চোটে ছিটকে গেলেন দীপা, ফিরছেন দেশে

শনিবার বাকু বিশ্বকাপে চোট পেয়ে আগামী এক মাসের জন্য ছিটকে যাওয়ার পর এই প্রশ্ন যখন ঘুরপাক খাচ্ছে, তখন আজেরবাইজান থেকে ফোনে কোচ বিশ্বেশ্বর নন্দী বলে দিলেন, ‘‘অক্টোবরে জার্মানিতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে প্রথম চারের মধ্যে থাকতে পারলেই টোকিয়ো যাওয়া যাবে। সেটা আমরা করবই। আমরা এখন পাখির চোখ করছি ওই প্রতিযোগিতাকেই।’’

Advertisement

রতন চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ১৭ মার্চ ২০১৯ ০৩:৪৪
Share:

বাকু বিশ্বকাপে চোট পেয়ে আগামী এক মাসের জন্য ছিটকে গেলেন দীপা কর্মকার। ফাইল চিত্র

দীপা কর্মকার কি শেষ পর্যন্ত ২০২০-র টোকিয়ো অলিম্পিক্সে নামার ছাড়পত্র জোগাড় করতে পারবেন?

Advertisement

শনিবার বাকু বিশ্বকাপে চোট পেয়ে আগামী এক মাসের জন্য ছিটকে যাওয়ার পর এই প্রশ্ন যখন ঘুরপাক খাচ্ছে, তখন আজেরবাইজান থেকে ফোনে কোচ বিশ্বেশ্বর নন্দী বলে দিলেন, ‘‘অক্টোবরে জার্মানিতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে প্রথম চারের মধ্যে থাকতে পারলেই টোকিয়ো যাওয়া যাবে। সেটা আমরা করবই। আমরা এখন পাখির চোখ করছি ওই প্রতিযোগিতাকেই।’’ আর তাঁর ছাত্রী দীপা কাঁদতে কাঁদতে বললেন, ‘‘সচিন তেন্ডুলকর যদি শূন্য করার পরে ২০০ রান করতে পারেন তা হলে আমি পারব না কেন? দ্রুত সুস্থ হয়ে ফিরতে হবে। অলিম্পিক্সে যেতে হবেই। আমি পারবই। এখনই হাল ছাড়ছি না।’’

কোচ এবং তাঁর ছাত্রীর ইচ্ছা শেষ পর্যন্ত পূরণ হবে কি না, তা সময়ই বলবে। কারণ ডান পায়ের যেখানে অস্ত্রোপচার হয়েছিল, সেখানেই ফের চোট পেয়েছেন বছর পঁচিশের দীপা। চোটের জেরে দীপা ফিরে আসছেন দেশে। বাকুর পর তাঁর দোহা বিশ্বকাপে নামার কথা ছিল। ২০-২৩ মার্চ সেখানে প্রতিযোগিতা হওয়ার কথা। দীপার কোচ বললেন, ‘‘দোহাতে আমরা যাচ্ছি না। মে মাসে এশীয় চ্যাম্পিয়নশিপে বা পরের কয়েকটা বিশ্বকাপেও দীপাকে নামাব না ভাবছি। কারণ আমাদের কাছে টোকিয়ো যাওয়ার সেরা সুযোগ বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ। দেখা যাক, ফিজিয়োরা কী বলেন। তবে আমি নিশ্চিত এক মাসের মধ্যে ওকে আবার স্বমহিমায় দেখা যাবে।’’

Advertisement

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

চোট লেগেছিল শুক্রবার ব্যালান্সিং বিম করতে গিয়েই। প্রায় সারা রাত হাঁটুতে বরফ বেঁধে বসে ছিলেন দীপা। সঙ্গে ডাক্তারের পরামর্শ মেনে ব্যথা কমানোর ওষুধ খাচ্ছিলেন। তাতেও শেষ রক্ষা হল না দেশের সেরা জিমন্যাস্টের। পদক তো দূরের কথা, ইভেন্টও শেষ করতে পারলেন না।

শনিবার দুপুরে আর্টিস্টিক জিমন্যাস্টিক্স বিশ্বকাপের ভল্টিং ইভেন্টের ফাইনাল ছিল তাঁর। প্রথম ভল্ট হিসাবে ‘হ্যান্ড স্প্রিং ফরোয়ার্ড সমারসল্ট ৫৪০ ডিগ্রি’ দেওয়ার পরেই হাঁটুর ব্যথা বেড়ে যায় তাঁর। কোচের সঙ্গে আলোচনার পরে পরীক্ষককে জানিয়ে দেন, দ্বিতীয় ভল্টে আর নামবেন না। এর পরই কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। হতাশায় বসে পড়েন মাটিতে। পরে ফোনে বলছিলেন, ‘‘অনেক আশা নিয়ে এসেছিলাম। যোগ্যতা নির্ণায়ক পর্বে যে পয়েন্ট পেয়েছিলাম সেটা অর্জন করতে পারলেই পদক পেতাম। কিন্তু পারলাম না।’’ কান্নায় ভেঙে পড়া ছাত্রীকে কোনওক্রমে সান্ত্বনা দিয়ে হোটেলে নিয়ে যান কোচ। বিশ্বেশ্বর বলছিলেন, ‘‘দারুণ তৈরি হয়ে এসেছিল। পদক পাবে নিশ্চিত ছিল। সে জন্যই প্রচণ্ড কাঁদছিল। আমি ওকে বললাম, তোর তো অলিম্পিক্স যাওয়ার রাস্তা শেষ হয়ে গেল না। সুযোগ তো আছে। তাতেও কান্না থামানো যাচ্ছিল না।’’

দীপার মতো এ দিন প্রতিযোগিতা চলার সময় চোটের জন্য ইভেন্ট শেষ করেও পদক পেলেন না ফ্রান্সের ডেভিলার্ডো কোলানি এবং রাশিয়ার পাসেকা মারিয়া। দীপার কোচ বলছিলেন, ‘‘জিমন্যাস্টিক্স এ রকমই। মুহূর্তের ভুলে নিশ্চিত পদক হাতছাড়া হয়ে যায়। দীপাকে সেটাই বোঝাচ্ছি। আমার নিজেরই খুব হতাশ লাগছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন