নেপথ্যে মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নাবিশের একটি মন্তব্য। শুক্রবার বিকেলে ওরলির ন্যাশনাল স্পোর্টস ক্লাব অব ইন্ডিয়ায় ক্যাটরিনা, জ্যাকলিন ফার্নান্ডেজরা আইপিএলের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান করতে ঢুকছেন তখনই শোনা যায়, মুখ্যমন্ত্রী বলে দিয়েছেন, ‘‘আইপিএল যদি মহারাষ্ট্র থেকে সরে যায়, তা হলে আমাদের কোনও অসুবিধা নেই। কারণ মানুষের স্বার্থ সবার আগে।’’ সূত্রের খবর, রাজ্য প্রশাসনের তরফে ইতিমধ্যেই থানে এবং লাতুরে পুলিশকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে, সেখানে নাকি জল নিয়ে যখন তখন দাঙ্গা বাঁধতে পারে।
এই পরিস্থিতিতে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্যের পরই কপালের ভাঁজ বেড়েছে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের কর্তাদের। জানা যাচ্ছে, মুখে কিছু না বললেও, ইতিমধ্যেই মুম্বই, পুণে এবং নাগপুরের পরিবর্ত জায়গা খুঁজতে শুরু করে দিয়েছেন বিসিসিআই কর্তারা। যার মধ্যে নাকি রয়েছে ইন্দওর, রাঁচির মতো বেশ কিছু শহর।
এ রকম ‘টাগ অব ওয়্যার’ পরিস্থিতিতে এ দিন ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের সচিব অনুরাগ ঠাকুর মিডিয়ার সামনে বলে দিলেন, ‘‘সরকারকে হয় জল না হলে অর্থ—দু’টোর মধ্যে কোনও একটা বেছে নিতে হবে। আইপিএল থেকে রাজ্যের কোষাগারে ১০০ কোটি টাকা জমা পড়বে। এখন ম্যাচ যদি সরে যায়, তা হলে রাজ্যের সামনে কিন্তু সেই আর্থিক ক্ষতিও অপেক্ষা করে থাকবে।’’
ক্রিকেট কর্তাদের কারও কারও বক্তব্য, বিষয়টি নিয়ে অহেতুক রাজনীতি করা হচ্ছে। তাদের যুক্তি আইপিএলের ১৯ টি ম্যাচে পিচ সংরক্ষণের যে পরিমাণ জল ব্যবহার করা হচ্ছে তা রাজ্যের মোট জলসম্পদের এক শতাংশেরও কম। যদি এ ব্যাপারে কড়া ভাবে নজর দেওয়া হয়, তা হলে কেন চিনি শিল্পকে ছাড় দেওয়া হবে। সেখানে নাকি সেচের কাজে ব্যবহারযোগ্য ৬০ শতাংশ জল ব্যবহার করা হচ্ছে।
জল নিয়ে আগামী মঙ্গলবার মুম্বই হাইকোর্টে পরবর্তী শুনানির দিনেও ঝড় উঠতে পারে। উদ্বোধন এবং প্রথম ম্যাচ হয়ে গেলেও মুম্বই, পুণে ও নাগপুরের বাকি ম্যাচগুলোর ভাগ্য রবিবার রাত পর্যন্ত বিশ বাঁও জলে।