বার্বেডোজ কিংবদন্তি সোবার্স, ওরেল, হল-এর ঐতিহাসিক কেনসিংটন ওভাল-ই কি ক্যারিবিয়ান ক্রিকেটের নতুন সূর্যোদয়ের ইঙ্গিত দিল? টেস্ট ক্রিকেটে অনেক দিন পর ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ব্যাটে-বলে ওয়েস্ট ইন্ডিজের মতো দাপুটে দেখাল। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ০-১ পিছিয়ে পড়া টেস্ট সিরিজ দুর্দান্ত ভাবে তারা ১-১ শুধু ড্র-ই রাখল তাই নয়, তিন দিনে অ্যালিস্টার কুকদের পাঁচ উইকেটে হারাল। তা-ও এই তৃতীয় টেস্টের প্রথম ইনিংসে ৬৮ রানে পিছিয়ে পড়ার পর। যা ২০০৯-এ সাবাইনা পার্কের ছয় বছর পর ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ক্যারিবিয়ানদের প্রথম টেস্ট জয় হয়ে থাকছে। এবং জয়ের পিছনে অবদান প্রায় পুরোটাই ক্যারিবিয়ান তারুণ্যের। আর সেটাই ক্যারিবিয়ান ক্রিকেটপ্রেমীদের চোখে তাৎপর্যের।
দ্বিতীয় ইনিংসে কুকু-ট্রট-বেল-ব্যালান্স-রুটদের ১২৩ রানে মুড়িয়ে দেওয়ার পিছনে জেরম টেলর, জেসন হোল্ডারদের পেসের জোর। দু’জনেই তিনটি করে উইকেট পান। হোল্ডার তো ৯ ওভারে মাত্র ১৫ রানের বিনিময়ে। তিন উইকেট নেওয়া বাঁ-হাতি স্পিনার বীরাস্বামী পেরমল-ও পঁচিশের তরুণ। এর পরে জেতার জন্য চতুর্থ ইনিংসে ১৯২ রান তুলতে নেমে একটা সময় ওয়েস্ট ইন্ডিজ বহু বছর টেস্ট ক্রিকেটে তাদের ব্যাটিংকে টেনে চলা চন্দ্রপলকে শূন্যতে হারিয়ে প্রবল বিপজ্জনক ৮০-৪ হয়ে গিয়েছিল। অ্যান্ডারসন, ব্রড, মইন আলির মতো পোড়খাওয়া ইংরেজ পেসার-স্পিনাররা তখন আরও শিকারের সন্ধানে তাঁদের চোট চাটছেন। সেই সময় ছাব্বিশের বাঁ-হাতি ব্যাটসম্যান ডারেন ব্র্যাভো (৮২) আর তেইশের জারমাইন ব্ল্যাকউডের (৪৭ নটআউট) পঞ্চম উইকেটে সেঞ্চুরি পার্টনারশিপ ওই দিনই ওয়েস্ট ইন্ডিজকে চমৎকার জয় এনে দেয়।
ব্র্যাভো জয়ের থেকে মাত্র চার রান দূরে আউট হলে অধিনায়ক-কিপার রামদিন (০ ন.আ.) ক্রিজে এসে কেবল নন স্ট্রাইকার প্রান্ত থেকে এই সিরিজের সেরা ক্যারিবিয়ান ব্যাটসম্যান ব্ল্যাকউডের উইনিং স্ট্রোক দেখে হাততালি দেন। ব্ল্যাকউড এই ম্যাচ জেতানো ইনিংস খেলা ছাড়াও এই টেস্টেই প্রথম ইনিংসে ৮৫ আর প্রথম টেস্টে অপরাজিত সেঞ্চুরি (১১২) করেছিলেন। যিনি বলেছেন, ‘‘এই সিরিজে আগাগোড়া আমাদের নিজেদের উপর বিশ্বাস ছিল। ডারেন আমাদের পার্টনারশিপের সময়ও কথাটা মনে পড়িয়ে দিচ্ছিল আমাকে বারবার কানের কাছে বলে।’’