আদালত ও সরকারের জোড়া বাউন্সারে সংস্কারে নতুন ধাক্কার আশঙ্কা

আদালতের বাউন্সার ও কেন্দ্রীয় সরকারের দিক থেকে ধেয়ে আসা পাল্টা বাউন্সারে ক্রিকেট প্রশাসনের আমূল সংস্কারের আকাশ আবার মেঘাচ্ছন্ন। যদিও তার ভেতরেই বাতিলের খাতায় চলে যাওয়া কতিপয় ক্রিকেট কর্তা নিজেদের জন্য আশার আলো দেখতে পাচ্ছেন!

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২১ জানুয়ারি ২০১৭ ০৩:২৫
Share:

আদালতের বাউন্সার ও কেন্দ্রীয় সরকারের দিক থেকে ধেয়ে আসা পাল্টা বাউন্সারে ক্রিকেট প্রশাসনের আমূল সংস্কারের আকাশ আবার মেঘাচ্ছন্ন। যদিও তার ভেতরেই বাতিলের খাতায় চলে যাওয়া কতিপয় ক্রিকেট কর্তা নিজেদের জন্য আশার আলো দেখতে পাচ্ছেন!

Advertisement

ক্রিকেট প্রশাসনে শীর্ষ কর্তাদের মোট মেয়াদের ব্যাখ্যায় ফের পরিবর্তন এবং লোঢা কমিটির সুপারিশের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় সরকারের যুদ্ধক্ষেত্রে নেমে পড়া— শুক্রবারের এই জোড়া ঘটনায় যেমন বহু বাতিল ক্রিকেট প্রশাসক ‘জীবন’ ফিরে পেতে চলেছেন। তেমনই ফের দেশের ক্রিকেট প্রশাসনের সংস্কারে ধাক্কার আশঙ্কা দেখা যাচ্ছে।

সুপ্রিম কোর্ট শীর্ষ পদে ক্রিকেট কর্তাদের মেয়াদ বাড়িয়ে রাজ্য সংস্থায় ন’বছর ছাড়াও বোর্ডেও আলাদা করে ন’বছর করল। যার জেরে বোর্ডে মেয়াদ বাড়ল সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের। কিন্তু এ দিন দেশের অ্যাটর্নি জেনারেল মুকুল রোহাতগি দেশের সর্বোচ্চ আদালতে দাঁড়িয়ে লোঢা কমিটির সুপারিশের বিরুদ্ধে যে ভাবে সুর চড়ালেন, তাতে এমন ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে যে, ক্রিকেট প্রশাসনে আমূল সংস্কারের যে প্রবল সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে, তা হয়তো ফের ধাক্কা খেতে পারে।

Advertisement

সারা দেশজুড়ে যে ক্রিকেট কর্তারা তাঁদের কেরিয়ার শেষ বলে ধরে নিয়েছিলেন, এই সংশোধনের ফলে আবার তাঁরা আশায় বুক বাঁধা শুরু করলেন। মুম্বইয়ে দিলীপ বেঙ্গসরকর থেকে শুরু করে সিএবি-র বিশ্বরূপ দে— এঁরা সবাই এখন ক্রিকেট প্রশাসনে প্রত্যাবর্তনের ভাবনা শুরু করে দিয়েছেন।

বেঙ্গসরকর যেমন বলেন, ‘‘তিন বছর পর যে বোর্ডে ফিরে আসার রাস্তা খোলা রইল, এটাই বড় ব্যাপার।’’ বিশ্বরূপ বলছেন, ‘‘মনে হচ্ছে ফাঁসির হুকুম হয়ে যাওয়া সত্ত্বেও তা রদ হল। এখন আর কেউ বলতে পারবে না যে, ক্রিকেট প্রশাসনে আমার ভবিষ্যৎ শেষ।’’

শুক্রবারের এই নতুন ব্যাখ্যার পর যা অবস্থা দাঁড়াল, তাতে বোর্ডের যুগ্ম সচিব অমিতাভ চৌধুরী ও কোষাধ্যক্ষ অনিরুদ্ধ চৌধুরী চেয়ারে থাকতে পারেন। ডিডিসিএ-র সিকে খন্না সবচেয়ে সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট হওয়ায় কার্যকরী প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নিতে পারবেন।

কিন্তু অ্যাডমিনিস্ট্রেটরদের যে প্যানেল তৈরি করে সংস্কারের উদ্যোগ শুরুর পরিকল্পনা ছিল আদালতের, কেন্দ্রীয় সরকার এই যুদ্ধে নেমে পড়ায় তা ধাক্কা খেতে পারে বলে ওয়াকিবহাল মহলের ধারণা। এ দিন রেলওয়েজ, সার্ভিসেস ও ইউনিভার্সিটি-র হয়ে কোর্টে দাঁড়িয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল সওয়াল করেন, ‘‘আদালত সিদ্ধান্ত জানানোর সময় আমাদের বক্তব্য শোনা হয়নি।’’ এই তিন প্রাতিষ্ঠানিক সদস্যের ভোটাধিকার চিরতরে কেড়ে নেওয়ার বিরুদ্ধে সওয়াল করেন তিনি। ২৪ জানুয়ারি পরবর্তী শুনানিতে তাঁর বক্তব্য বিস্তারিত ভাবে শোনা হবে বলে জানানো হয়েছে। ওই দিনই অ্যাডমিনিস্ট্রেটরদের প্যানেল ঘোষণা হওয়ার কথা।

এ দিন যে ন’জনের নাম বন্ধ খামে দেওয়া হয় বিচারকদের, তাঁদের মধ্যে থেকেই অ্যাডমিনিস্ট্রেটর বাছা হতে পারে। কিন্তু লোঢা প্যানেলের কিছু সুপারিশ নিয়ে যদি ফের বিতর্ক শুরু হয়, এক রাজ্য এক ভোটের সুপারিশ নিয়ে যদি ফের জট পাকে, তা হলে লোঢা সুপারিশ মেনে বোর্ড ও রাজ্য সংস্থাগুলোর গঠনতন্ত্রে পরিবর্তন করা হবেই বা কী করে, এই প্রশ্নও উঠছে।

যার ফলে ২৪ তারিখেও এই মামলার ফয়সালা নাও হতে পারে বলে মনে করছেন বোর্ডের অনেকে। কেন্দ্রীয় সরকারের এই হঠাৎ করে মাঠে নেমে পড়াটা তাঁদের কাছে বেশ তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে উঠেছে এখন। যার ফলে নাকি জল আরও অনেক দূর গড়াতে পারে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন