‘সামনের তিন ম্যাচে দিশাহারা কার্তিকের চাই নতুন রণনীতি’

কেকেআরের সমস্যা কোথায়? আমি প্রথমেই বলব, ব্যাটিং অর্ডারে। ক্রিস লিন এবং সুনীল নারাইন— দু’জনের দুর্বলতাই বুঝে ফেলেছে বিপক্ষ দলগুলো।

Advertisement

অশোক মলহোত্র

শেষ আপডেট: ১১ মে ২০১৮ ০৩:৫৫
Share:

শেষ চারে ওঠাই এখন চ্যালেঞ্জ কার্তিকদের।

চলতি আইপিএলের শেষ দিকে এসে কলকাতা নাইট রাইডার্সকে বেশ ছন্নছাড়া লাগছে। নাইটদের শেষ কয়েকটা ম্যাচ দেখে একটা ব্যাপার স্পষ্ট, দীনেশ কার্তিকদের রণনীতি বাকি দলগুলোর কাছে স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। এখন দ্রুত নতুন কিছু ভাবনা না ভাবলে কেকেআর কিন্তু লড়াই থেকে ক্রমশ পিছিয়ে পড়বে।

Advertisement

কেকেআরের সমস্যা কোথায়? আমি প্রথমেই বলব, ব্যাটিং অর্ডারে। ক্রিস লিন এবং সুনীল নারাইন— দু’জনের দুর্বলতাই বুঝে ফেলেছে বিপক্ষ দলগুলো। ব্যাটের সামনে বল পেলে উড়িয়ে দিচ্ছিলেন নারাইন। সেটা বুঝে কোনও বোলার আর ওঁকে ব্যাটের সামনে বল দিচ্ছেন না। শর্ট বল করছেন। বুধবার ইডেনেও সেই শর্ট বলের শিকারই হলেন নারাইন।

লিনের বিরুদ্ধে আবার স্পিন-অস্ত্র ব্যবহার করছে দলগুলো। দেখা যাচ্ছে, পাওয়ার প্লে-তে স্পিনের বিরুদ্ধে আদৌ সাবলীল নন লিন। পেসারদের হয়তো মেরে দিচ্ছেন, কিন্তু স্পিনের সামনে আটকে যাচ্ছেন অস্ট্রেলীয় ব্যাটসম্যান। আর মে মাসে বেশির ভাগ জায়গার পিচ স্পিনারদেরই সাহায্য করবে। যার ফলে পাওয়ার প্লে-তে কেকেআরের রানই শুধু কম হচ্ছে না, উইকেটও পড়ে যাচ্ছে। মিডল অর্ডারের ওপর খুব চাপও বাড়ছে।

Advertisement

আমার মতে, নারাইনকে নীচে নামিয়ে রবিন উথাপ্পাকে দিয়ে ইনিংস ওপেন করানো উচিত। মানছি, উথাপ্পা বড় রানের ইনিংস খেলতে পারছেন না, কিন্তু বেশ কয়েকটা ৩০ রানের ওপরে ইনিংস খেলেছেন। উথাপ্পার ওপরে দায়িত্ব দেওয়া হোক ওপেন করতে নেমে যতটা বেশি সম্ভব ইনিংস টেনে নিয়ে যাওয়ার। কার্তিককেও ওপরে উঠে আসতে হবে ব্যাটিং অর্ডারে। নাইট-অধিনায়ক বেশ ছন্দে আছেন। ওঁকে দায়িত্ব নিয়ে যত বেশি সম্ভব বল খেলতে হবে। তার পরে নীতীশ রানা, আন্দ্রে রাসেল আসুন।

তবে অধিনায়ক কার্তিককে আমার বেশ দিশাহারা লাগছে। ব্যাটিং অর্ডার যেমন ঠিক করে সাজাতে পারছেন না, তেমন কোন বোলারকে কখন আক্রমণে আনতে হবে, সেটাও বুঝতে পারছেন না। পীযূষ চাওলাকে দিয়ে কোনও ভাবেই পাওয়া প্লে বা শেষ দিকে বল করানো উচিত নয়। পীযূষ বড় লেগস্পিন করাচ্ছেন না। গুগলি বা ফ্লিপারের ওপর জোর দিচ্ছেন। ব্যাটসম্যানরা কিন্তু সেটা বুঝে যাচ্ছেন। মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে পীযূষ পাওয়া প্লে-তে কোনও প্রভাবই ফেলতে পারেননি। সেই অবস্থায় কার্তিক কী ভাবে ওঁকে শেষ ওভার দিলেন, তা মাথায় ঢুকছে না। ওই ওভারে ২২ রান দেওয়াটা কিন্তু আমার কাছে ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট। তা ছাড়া কার্তিককে দেখে মনে হচ্ছে চাপের মুখে মাথা ঠান্ডা রাখতে পারছেন না। পাওয়ার প্লে এবং শেষ দিকে কোনও স্পিনারকে বল দিতে হলে, নারাইনকেই দিতে হবে। ওর রহস্য এখনও ভেদ হয়নি। বছর দু’য়েক হল ইডেনের পিচ স্পিনারদের সাহায্য করছে না। বরং পেসাররা সাহায্য পায়। এ বার দল গড়ার সময় সে ব্যাপারটা কেন মাথায় রাখেনি কেকেআর টিম ম্যানেজমেন্ট, জানি না। মিচেল স্টার্ককে কেনা হল। সবাই জানে ও চোটপ্রবণ। অবশ্যই বিকল্প কাউকে রাখা উচিত ছিল। মিচেল জনসন বা টম কারেন কখনও স্টার্কের বিকল্প হতে পারে না। লিন বা রাসেলের বাইরে বিধ্বংসী কোনও বিদেশি ব্যাটসম্যান নেই। লিন ধারাবাহিক রান না পেলেও ওঁর জায়গায় কাউকে খেলানো যাচ্ছে না। দেখা যাচ্ছে, কেকেআরের রিজার্ভ বেঞ্চ একেবারেই তৈরি নয়।

দল বাছার সময় ফ্র্যাঞ্চাইজি মালিকদের একটা কথা মাথায় রাখা উচিত। ক্রিকেটীয় লোকজনের পরামর্শ মেনেই নিলামে নামতে হবে। বিশেষ করে যেখানে ভাল ভারতীয় ক্রিকেটার দলে রাখা খুব প্রয়োজন। নিলামের সময় কেকেআর সে দিকে নজর দেয়নি। যার ফলটা এখন ভুগতে হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন