উৎসব: গোল করে ডুডুর সঙ্গে আমনা। শনিবার। —নিজস্ব চিত্র
লিগ খেতাব কি ইস্টবেঙ্গল পাবে? ম্যাচের পর আল আমনা থেকে ইউসা কাতসুমি, সবাই আকাশের দিকে আঙুল তুলে দেখাচ্ছেন ঈশ্বরকে! টিমে মনে হয় একমাত্র ব্যতিক্রমী তিনি—ডুডু ওমাগবেমি। বলে দিলেন ‘‘মিনার্ভা পয়েন্ট নষ্ট করবেই। আর আমরা বাকি দুটো ম্যাচ জিতে চ্যাম্পিয়ন হয়ে যাব।’’ আশার সঙ্গে পেটানো চেহারা থেকে বেরিয়ে আসে ঝকঝকে হাসিও।
তাঁর বয়স নিয়ে ফুটবল মহলে নানা ঠাট্টা জারি আছে। ডুডু নিজে বলেন ৩২। সতেরো বছর আগে স্পোর্টিং ক্লুব দ্য গোয়ায় খেলতে এসেছিলেন ডুডু। অনেকেই মনে করেন, তখনকার হিসাব ধরলে বয়স হওয়া উচিত ৩৭ বা ৩৮। তাতে অবশ্য কিছু যায় আসে না শনিবারের নায়কের। ডুডু বলে দেন, ‘‘আগে ১৫ নম্বর জার্সি পরে খেলেছি ইস্টবেঙ্গলে। এ বার ৪৪ নম্বর জার্সি দেওয়া হয়েছে। সবাই বলছিল ওটা আমার বয়স। ভেবেছিলাম জার্সিটা অপয়া। আজ চার গোল করার পর মনে হচ্ছে নম্বরটা ঠিক আছে।’’
ছয় ম্যাচে পাঁচ গোল? কোন রসায়নে এই সাফল্য? কোচের পাশে বসে ইউরোপের ক্লাবে খেলে আসা ডুডুর মন্তব্য, ‘‘কোচ ও সতীর্থরা আমার উপর আস্থা রেখেছে। এ দিনও মাঠে নামার আগে সবাই বলেছিল, ‘আমি গোল পাব’। পরিশ্রমও করেছি। অনুশীলনের মধ্যে ডুবে থেকেছি। সাফল্যের এটাই কারণ।’’ হাঁটু পর্যন্ত কালো মোজা। ঢলঢলে হাফপ্যান্ট পরে হাঁটছেন যুবভারতীর আলপনা দেওয়া রাস্তায়। এত বড় সাফল্যের পরও হেলদোল নেই।
দু’দিন আগে তাঁকে বলা হচ্ছিল ‘অচল আধুলি’। কেউ বলছিলেন ‘বুড়ো ঘোড়া।’ এ দিন কী সেই সমালোচনার জবাব দিলেন? ডুডুর জবাব, ‘‘গোল পাচ্ছিলাম না বলে কোনও চাপ ছিল না। ইউরোপে খেলেছি। প্রচুর গোল করেছি। জানতাম সফল হবই।’’ তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, রজার ফেডেরার, না লিয়েন্ডার পেজ—কে আপনার অনুপ্রেরণা? নাইজিরিয়ান স্ট্রাইকারের স্পষ্ট জবাব, ‘‘কেউ নন। হলিউড সিনেমাই আমার অনুপ্রেরণা।’’
ডুডু আশাবাদী হলেও কাতসুমি বা আমনা সেই রাস্তায় এখনই হাঁটতে নারাজ। কাতসুমি বললেন, ‘‘আমরা কিন্তু জিতেও একটুও এগোইনি। লিগ টেবলে দু’নম্বরে উঠেছি মাত্র। খেতাব পেতে হলে ঈশ্বরের দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে।’’ আল আমনাদের পরের ম্যাচ নয় দিন পর। সিরিয়ান মিডিও বললেন, ‘‘এতে কোনও সমস্যা হবে না। পরের দুটো ম্যাচ আমাদের কাছে দুটো ফাইনাল।’’
সোমবার মিনার্ভা পঞ্জাবের সঙ্গে ম্যাচ আইজলের। সেই ম্যাচের ফলের দিকে আপাতত তাকিয়ে থাকবে খালিদ জামিলের ইস্টবেঙ্গল। খালিদ অবশ্য বললেন, ‘‘কে কী করল তা নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছি না। নিজেদের নিয়ে ভাবছি।’’