টস জিতে রান তাড়া করা আর দুর্দান্ত বোলিং যদি শনিবার কলকাতা নাইট রাইডার্সের জয়ের প্রথম দুটো কারণ হয়, তা হলে তিন নম্বর এবং সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ ফ্যাক্টর অবশ্যই আন্দ্রে রাসেল।
জামাইকান অলরাউন্ডার কার্যকরী সিমার। লোয়ার মিডল অর্ডারে দারুণ ব্যাটও করে। গত এক বছর ধরেই দেখছি, ক্রিকেটার হিসেবে অসাধারণ উন্নতি করেছে রাসেল। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে দুর্দান্ত ফর্মে ছিল। বিগ ব্যাশের পর বিশ্বকাপেও। তার পর এখন আইপিএলেও পরপর দুটো ম্যাচে ভাল খেলে দিল। ইডেনের ওই ম্যাচটা গেইল-ঝড় কেকেআরের হাত থেকে ছিনিয়ে নিয়েছিল, কিন্তু পঞ্জাবের সেই সৌভাগ্য হল না। টিম যে সময় ধসের মুখে দাঁড়িয়ে, তখন ৩৬ বলে ৬৬ রানের ইনিংসে ম্যাচটা একাই জিতিয়ে দিল রাসেল। মনে রাখবেন, তার আগে ও দুটো উইকেট নিয়েছে। আর অবিশ্বাস্য একটা ক্যাচে আউট করেছে গ্লেন ম্যাক্সওয়েলকে।
সত্যিকারের অলরাউন্ডার বলতে যা বোঝায়, রাসেল হল ঠিক তাই। ওর ফিল্ডিং ধারাবাহিক ভাবে দুর্দান্ত। যে দিন নিশ্চিত ছয় বাঁচিয়ে দিল্লিকে জিতিয়ে দিল ময়ঙ্ক অগ্রবাল, সে দিন রাসেলের দুর্ধর্ষ ফিল্ডিং আরও এক বার দেখিয়ে দিল, টি-টোয়েন্টি টিমে একজন ভাল ফিল্ডার কত বড় সুবিধে!
রাসেলের ব্যাটিংয়ের তিনটে মন্ত্র হল গায়ের জোর, টাইমিং আর সঠিক বল বেছে নেওয়া। এই তিনটে জিনিস যত ক্লিক করবে, রাসেল তত ধারাবাহিক হতে থাকবে। শনিবারের ইনিংসটা ধরুন। এখানে গায়ের জোর তো ছিলই, সঙ্গে টাইমিংটাও একদম ঠিকঠাক রেখে গিয়েছে। বেশির ভাগ বলই কিন্তু ওর ব্যাটের মাঝখানে লেগেছে। প্লেসমেন্টটাও দেখলাম বেশ ভাল। রাসেলের আর একটা প্লাস পয়েন্ট হল, ও স্পিনটা ভাল খেলতে পারে। বেশির ভাগ বিদেশি ব্যাটসম্যান নিয়ে যেখানে বলা হয় যে ওরা স্পিনারদের সামলাতে পারবে তো? বা, মাঝের ওভারগুলো কী করে খেলবে? রাসেল নিয়ে কিন্তু আপনার সে রকম চিন্তার কোনও কারণ নেই।
শনিবারের পর ‘ক্যারিবিয়ান কালিস’ হিসেবে বিখ্যাত রাসেলের সঙ্গে জাক কালিসের তুলনা উঠবেই। আমি কিন্তু ও সবে বিশ্বাস করি না। একটা কথাই শুধু বলব। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে রাসেল ম্যাচউইনার। কালিস নেই, তার জায়গায় এ বার রাসেল ফর্মে থাকায় দলের ব্যালান্সটা ঠিক থেকে গেল।