চোট পেয়ে তিন মাস বাইরে দীপা

মাস দেড়েক বাদেই নামার কথা ছিল এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে। অক্টোবরে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে পদকের লক্ষ্যে দিল্লির সাইতে প্রতিদিন তাঁর প্রিয় ভল্ট প্রোদুনোভায় শান দিচ্ছিলেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ এপ্রিল ২০১৭ ০৩:৫৭
Share:

লড়াই: অস্ত্রোপচারের পরে এ বার সুস্থ হয়ে ওঠার চ্যালেঞ্জ। টুইটার

মাস দেড়েক বাদেই নামার কথা ছিল এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে। অক্টোবরে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে পদকের লক্ষ্যে দিল্লির সাইতে প্রতিদিন তাঁর প্রিয় ভল্ট প্রোদুনোভায় শান দিচ্ছিলেন। আর তার মাঝেই জাতীয় শিবিরে ফ্লোর এক্সারসাইজে ল্যান্ডিং করতে গিয়ে ঘটে গেল দুর্ঘটনা। এবং শেষ পর্যন্ত সোমবার মুম্বইতে গিয়ে হাঁটুতে করতে হল অস্ত্রোপচার।

Advertisement

যার জেরে তিন মাস ফ্লোর এবং বিম থেকে ছিটকে গেলেন দেশের সেরা জিমন্যাস্ট দীপা কর্মকার। রিও অলিম্পিক্সে ইতিহাস সৃষ্টি করা আগরতলার বঙ্গললনা যে স্বমহিমায় ফিরবেন তা নিয়ে জাতীয় শিবিরের কোচেরা নিশ্চিত। তবে কবে নাগাদ প্রতিযোগিতায় নামতে পারবেন তিনি, তা নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না কেউই। সেটা নির্ভর করছে দীপা কত দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠতে পারছেন তার উপর।

মুম্বইতে নামী শল্য চিকিৎসক অনন্ত যোশীর কাছে অস্ত্রোপচারের পর দীপা বা তাঁর কোচ বিশ্বেশ্বর নন্দীর ফোন বন্ধ। কাউকেই পাওয়া যায়নি। তবে দিল্লির জাতীয় শিবিরে ফোন করে জানা গেল, দীপার ডান হাঁটুর একটি পেশিতন্তু ছিঁড়েছে। সেটা জোড়া লাগাতেই স্পোর্টস অথরিটি অফ ইন্ডিয়ার ডাক্তাররা পাঠিয়েছেন মুম্বইতে। জাতীয় শিবিরের দুই কোচ জয়প্রকাশ চক্রবর্তী ও মিনারা বেগম বললেন, ‘‘দীপার চোট লাগার পর ওর হাঁটাচলায় কোনও সমস্যা ছিল না। তবে ভল্ট দেওয়ার সময় ব্যথা লাগছিল, জানিয়েছিল আমাদের। এর পর ওকে আমরা যে ফিজিক্যাল ট্রেনিংগুলো করতে হয় সেগুলো করিয়েছি। মনে হয় না কোনও সমস্যা হবে। আশা করছি মন্ট্রিওলে অক্টোবরে ওকে বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপে নামাতে পারব।’’ দীপার প্রথম কোচ সোমা নন্দীও আগরতলা থেকে ফোনে বললেন, ‘‘অনন্ত যোশী তো দীপাকে বলেছে শুনলাম, ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর এ রকম অস্ত্রোপচার হয়েছে দশ-বারো বার। কিন্তু কোনও সমস্যা হয়নি।’’ দীপার বর্তমান কোচ বিশ্বেশ্বরের স্ত্রী সোমা বলে দিলেন, ‘‘এ সব জিমন্যাস্টদের হয়ই। ঠিকঠাক ট্রেনিং করলে পুরনো ফর্মে ফিরে আসতে অসুবিধা হয় না। দিন কুড়ি আগে চোট লেগেছিল শিবিরে। অস্ত্রোপচার যাতে না করতে হয় সেই চেষ্টাও হয়েছিল। ওর ভবিষ্যতের কথা ভেবেই এটা করা হয়েছে। ডাক্তারবাবু বিদেশে না থাকলে আরও আগেই হয়ে যেত।’’

Advertisement

আরও পড়ুন: ধোঁয়াশা রাখলেন মহেশ

দীপা কবে ফের পদক জয়ের মঞ্চে ফিরতে পারবেন তা নিয়ে ধোঁয়াশা থাকলেও জিমন্যাস্টিক্সে এ রকম চোট অনেকেরই লেগেছে। অস্ত্রোপচারের পর ফিরে আরও ভাল পারফরম্যান্স দেখিয়েছেন, এ রকম ঘটনা প্রচুর আছে ভারতীয় জিমন্যাস্টিক্সে। বর্তমানে দিল্লির শিবিরে থাকা অরিক দে, পার্থ মণ্ডল বা পায়েল ভট্টাচার্যদের দেখাচ্ছেন জাতীয় কোচেরা। এঁদের প্রত্যেকেরই কোনও না কোনও সময়ে পেশিতন্তু ছিঁড়েছিল অথবা চোট লেগেছিল হাঁটু বা গোড়ালিতে। তবে ফিরে আসার সবথেকে বড় উদাহরণ মনে হয় টুম্পা দেবনাথ। দীপার চেয়েও বেশিবার জাতীয় চ্যাম্পিয়ন হওয়া জিমন্যাস্ট এবং আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় নামা নবদ্বীপের মেয়ে টুম্পার বাঁ হাঁটুতে অস্ত্রোপচার হয়েছিল ২০০৪ সালে। এক সময় জাতীয় শিবিরে দীপার সতীর্থ টুম্পা নদিয়ার বাড়ি থেকে বলছিলেন, ‘‘ছ’মাসের মধ্যে ফিরে এসে জাতীয় চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলাম। কমনওয়েলথ, বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে নেমেছি। আমাদের সময়ের চেয়ে এখন সাইতে সুযোগ সুবিধা অনেক বেড়েছে। ভাল ডাক্তারদের সাহায্য পাবে দীপা। কোনও সমস্যা হবে না। ওর যা জেদ, ফিরবেই।’’

জানা গিয়েছে, মুম্বই থেকে ফেরার পর এ দেশের খেলাধুলার অন্যতম সেরা মুখ দীপাকে ছেড়ে দেওয়া হবে ফিজিক্যাল ট্রেনারদের হাতে। যাতে তিনি দ্রুত সুস্থ হয়ে মন্ট্রিওলেই নামতে পারেন অক্টোবরে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন