ফুরফুরে: মুম্বইয়ে একটি অনুষ্ঠানে ভারতের অধিনায়ক বিরাট কোহালি। মঙ্গলবার। ছবি:পিটিআই
প্রায় সারা বছর ধরেই ক্রিকেট। কত জন্মদিন-হোলি-দিওয়ালি যে পরিবারের থেকে দূরে কাটিয়েছেন বিরাট কোহালি, মহেন্দ্র সিংহ ধোনিরা, তার কোনও হিসেব নেই। এ বার সুযোগ পেয়ে প্রাক্তন ও বর্তমান দুই অধিনায়কই তাঁদের ছুটি উপভোগ করছেন চুটিয়ে।
ধোনি যখন সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর ছুটির স্মরণীয় মুহূর্তগুলো ভক্তদের সঙ্গে ভাগ করে নিচ্ছেন, সদ্য বিবাহিত বিরাটের বলতে দ্বিধা নেই কতটা উপভোগ করছেন তাঁর এই ক্রিকেটহীন জীবন। মঙ্গলবার এক বাণিজ্যিক প্রচার অনুষ্ঠানে সাংবাদিক বৈঠকে তাঁর এই অবসর যাপনের প্রশ্নে বিরাট বলেন, ‘‘ভবিষ্যতে কথা ভেবে এই সময়গুলো খুব গুরুত্বপূর্ণ। খুব উপভোগ করছি ছুটিটা। আনন্দ করার মতো কোনও মুহূর্তই ছাড়ছি না। আমার শরীরেরও এটা প্রয়োজন। ক্রিকেটের জন্য শরীর, মনকে তো তৈরি রাখতে হবে।’’
ধোনি ইনস্টাগ্রামে তাঁর স্ত্রী সাক্ষী, কন্যা জিভা ও তাঁর পোষ্যদের নিয়ে কী ভাবে ছুটি কাটাচ্ছেন, তার কোলাজ পোস্ট করে লিখেছেন, ‘পরিবারের সঙ্গে মজার কিছু মুহূর্ত’। মিনিট খানেকের এই ছবি ও ভিডিওর কোলাজ দেখলেই বোঝা যায়, সত্যিই কেমন ফুরফুরে মেজাজে রয়েছেন প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক। দক্ষিণ আফ্রিকায় ওয়ান ডে ও টি-টোয়েন্টি সিরিজের পরে তিনি বোর্ডের কাছে বিশ্রাম চান আইপিএলের জন্য। দু’বছর নির্বাসন কাটিয়ে ফেরা তাঁর পুরনো ফ্র্যাঞ্চাইজি চেন্নাই সুপার কিংগসের হয়ে আইপিএলে যাতে তরতাজা হয়ে নামতে পারেন, সে জন্যই এই বিশ্রাম।
একই কারণে বিরাটও এই সময়টাকেই বিশ্রামের জন্য বেছে নিয়েছেন। গত বছর কলকাতায় টেস্ট খেলতে এসেই বিশ্রাম নেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। এখন সেই বিশ্রামই নিচ্ছেন তিনি। অনুষ্কা শর্মার সঙ্গে ক্রিকেটের বাইরে অন্যতম সেরা সময় কাটাচ্ছেন। টুইটার, ফেসবুকে দু’জনের ছবি দেখে সে রকম মনে হওয়াটাই স্বাভাবিক। এই ছুটির পরে যে তাজা শরীর ও মন নিয়ে আইপিএলে নামবেন, তা বলেও দিলেন বিরাট। বলেন, ‘‘এই ছুটিটা কাটানোর পরে আইপিএলে একেবারে তরতাজা হয়ে নামব। মানসিক ভাবেও অনেকটা এগিয়ে থেকে মাঠে নামতে পারব। টানা অনেকদিন খেলেছি। প্রায় সব ম্যাচেই খেলেছি। ছোট ছোট কয়েকটা চোটও হয়েছিল। আর বোধহয় শরীরের ওপর অত্যাচার করা উচিত নয়। বিশ্রামের ফলে এই চোটগুলো সারতে শুরু করেছে।’’
অবসর: ছুটির মেজাজে মেয়ে জিভা ও পোষ্যের সঙ্গে ধোনি। ছবি: টুইটার
মাঠে যেমন চনমনে, বিশ্রামে বাড়িতে তিনি ততটাই বিরক্তিকর বলে নিজেই বলছেন বিরাট। বলেন, ‘‘বিশ্রামের সময় আমাকে বা়ড়ি থেকে নড়ানো বেশ কঠিন। মাঝে মাঝে তা বিরক্তির পর্যায়েও চলে যায়।’’ তবে, ছুটিতে ক্রিকেট মাঠ থেকে দূরে থাকলেও, ক্রিকেটের খবরাখবর রাখছেন নিয়মিত ভারত অধিনায়ক।
অন্য প্রিয় খেলা ও তার তারকাদের নিয়েও বিরাট-আগ্রহ তুঙ্গে। এ দিনই যেমন বলছিলেন রজার ফেডেরারের কথা। বলেন, ‘‘রজার ফেডারার আমার সবচেয়ে প্রিয়। কি সুন্দর খেলে! ওরও একটা পরিবার আছে। তাদের যথেষ্ট গুরুত্ব দেয় ও। কারও পরোয়া না করে পরিবারের জন্য ঠিক সময় বার করে নেয়। ফিরে এসে সমস্ত যুক্তি-তর্ক নস্যাৎ করে দিয়ে ৩৬ বছর বয়সে আবার গ্র্যান্ড স্ল্যাম জিততে শুরু করে। এই স্রোতের বিরুদ্ধে হেঁটে প্রত্যেক দিন সফল হওয়ার জন্যই ফেডেরারকে এত শ্রদ্ধা করি আমি।’’
যুজবেন্দ্র চহালকে যে একটা ঘড়ি উপহার দিতে চান, তাও এ দিন জানিয়ে দেন বিরাট। কেন? ‘‘সবসময় দেরি করে ও। ঘড়ি দেখে যদি সময়টা ঠিক রাখতে পারে’’, হেসে বলে দেন চহালের ক্যাপ্টেন।