আশা: প্রিয় ভল্টকে অস্ত্র করেই সফল হতে চান দীপা। ফাইল চিত্র
নতুন বছরেই প্রোদুনোভায় ফিরছেন দীপা কর্মকার। সোমবার আগরতলা থেকে অনুশীলনের ফাঁকে দেশের অন্যতম সেরা জিমন্যাস্ট বলে দিলেন, ‘‘প্রোদুনোভা ভল্ট দেওয়ার জন্য যে পায়ের জোর দরকার, সেটা আমি রিহ্যাব করে ফিরে পেয়েছি। কোচের পরামর্শে জানুয়ারি থেকেই আবার শুরু করছি আমার প্রিয় ভল্ট।’’
সামনেই আজেরবাইজান ও দোহায় আর্টিস্টিক জিমন্যাস্টিক্সের বিশ্বকাপ আছে। সেখানে নামবেন দীপা। দিল্লিতে প্রচণ্ড ঠান্ডা। তাই অনুশীলন করতে সেখানে যাচ্ছেন না তিনি। নতুন বছরের প্রথম দিনেই যাচ্ছেন মুম্বইয়ের একটি অত্যাধুনিক জিমন্যাসিয়ামে। সেখানে গিয়েই শুরু করবেন বিপজ্জনক ভল্ট—প্রোদুনোভা। দীপার কোচ বিশ্বেশ্বর নন্দী বলছিলেন, ‘‘দীপা প্রোদুনোভাতে সাবলীল। ওই ভল্টে পয়েন্টও অনেক। অস্ত্রোপচারের পর ডান পায়ে সে রকম জোর না আসায় ওটা অনুশীলন করা যাচ্ছিল না। এখন এটা করা দরকার। ও নিজের শারীরিক সক্ষমতা ফেরানোর জন্য অনুশীলন শুরু করে দিয়েছে। এখন সম্পূর্ণ সুস্থ। সাই এবং কেন্দ্রীয় সরকার সব রকম সাহায্য করছে ওকে।’’
বিশ্বের হাতেগোনা যে ক’জন জিমন্যাস্ট প্রতিযোগিতায় নেমে প্রোদুনোভা ভল্ট দেন, তাঁদের মধ্যে দীপা একজন। রিয়ো অলিম্পিক্সে ইতিহাস সৃষ্টি করে চতুর্থ হওয়ার পর দীপার নামই হয়ে গিয়েছিল ‘দীপানোভা’। কিন্তু চোট ও অস্ত্রোপচারের পর দু’বছরেরও বেশি তা করতে পারেননি দেশের সর্বকালের সেরা জিমন্যাস্ট। শরীরে জোরও ছিল না। জাতীয় মহিলা দলে বেশির ভাগ জিমন্যাস্টই এখন বাংলার। তা সত্ত্বেও সাই ছাড়া বাংলার কোথাও আন্তর্জাতিক মানের কোনও অনুশীলনের জায়গা নেই প্রণতি দাশ, প্রণতি নায়েকদের। কিন্তু দীপার অনুশীলনের জন্য ত্রিপুরা সরকার একটি অত্যাধুনিক জিমন্যাসিয়াম তৈরি করে দিয়েছে। সেখানেই এখন অনুশীলন করছেন দীপা। বলছিলেন ‘‘দু’বেলা অনুশীলন করছি। অলিম্পিক্সে যোগ্যতামান পাওয়ার জন্য এখন যে নতুন নিয়ম চালু হয়েছে, সেটা বেশ কঠিন। জার্মানি বিশ্বকাপে ব্রোঞ্জ পেয়েছিলাম। পরের দু’টো বিশ্বকাপে সোনা বা রুপো পেলে টোকিয়ো অলিম্পিক্সে নামার যোগ্যতা অর্জন করব। আপাতত সেটাই আমার লক্ষ্য।’’ বিশ্বকাপে লক্ষ্যে পৌঁছতে না পারলেও টোকিয়ো যাওয়া যাতে আটকে না যায়, সেটাও অঙ্ক করে ফেলেছেন দীপার কোচ। বিশ্বেশ্বর বলছিলেন, ‘‘২০১৯-এ বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ আছে। সেখানে পদক জিততে পারলেই টোকিয়ো যাওয়ার ছাড়পত্র পাওয়া যাবে। সেটাও মাথায় রাখছি।’’ জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে প্রোদুনোভা শুরু করলেও কিন্তু আজেরবাইজান না দোহা—কোথায় তা প্রয়োগ করবেন, তা ঠিক করেননি দীপার কোচ। বললেন, ‘‘আরও দুটো ভল্ট তৈরি রাখছি। প্রোদুনোভা সঠিক হলেই প্রয়োগ করব। দীপাও সেটাই চাইছে।’’ অন্য যে দুটি ভল্ট অনুশীলন করতে চাইছেন তা হল হ্যান্ডস্প্রিং ফরোয়ার্ড ৫৪০ এবং সুকাহারা ৯০০। আগে করতেন হ্যান্ডস্প্রিং ৩৬০ এবং সুকাহারা ৭২০। দুটোই বাড়াচ্ছেন। দীপার কোচ বলছিলেন, ‘‘সারা বিশ্বের অন্য জিমন্যাস্টরাও এগোচ্ছে। তাদের সঙ্গে পাল্লা দিতে গেলে পুরানো অস্ত্রের ধার বাড়াতে হবে। সেটাই করছি।’’